নরসিংদীর সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের কয়েকশ একর ফসলি জমির মাটি অবৈধ চুম্বক ড্রেজার দিয়ে কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন বিএনপি সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় বুধবার ( ১৯ মার্চ) দুপুরে নরসিংদী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। অভিযোগের স্মারকলিপিতে ১৩৯ কৃষক স্বাক্ষর দেন।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন - বাখরনগর গ্রামের দুদুল মিয়া (৫০), মুছা মিয়া (৬২), বকশালীপুর গ্রামের হাবিজ উদ্দিন (৬৫) ও বীরগাঁও গ্রামের ইলিয়াস মিয়া (৪৫) প্রমুখ।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়া ১৮-২০ টি চুম্বক ড্রেজার দিয়ে গেল তিন মাস ধরে অবৈধভাবে আলোকবালীর গৌরীপুরা চরের কৃষিজমি থেকে বালু উত্তোলন করছেন।
যার ফলে ইতিমধ্যে ১৩৯ জন কৃষকের প্রায় কয়েকশ একর কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বালু উত্তোলন বন্ধে দফায় দফায় প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অভিযুক্তদের জরিমানা করলেও থেমে নেই বালু উত্তোলন। উল্টো তাদের অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের গতি বেড়েছে।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগে আরও বলা হয় যে কাইয়ুম মিয়ার বিরুদ্ধে চারটি হত্যা মামলা ও একাধিক অস্ত্র মামলা রয়েছে। তার এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই কৃষকদের ভয়-ভীতি দেখানো হয় । এমনকি গত ৯ মার্চ ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার পথে কৃষকদের ওপর দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল বিস্ফোরণ করে হামলা চালানো হয়, এতে চারজন আহত হন।
কৃষকদের অভিযোগ, এই অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে তাদের জমি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে এবং পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। তারা নরসিংদীর জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে কাইয়ুম মিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে আব্দুল কাইয়ুমের বক্তব্য জানতে একাধিকবার তাকে কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
নরসিংদী জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব দীপক কুমার বর্মণ প্রিন্স বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশ কৃষক বাঁচলেই - দেশ বাঁচবে। কৃষকদের পাশে থাকতে কৃষকদল সারাদেশে সমাবেশ করছে। যে বা যারা কৃষকদের ক্ষতি করবেন, তাদের বিপক্ষে আমাদের কঠোর অবস্থান থাকবে। দলের নেতৃবৃন্দের প্রতি সুপারিশ করবো যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আব্দুল কাইয়ুমের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এবারও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/ এমইউ