নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভুইগড়ে মসজিদের ভেতর ঢুকে খতিব ও কয়েকজন মুসল্লিকে পিটিয়ে জখম করেছে বহিরাগতরা।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও শনিবার (২২ মার্চ) রাতে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়।
বিজ্ঞাপন
ফতুল্লা থানায় এ বিষয়ে আহতদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে খতিবসহ ৩ জনকে পিটিয়ে আহত করার সত্যতা পেয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার রূপায়ণ টাউনে বহিরাগতদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মসজিদের ভেতরেই খতিবসহ মুসল্লিদেরকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে বহিরাগত জহিরুল ইসলাম (৫৫) গং।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১০টায় জোরপূর্বক রূপায়ণ টাউন জামে মসজিদের খতিব শায়েখ জামাল উদ্দিনকে (৫০) অব্যাহতি ও লাঞ্ছিত করাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী হামলায় খতিবসহ তিনজন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন- খতিব শায়েখ জামাল উদ্দিন (৫০), এম এ হোসাইন রাজ (৩৬) ও আব্দুল হান্নান (৪০)।
এ ঘটনায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে অভিযুক্ত করে শুক্রবার ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ মামলা দায়ের করেন। হামলায় আহত এম এ হোসাইন রাজ নিজেই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এসময় সন্ত্রাসীরা রাজ ও মুসল্লিদের ওপর হামলায় গুরুতর আহত রাজের সঙ্গে থাকা পঁয়ত্রিশ হাজার পাঁচশত টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
অভিযোগে উল্লিখিত অভিযুক্তরা হলেন- জহিরুল ইসলাম (৫৫), আবু সাইদ পাটোয়ারী রাসেল (৪৩), বাবু (৩৭), মো. আব্দুল মুবিন (৫৫), মো. বাহাউদ্দিন (৫০) ও মো. মিজানুর রহমান (৪৭)।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তরা বহিরাগত হয়েও আধিপত্য বিস্তারের জন্য রূপায়ণ টাউন সোসাইটিতে ফ্ল্যাট মালিকদের জিম্মি করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে আসছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, জহিরুল গংরা বহিরাগত হয়ে ও সম্প্রতি জোরপূর্বক রূপায়ণ টাউন সোসাইটির লোকজন বা মুসল্লিদের মতামত ব্যতীত নিজেদের মনগড়া মসজিদ কমিটি গঠন করে। যা উক্ত টাউনে বসবাস করা মুসল্লিদের কেউই স্বীকৃত দেয়নি। রূপায়ণ টাউন জামে মসজিদে শায়েখ জামাল উদ্দিন সাহেব দীর্ঘ ১৩ বছর সুনামের সহিত খতিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আমরা রূপায়ণ টাউনবাসী খতিব সাহেবের ওপর সর্বোচ্চ সন্তুষ্ট। কিন্তু উক্ত অভিযুক্তরা তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বিস্তারের স্বার্থে আমাদের খতিবকে বিতাড়িত করার জন্য অপচেষ্টা ও পাঁয়তারা করে আসছে।
রূপায়ণ টাউনের বাসিন্দা ঢাকা মহানগর জামায়াত নেতা মো. কামরুজ্জামান বলেন হামলাকারীরা সবাই বহিরাগত ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত
তারই ধারাবাহিকতায় ন্যাক্কারজনক এই ঘটনার সৃষ্টি, সিসি ফুটেজে স্পষ্ট প্রমাণ দেখে জড়িতদের বিচার দাবি করছি। খতিব সাহেবের অন্যায়ভাবে অব্যাহতি পত্র দিলে এতে কিছু মুসল্লি প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে খতিব সাহেবসহ মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন এম এ হোসাইন রাজ, খতিব সায়েখ জামাল উদ্দিন ও আব্দুল হান্নান আহত হয়েছেন।
এসময় তাদের ডাক চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায় এ ঘটনায় থানা পুলিশে অভিযোগ দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে চলে যায়। মুসল্লিদের দাবি প্রশাসন ন্যাক্কারজনক এই ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি। বাদী রাজ বলেন মামলা হলে ও এখনও সন্ত্রাসীরা কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় আতঙ্ক ও শঙ্কা কাটছে না।
এ বিষয়ে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহিন বলেন, অভিযোগের তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
প্রতিনিধি/এসএস