শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪, ঢাকা

‘কিনে খেতে তো পারব না, তাই ছবি তুলে নিলাম’

আমিনুল ইসলাম মল্লিক
প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০২৪, ০২:৪৭ পিএম

শেয়ার করুন:

‘কিনে খেতে তো পারব না, এজন্য ছবি তুলে নিলাম’

মঙ্গলবার সকাল ১০টা। রাজধানীর পল্টন-বায়তুল মোকাররম ও এর আশপাশ এলাকায় গিয়ে হরক রকমের খেজুর নিয়ে দোকান সাজাতে ব্যস্ত দোকানীরা। বাহারি আইটেমের খেজুরগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি দামও অনেক চড়া। বছরের ব্যবধানে দাম প্রায় দ্বিগুন হয়েছে রোজায় ইফতারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পণ্যটির। ভালো মানের খেজুর প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ২২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর সর্বনিম্ন বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা দরে। অনেকে দাম জিজ্ঞাসা করলেও কেনার লোক খুবই কম। উচ্চমূল্যের কারণে পণ্যটি কিনতে ক্রেতাদের আগ্রহ কম বললেও বিক্রেতাদের ভাষ্য এ নিয়ে তাদের করার কিছু নেই। তাদের ভাষ্য, ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে অনেক। পাশাপাশি অন্যান্য খরচও বেড়েছে যার কারণে দাম বাড়তি।

বায়তুল মোকাররমের বিপরীতে কয়েকটি দোকানে নানা ফল নিয়ে পসরা বসিয়েছেন দোকানিরা। তার মধ্যে খেজুর অন্যতম। দোকানি আব্দুস সোবহানের কাছে খেজুরের দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার দোকানের সবচেয়ে দামি ব্রান্ডের খেজুর হচ্ছে মদিনা চেরি আম্বার। দাম ১ হাজার ৮০০ টাকা৷ মিশরীয় আম্বার ১৬০০ টাকা কেজি৷ কালো গোল আকৃতির আজওয়ার দাম ১ হাজার ২০০ টাকা করে৷ সোবহানের দোকানের সর্বনিম্ন খেজুরের দাম ৬০০ টাকা কেজি।


বিজ্ঞাপন


একটু এগিয়ে দৈনিক বাংলা মোড়ের দিকে যেতে আরেকটি খেজুরের দোকান চোখে পড়ে। দোকানি মুসলিম উদ্দিন দোকান সাজ্জাচ্ছেন। তার দোকানে একই খেজুর মদিনা চেরি আম্বারের দাম চাওয়া হচ্ছে ২২০০ টাকা।

এতো দাম কেন জানতে চাইলে মুসলিম উদ্দিন ঢাকা মেইলকে বলেন, পাঁচ কেজি মদিনা চেরি আম্বারের পাইকারি দাম ৯ হাজার ৯০০ টাকা। প্রতি কেজির দাম হচ্ছে প্রায় ২ হাজার। আর আমরা বিক্রি করছি ২২০০ টাকা দরে।

এই দোকানি আরও বলেন, এবারের খেজুরের প্রতি কেজি ভ্যাট বসানো হয়েছে প্রকারভেদে ১১০ বা ২১০ টাকার মতো করে। দোকান চালাতে অন্যান্য খরচও আছে। সব মিলে প্রতি কেজি খেজুরের দাম নিচ্ছি ২২০০ টাকা।

মুসলিম উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি পাকিস্তান আমল থেকে খেজুরের ব্যবসা করছি। দাম বাড়ার প্রবণতা এর আগে অনেক কমই দেখেছি। এবারে খেজুরের দাম লাগামহীন। আগে এরকম এক লাফে খেজুরের দাম দ্বিগুন হতে দেখিনি।


বিজ্ঞাপন


এ সময় সেখানে থাকা একজন ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের দেশের নেতারা জনগণের জন্য কিছুই করতে পারে না। পরে খেজুর না কিনেই চলে যাওয়ার আগে একটি ছবি তুলে তিনি বলেন, কিনে খেতে তো পারব না, এজন্য ছবি তুলে নিলাম।

প্রথম রমজানে ইফতারি আইটেম খেজুরের পদ বাড়ানো হয়েছে বায়তুল মোকাররমের মার্কেটের নিচের দোকানগুলোতে। এখানে দুটি দোকানে ক্রেতারা খেজুর কেনার জন্য যাচাই বাছাই করছেন। হাত দিয়ে দেখছেন। কিন্তু দাম শুনে সবার চোখ ছানাবড়া। তাদের ভাষ্যমতে, এবারের খেজুরের দাম গতবারের তুলনায় দ্বিগুন করা হয়েছে।

তাদের ভাষ্য, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রমজানে খেজুরের চাহিদা বেশি থাকায় ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ নিচ্ছেন।

কিন্তু ব্যবসায়ীরা জানান, এই সময় আড়তদাররাও নিজেদের মনমতো খেজুরের দাম ধরে। আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়। আমাদের কেনা বেশি দামে পড়লে আমরা কম দামে দেব কীভাবে। এমনিতেই তো কাস্টমার কম। আমরা তো বিক্রি করতে পারলেই লাভ।

এআইএম/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর