মাগুরার শিশু মায়াজ বিন আলমগীর দেশের কনিষ্ঠতম তারাবিহ নামাজের ইমাম বলে দাবি করেছে তার পরিবার। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তারাবিহ নামাজে ইমামতি করছে এই শিশু।
তার পরিবার জানায়, সে এবছর রমজানে মাগুরা নতুন বাজার বায়তুল আমান মসজিদে তারাবিহ পড়াচ্ছে। দুই বছর আগে মায়াজ ঢাকা মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা থেকে কোরআনে হাফেজ হলেও বয়সের বাধ্যবাধকতার কারণে সে কোথাও ইমামতির দায়িত্ব পায়নি। এবছর সে প্রথমবারের মতো ইমামতির সুযোগ পেয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মায়াজের বাবা আলমগীর হোসাইন বলেন, সাধারণত ১৪ বছরের নিচে কোনো ইমাম নিয়োগ দেওয়া হয় না। যেহেতু ওর বয়স সদ্য ১৪ পূর্ণ হয়েছে, তাই ওর চেয়ে কম বয়সী ইমাম আর থাকার কথা নয়। আমরা মাগুরায় খোঁজ নিয়েছি, ওর চেয়ে কম বয়সী কোন ইমাম তারাবিহ পড়াচ্ছে এমনটি নেই। বয়সের বাধ্যবাধকতার কারণে সমগ্র বাংলাদেশে মায়াজের চেয়ে কম বয়সের ইমাম থাকার কথা নয়।
মসজিদের নিয়মিত মুসল্লী বিল্লাল হোসেন বলেন, মায়াজের বয়স কত, এটা নিয়ে আমরা ভাবি না। ও তার যোগ্যতা দিয়ে প্রমাণ করেছে, বয়স এখানে বাধা নয়। ও যখন ইমাম হিসেবে দাঁড়ায়, ওর পিছনে দাঁড়িয়ে আমরা নির্দ্বিধায় নামাজ পড়ি।
ইমাম নিয়োগ বোর্ডের সদস্য মুফতি মেরাজুল ইসলাম বলেন, মায়াজ বয়স নয়, যোগ্যতা দিয়ে নিয়োগ পেয়েছে। প্রথমে ওর বয়সের কারণে বোর্ডের অনেকে সংশয় প্রকাশ করেছিল, কিন্তু ও তার যোগ্যতা দিয়েই নিয়োগ পেয়েছে। যেহেতু ১৪ বছরের নিচে কাউকে আমরা ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেই না, তাই মায়াজের চেয়ে কম বয়সী কোন ইমাম থাকার কথা নয়।
মসজিদের মুয়াজ্জিন ক্বারি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, মায়াজের তিলাওয়াত খুবই সুন্দর। কখনো মনে হয় না, ওর বয়স এত কম।
বিজ্ঞাপন
মায়াজের বাবা মাগুরা শিবরামপুর স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক। তিনি বলেন, মায়াজ বর্তমানে ঢাকায় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছে। আমার ইচ্ছা, ওকে উচ্চতর শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে পাঠাব। ওকে একজন মানবিক মুসলিম হিসেবে তৈরি করতে চাই।
শিশু মায়াজ জানায়, ‘আমি খুব মন দিয়ে কাজটা করার চেষ্টা করি। আমার খুব ভালো লাগে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’
মসজিদের সভাপতি ডাক্তার মুক্তাদির রহমান বলেন, মায়াজ বাংলাদেশের ভেতর ব্যতিক্রমী এক শিশু। আমাদের মসজিদে মায়াজের মতো একজন ইমাম পেয়ে আমরা খুব খুশি। ও তার যোগ্যতা দিয়ে প্রমাণ করেছে, বয়স কোনো বিষয় নয়। নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য যোগ্যতাই প্রধান নিয়ামক।
প্রতিনিধি/একেবি