শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

ঢাকা-৩: নৌকার একচ্ছত্র আধিপত্যের মধ্যেও ‘আশা জাগাচ্ছে’ বিএনপি

কাজী রফিক
প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৭:৩৬ এএম

শেয়ার করুন:

ঢাকা-৩: নৌকার একচ্ছত্র আধিপত্যের মধ্যেও ‘আশা জাগাচ্ছে’ বিএনপি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছরেরও কম সময় বাকি। ২০২৪ সালের প্রথম সপ্তাহে ভোট হওয়ার কথা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে চলতি বছরের নভেম্বরে। তবে এরইমধ্যে ভোটের হাওয়া বইতে শুরু করেছে দেশজুড়ে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে চায়। দলটি ইতিমধ্যে তাদের নির্বাচনী প্রচারণাও শুরু করেছে। অপরদিকে সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনে মাঠে আছে বিএনপি। আর পারিবারিক কলহের মধ্য দিয়ে গেলেও ভোটের বিষয়ে চোখ-কান খোলা জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের।

দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২০টি ঢাকায়। এরমধ্যে ঢাকা-৩ আসনটি ঢাকা জেলার কেরানিগঞ্জ উপজেলার জিনজিরা, আগানগর, তেঘরিয়া কোন্ডা ও শুভাঢ্যা নিয়ে গঠিত। বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ের এ আসনটিতে নৌকার আধিপত্যই যেন বেশি।


বিজ্ঞাপন


আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য নসরুল হামিদ বিপু। তিনি সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৮ সালে তিনি এই আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। টানা তিনবার আসনটির সংসদ সদস্য পদে আসীন নসরুল হামিদ বিপু।

এই দীর্ঘ সময়ে আসনটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে শুরু করে সামগ্রিক উন্নয়নে অবদান রেখেছেন এই সংসদ সদস্য। শুভাঢ্যা, আগানগর আর জিনজিয়ায় পাকা সড়ক নির্মাণ, কালভার্ট নির্মাণ, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছেন। একই সময়ে স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও উন্নয়নের ছোয়া পেয়েছে তার হাত ধরে।

স্থানীয় বাসিন্দা সারোয়ার হোসাইন ঢাকা মেইলকে বলেন, ১৫ বছর ধরে একজন এমপি। উন্নয়ন তো স্বাভাবিক। অনেক কাজ হয়েছে।

শুভাঢ্যার বাসিন্দা আব্দুল আল মামুন ঢাকা মেইলকে বলেন, রাস্তার উন্নয়নটা ব্যাপকভাবে হয়েছে। এটা আমাদের দরকার ছিল।


বিজ্ঞাপন


তবে আপত্তির জায়গাও আছে। দীর্ঘ সময়ে সমাধান হয়নি জিনজিরা এলাকার ধূলার সমস্যার।

এদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে এখন আলোচনার প্রধান বিষয় আগামী জাতীয় নির্বাচন। চায়ের দোকান, গণপরিবহনে আলোচনার অন্যতম বিষয়ও ভোট।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা নসরুল হামিদ বিপুর বিকল্প দেখছেন না। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অন্যদিকে বিএনপির কর্মীরা নিস্ক্রিয় হলেও নির্বাচন ঘিরে আশাবাদী জাতীয়তাবাদী দলের অনুসারীরা।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ২০০৮ সাল থেকে জিনজিয়া এলাকার আশানুরূপ উন্নয়ন হয়েছে।

স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাকুর হোসেন সাকু ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, আমাদের এমপি মহোদয়ের কাছ থেকে আমরা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি। অনেক উন্নয়ন হয়েছে। রাস্তাঘাট, সুয়ারেজ লাইনসহ ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে গত ১৫ বছরে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে কাকে সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চান? এমন প্রশ্নের জবাবে এই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের বর্তমান এমপি দলের একনিষ্ঠ কর্মী এবং প্রতিমন্ত্রী। ভবিষ্যতে তিনি এমপি হবেন। আমরা তার সঙ্গেই আছি।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের সব পর্যায়েই এককভাবে জনপ্রিয়তায় শীর্ষে অবস্থান করছেন নসরুল হামিদ বিপু।

অপরদিকে আসনটিতে বিএনপির অবস্থান খুব একটা জোরালো নয়। তবে রয়েছে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। ঢাকা-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধরা হয় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে। তিনি বিএনপির অন্যতম প্রভাবশালী নেতা।

গয়েশ্বর রাজনৈতিকভাবে শক্তিধর হলেও নির্বাচনী আসনটিতে বিএনপির সক্রিয়তা অনেকটাই কম। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, বিএনপির নেতারা অনেকটাই নির্জীব। কর্মসূচি না থাকলে তাদের দেখা মেলা কঠিন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের ভাষ্যও একই। তাদের মতে, তারা বিএনপিকে নিজেদের প্রতিপক্ষ ভাবছেন না। বিএনপি শুধু নামেই আছে বলে দাবি তাদের।

তবে বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি যদি ভোটের মাঠে থাকে, তাহলে হেভিওয়েট হিসেবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় হতে পারেন ধানের শীষের প্রার্থী। আর গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রার্থী হলে জয়-পরাজয়ের গণেশ উল্টে যেতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা।

কারই/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর