বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

কোরআন তেলাওয়াতকে যেভাবে সঙ্গী বানাবেন

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:২২ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

মহাগ্রন্থ আল কোরআন সর্বকালের সম্মানিত গ্রন্থ। রাসুলুল্লাহ (স.) এই কোরআন দিয়ে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ তৈরি করেছিলেন। কোরআনকে ধারণ করা ছাড়া হেদায়াতলাভের আশা করা যায় না। মহান আল্লাহ আমাদেরকে বড় মেহেরবানি করে কোরআন দিয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগা জাতী কোরআনের মর্ম উপলব্ধি করল না; কোরআনের শিক্ষা থেকে অধিকাংশ মানুষ নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। প্রকৃত মুমিন কখনও দুর্ভাগাদের কাতারবদ্ধ হয় না। তারা বরাবরই মহান আল্লাহর পবিত্র কালামের হেফাজত করে, আঁকড়ে থাকে। শুদ্ধভাবে নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াতের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো এখানে তুলে ধরা হলো।

ভালো শিক্ষকের কাছে শেখা
যিনি সহিহভাবে কোরআন পড়তে পারেন তার কাছে কোরআন শিখতে হবে। বিশেষ করে যে শিক্ষকের কোরআন শিক্ষার বিষয়ে প্রশিক্ষণ আছে তার কাছে পড়লে ভালো হয়। আল্লাহর বাণী—‘তোমরা জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা করো, যদি তোমরা না জেনে থাকো।’ (সুরা নাহল: ৪৩)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত

নিয়মিত তেলাওয়াত
শুদ্ধভাবে কোরআন শিক্ষার জন্য নিয়মিত সময় দেওয়া দরকার। যদিও কম সময় হয়। প্রতিদিন চর্চার মধ্যে থাকলে সহিহভাবে কোরআন শিক্ষা সহজ হবে এবং যা চর্চা হবে তা আয়ত্তে থাকবে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘এটা খুবই খারাপ কথা যে তোমাদের মধ্যে কেউ বলবে, আমি (নিয়মিত কোরআন না পড়ার কারণে) কোরআনের অমুক অমুক আয়াত ভুলে গেছি; বরং (নিয়মিত কোরআন না পড়ার কারণে) তাকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা কোরআন তেলাওয়াত করতে থাকো (নিয়মিতভাবে), কেননা তা মানুষের অন্তর থেকে বাঁধন ছাড়া উটের চেয়েও দ্রুতগতিতে চলে যায়।’ (বুখারি: ৫০৩১-৫০৩৩; মুসলিম: ৭৯০)

আলেমদের পরামর্শ হলো—প্রতিদিন হাফেজ নন এমন ব্যক্তির এক পারা কোরআন তেলাওয়াত করা উচিত। যেন মাসে এক খতম পূর্ণ হয়ে যায়। আর হাফেজদের তিন পারা তেলাওয়াত করা উচিত।

মশক করা
কোনো যোগ্য শিক্ষকের কাছে মশক করলে পড়ার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। মশক হলো- শিক্ষক পড়বে তারপর সেভাবে ছাত্রও পড়বে। এ ছাড়া অনলাইনের মাধ্যমেও মশক করা যায়।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: নিয়মিত আয়াতুল কুরসি পড়ার পুরস্কার

পরিবার-পরিজনকে শেখানো
প্রত্যেক মুসলিমকে তার পরিবার-পরিজন ও সন্তানদের কোরআন শিক্ষা দেওয়া অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে ইমানদাররা! তোমরা তোমাদের নিজেদের এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও।’ (সুরা তাহরিম: ০৬) আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, ‘কোরআনের বিষয়ে তোমাদের ওপর অবশ্য পালনীয় এই যে নিজে কোরআন শিক্ষা করা এবং তোমাদের সন্তানদের কোরআন শিক্ষা দেওয়া। কেননা এ বিষয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে এবং তার প্রতিদানও দেওয়া হবে।’ (ইবন বাত্তাল: ৪৬)

ফজিলতপূর্ণ সুরাগুলো বেশি পড়া
ফজিলতপূর্ণ সুরাগুলো ভালোভাবে শিক্ষা করা এবং সেগুলো বেশি বেশি তিলাওয়াত করা। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের কেউ কি এক রাতে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করা সাধ্যাতীত মনে করো?’ এ প্রশ্ন তাদের জন্য কঠিন ছিল। এরপর তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল (স.)! আমাদের মধ্যে কার সাধ্য আছে যে এটা পারবে? তখন তিনি বলেন, ‘কুল হুআল্লাহু আহাদ’ অর্থাৎ সুরা ইখলাস কোরআনের তিন ভাগের এক ভাগ।’ (বুখারি: ৫০১৫)

উল্লেখিত উপায়ে কোরআন তেলাওয়াতকে সঙ্গী বানাতে হবে। হাদিসে এসেছে, ‘কোরআন এমন সুপারিশকারী যার সুপারিশ কবুল করা হবে। যে ব্যক্তি কোরআনকে পথপ্রদর্শক বানাবে কোরআন তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। যে ব্যক্তি কোরআনকে পশ্চাতে ফেলে রাখবে কোরআন তাকে জাহান্নামে পাঠাবে।’ (ইবনে হিব্বান: ১২৪)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে পবিত্র কোরআন শিক্ষার ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে; কোরআনের বিধানকে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন


News Hub