‘টেঁটা ইনজুরিতে’ আহত রোগীর জটিল অস্ত্রোপচার সফলতাভাবে সম্পন্ন করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
আজ বুধবার (১৯ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
অধিদফতর জানিয়েছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ট্রমা ম্যানেজমেন্ট। গত ১২ মার্চ (বুধবার) একজন রোগী নারায়ণগঞ্জ থেকে ‘টেঁটা ইনজুরি’ নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ভায়োলেট ইউনিটে আসে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, টেঁটা সাধারণত দূর থেকে অথবা পানির উপর থেকে মাছ ধরার জন্য ব্যবহৃত একটি ধারালো অস্ত্র। ২৬ বছর বয়সী পুরুষ রোগীটির ডান চোখের নিচ দিয়ে টেটাটি প্রবেশ করে মুখমণ্ডলের হাড় এবং বায়ু কুঠুরি ভেদ করে মস্তিষ্কের মাস্টারগ্লান্ড পিটুইটারির ঠিক নিচে অবস্থান করছিল। সিটি স্ক্যান পরীক্ষার মাধ্যমে মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালনের প্রধান রক্তনালী ইন্টারনাল ক্যারোটিড আর্টারি থেকে কয়েক মিলিমিটার দূরে এর অবস্থান চিকিৎসকগণ শনাক্ত করেন। এই রক্তনালির ইনজুরিতে রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেকটা শূন্যের কোঠায় পৌঁছায়।
আরও জানানো হয়, এমন জটিল একটা পরিস্থিতিতে রোগীর সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগ, এনেসথেসিয়া বিভাগ এবং চক্ষু বিভাগ রোগীটির অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়।
অধিদফতর জানায়, নিউরোসার্জারির সহযোগী অধ্যাপক ও নিউরোসার্জারি ভায়োলেট ইউনিট প্রধান ডা. কানিজ ফাতেমা ইশরাত জাহান (রিফাত)-এর নেতৃত্বে অত্যন্ত জটিল এবং বিপজ্জনক অপারেশনটি সম্পন্ন করা হয়। ঘণ্টাখানেক ধরে চলা অপারেশনটিতে সহায়ক হিসেবে ছিলেন ডা. কাজী ইরফান সোবহান, ডা. গাজী হাবিবুল্লাহ, ডা. শুভ্র সাহা, ডা. হাসান, ডা. পুনম রায় এবং এনেসথেসিয়োলজিস্ট ডা. আল বিরুনী।
বিজ্ঞাপন
কোনো রকমের মস্তিষ্কের ইনজুরি, রক্তনালির ইনজুরি, চোখের ইনজুরি ব্যতীত অত্যন্ত সফলতার সাথে অপারেশনটি সম্পন্ন হয়। ইমারজেন্সি অপারেশন থিয়েটারের এবং পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডের সেবিকাবৃন্দ, ওটি স্টাফদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা এবং আন্তরিকতায় রোগীটিকে অপারেশন পরবর্তী যথাসময়ে ওয়ার্ডে প্রেরণ করা সম্ভব হয়। কোনো রকম মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুর অক্ষমতা ব্যতীত রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছুটি প্রদান করা হয়।
‘ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ দেশের সকল সরকারি হাসপাতালে এই ধরনের অত্যন্ত জটিল অপারেশন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা হয়ে থাকে,’ জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
এসএইচ/এএস