বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪, ঢাকা

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স রোধে ভ্যাকসিনে জোর বিশেষজ্ঞদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪১ পিএম

শেয়ার করুন:

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স রোধে ভ্যাকসিনে জোর বিশেষজ্ঞদের

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) বিশ্ব স্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় হুমকি বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় এটি প্রতিরোধে এখনই সরকারের প্রদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন তারা। একইসঙ্গে এএমআর প্রতিরোধ ভ্যাকসিন কার্যকর সহযোগী হতে পারে বলে মত তাদের।

রোববার (০৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর গোল্ডেন টিউলিপ হোটেলে ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স অ্যান্ড ভ্যাকসিনস ওয়ার্কশপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


কর্মশালাটি গ্লোবাল অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স পার্টনারশিপের (জিএআরপি) সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) আয়োজন করে।

আলোচকরা বলেন, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স বিশ্ব স্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং চিকিৎসা পদ্ধতির কার্যকারিতা হ্রাস করে। তবে রোগের সংক্রমণ, অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার কমানো গেলে নির্দিষ্ট ভ্যাকসিন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।  

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে গ্লোবাল অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স পার্টনারশিপের চেয়ারম্যান ও আইসিডিডিআর,বির বিজ্ঞানী ড. ওয়াসিফ আলী খান, এ কার্যক্রমে বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানান। তিনি ২০১৬ সালে জিএআরপি, বাংলাদেশ অধ্যায়ের সূচনা হওয়ার পর থেকে এর অর্জনগুলো তুলে ধরেন। একইসঙ্গে তিনি বাংলাদেশে এএমআর চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে ওঠতে আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।


বিজ্ঞাপন


কর্মশালায় ভারতের ওয়ান হেলথ ট্রাস্টের সিনিয়র রিসার্চ অ্যানালিস্ট ঋষিরাজ ভগবতী ‘কমিউনিকেটিং অব দ্য ভ্যালু টু অ্যাড্রেস এএমআর- এভিডেন্স ফ্রম বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপাস্থাপন করেন। এতে তিনি জিএআরপি-এর উদ্যোগগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরে বলেন, জিএআরপি বর্তমানে সারাবিশ্বে টিকাদানের ইস্যুতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সকে সংযুক্ত করার উপর জোর দিচ্ছে। ভ্যাকসিন প্রয়োগে রোগ প্রতিরোধে সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে শুধুমাত্র রোগ কমানো নয়, মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সও কমানো সম্ভব।

এতে অংশ নিয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেন, মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশু ও প্রাণীদের মধ্যেও অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। যা উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। আমরা দীর্ঘদিন ধরে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স নিয়ে কাজ করছি। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে, আমরা জানি, আমাদের ঘাটতিগুলো কোথায়, কিন্তু আমরা এখনও জানি না এটি কিভাবে সমাধান করা যায়। এ অবস্থায় আমাদের এখনই নীতিনির্ধারকদের এ বিষয়ে জানাতে হবে। আমাদের প্রস্তুতি প্রয়োজন, যেন আমরা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে পারি।

এ সময় স্বাস্থ্য অধিদফতরের টিকা কার্যক্রম শাখা ইপিআইয়ের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. তানভীর হোসেন, বাংলাদেশে ইপিআই এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে টিকাদানের ভূমিকা উপস্থাপন করেন। একইসঙ্গে ক্রমবর্ধমান এএমআর উদ্বেগ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন প্রবর্তনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অব্যাহত প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশে এএমআর ধারণ করার পদক্ষেপগুলি উপস্থাপন করে ডা. অনিন্দ রহমান, এএমআর, এ বিষয়ক নজরদারি, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল স্টুয়ার্ডশিপ নির্দেশিকা সম্পর্কিত জাতীয় কৌশল ও পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। আইইডিসিআর এবং আইসিডিডিআর,বি দেশে মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরি প্রশিক্ষণকে শক্তিশালী করতে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

এ সময় অন্যান্য আলোচকরা অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের বিষয়ে ভবিষ্যত চিকিৎসকদের প্রশিক্ষনের উপর জোর দেন।

কর্মশালার সমাপনী বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার উপ-পরিচালক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, অনেক চিকিৎসক আছেন যারা ব্যক্তিগতভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের নৈতিক ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন নন। আলোচনার মাধ্যমে তাদের শিক্ষিত এবং সচেতন করতে হবে।

এমএইচ/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর