রোববার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

বান্দরবানে ভূমি রক্ষা আন্দোলন কর্মী রিংরং ম্রোর মুক্তি দাবি

জেলা প্রতিনিধি, বান্দরবান
প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪৫ এএম

শেয়ার করুন:

loading/img

বান্দরবানের লামা থেকে গ্রেফতার হওয়া ‘সরই ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি’র যুগ্ম আহ্বায়ক রিংরং ম্রোর মুক্তির দাবি জানিয়েছেন ম্রো শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শহরে প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ম্রো স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএসএ) কর্মীরা সংক্ষিপ্ত এক সমাবেশে তার মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।


বিজ্ঞাপন


সমাবেশে বিএমএসএ’র লামা উপজেলা কমিটির সভাপতি মাংয়ং ম্রো বলেন, পাহাড়ে ম্রো জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ভূমি আগ্রাসনের শিকার হয়ে আসছে। এতদিন প্রতিবাদ-প্রতিরোধ না থাকায় ভূমি দখল নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হয় না। কিন্তু এখন প্রতিবাদ হচ্ছে। আন্দোলন হচ্ছে। সে কারণে আন্দোলনে থাকা কর্মীদের গ্রেফতার করে হয়রানি করা হচ্ছে।

শিক্ষার্থী এডিসন চাকমা ও উবাসিং মারমা অভিযোগ করে বলেন, পাহাড়ে বছরের পর বছর ভূমি আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে পাহাড়িরা। তার মধ্যে ম্রোরা সবচেয়ে বেশি ভূমি আগ্রাসনের শিকার। বিভিন্ন কোম্পানি লিজের নাম করে শত শত একর দখল করে নিয়েছে। কিন্তু গণমাধ্যমে বিষয়গুলো সেভাবে আসছে না। তারা নিজেরা চেপে যান নাকি কোথাও থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় তা কেউ জানে না। আর যারা ভূমি রক্ষা আন্দোলন করে তাদেরকে গ্রেফতার করে নানাভাবে হয়রানি করা হয়।

সংহতি জানিয়ে সাবেক ছাত্র নেতা জন ত্রিপুরা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আশা করেছিলাম, সারাদেশের মত পাহাড়েও পরিবর্তন আসবে। পাহাড়ে আগের মত হামলা, মামলা ও লুটপাট বন্ধ হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনগণের সেবক হবে। ইতোমধ্যে ছয়টা সংস্কার কমিশন করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ যে পর্যায়ে যাচ্ছে, মনে হচ্ছে দেশে এখন আরেকটা যুদ্ধ চলছে। সাদা পোশাকের পুলিশের সদস্যরা আগের মতোই গ্রেফতার করে যাচ্ছে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ম্রো স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি তনয়া ম্রো। সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।


বিজ্ঞাপন


এদিকে সোমবার বিকেল ৪টায়  সরই এলাকার লাংকম ম্রোর পাড়ার সামনে রিংরং ম্রোর মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে লাংকম ম্রো ও জয়চন্দ্র পাড়াবাসীরা। সেখানে বক্তব্য রাখেন রিংরং ম্রোর স্ত্রী সংলে ম্রো, ছেলে প্রেংনই ম্রো ও কারবারী (পাড়াপ্রধান) লাংকম ম্রো।

রিংরং ম্রো লামা উপজেলা সরই এলাকার জয়চন্দ্র ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দা। ২০২২ সাল থেকে সেখানে ৪০০ একর জুম ভূমি রক্ষা আন্দোলন করে আসছেন তিনি। সে সময় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটের বিরুদ্ধে ৪০০ একর জুম ভূমি নিজেদের ইজারা পাওয়ার দাবি করে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠে। পরে সেখানে বেশ কয়েকটি ঘর নির্মাণ করেন ম্রো সম্প্রদায়ের লোকজন।

পরে ম্রো ও ত্রিপুরা বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা করে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে একটি মামলা খালাস হয়। পরবর্তীতে পাঁচটি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন রিংরং ম্রো। তাদের ব্যবহার করা একটা ঝিরির পানিতে কীটনাশক বিষ ঢেলে দেওয়ার অভিযোগে পাড়াবাসীরা মামলা করেন লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধেও।

রিংরং ম্রো’র ছেলে কলেজ শিক্ষার্থী যোহন ম্রো অভিযোগ করে বলেন, ২২ ফেব্রুয়ারি সরইয়ে কোয়ান্টাম এলাকা থেকে তার বাবাকে গ্রেফতার করে একদল সাদা পোশাকের পুলিশ।

প্রতিনিধি/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন