বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

বিমান তৈরি করতে কী কী লাগে?

এভিয়েশন ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০১:৩০ এএম

শেয়ার করুন:

airplane

বাস-ট্রেন কিংবা লঞ্চ তৈরি করতে লোহা, স্টিল কিংবা ইস্পাত ব্যবহৃত হয়। কিন্তু বিমান কী কী তৈরি? বিমানও কি এসব উপাদানে তৈরি? 

উত্তর হচ্ছে না। বিমান বা উড়োজাহাজ তৈরি করতে লাগে বিশেষ কিছু ধাতব উপাদান। কেননা, যাত্রীসমেত বিমান তার নিজস্ব কাঠামো নিয়ে আকাশে ওড়ে। তাই এই উড়োযান তৈরিতে হালকা অথচ শক্ত ধাতু ব্যবহৃত হয়। 


বিজ্ঞাপন


সামান্য ওজনের কিছুও শূন্যে ভাসিয়ে রাখা যায় না। মধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে তা নিচে পড়ে যায়। তাহলে বিশাল ওজনের বিমান কীভাবে আকাশে উড়ে বেড়ায়? তাও আবার এত মানুষ নিয়ে? কী দিয়ে তৈরি হয় বিমান? এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই উঁকি দেয়। 

plane-2

বিমান নির্মাণে বিভিন্ন ধরনের ধাতু ও অধাতু ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ওজনে হালকা কিন্তু শক্ত এমন উপাদানই বেছে নেওয়া হয় বিমান তৈরিতে। 

প্রাথমিক পর্যায়ে বিমান তৈরি হতো কাঠ দিয়ে। পরবর্তীতে ওজনে হালকা অ্যালয় বা সংকর ধাতুর খোঁজ মেলে। যা কাঠের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। তখন থেকে কাঠের পরিবর্তে অ্যালয় ব্যবহার শুরু হয়। বর্তমানে বিমান তৈরিতে দুই ধরনের উপকরণ ব্যবহৃত হয়। 


বিজ্ঞাপন


১. ধাতব উপকরণ 
২. অধাতব উপকরণ 

ধাতব উপকরণ

বিমান নির্মাণে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ধাতু হলো অ্যালুমিনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, টাইটানিয়াম,ইস্পাত এবং এদের সংকর ধাতু।

অ্যালয়

দুই বা ততোধিক ধাতুর সমন্বয়ে একটি অ্যালোয় বা সংকর ধাতু সৃষ্টি হয়। এতে যে ধাতুর পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে তাকে বেজ ধাতু বলা হয়। অন্য যে উপাদানগুলো বেজ ধাতুর সঙ্গে মেশানো হয় তাদের সংকর উপাদান বলে। উপাদানগুলো মেশানোর ফলে বেজ ধাতুর বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তন আসতে পারে। 

plane-news

উদাহরণস্বরূপ, খাঁটি অ্যালুমিনিয়াম মূলত নরম ও দুর্বল হয়ে থাকে। এর সঙ্গে স্বল্প পরিমাণ কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও ম্যাগনেসিয়াম মেশালে অ্যালুমিনিয়ামের শক্তি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। তাপ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অ্যালয়ের কঠোরতা কমানো-বাড়ানো যায়। বিমান শিল্পের জন্য অ্যালোয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। খাঁটি উপকরণ দিয়ে যা সম্ভব নয়, অ্যালয় দিয়ে তা সহজে করা যায়। 

অ্যালুমিনিয়াম 

আধুনিক বিমান গঠন শৈলীতে অ্যালুমিনিয়াম অ্যালয়ের ব্যবহার সর্বোচ্চ। এটি এত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এতে উচ্চ শক্তি আর ওজনের সবচেয়ে সুন্দর মেলবন্ধন রয়েছে। অ্যালুমিনিয়াম অ্যালয় ক্ষয় প্রতিরোধী। এটি তৈরি করা তুলনামূলক সহজ। অ্যালুমিনিয়ামের সবচেয়ে দারুণ বৈশিষ্ট্য হলো এটি হালকা ওজনের। বিমান তৈরিতে যা খুব বড় ভূমিকা রাখে। 

plane-pic

ম্যাগনেসিয়াম 

বিশ্বের সবচেয়ে হালকা কাঠামোগত ধাতু ম্যাগনেসিয়াম। রূপালি সাদা এই উপাদানটির ওজন সমপরিমান অ্যালুমিনিয়ামের চেয়ে দুই তৃতীয়াংশ কম। হেলিকপ্টার তৈরিতে ম্যাগনেসিয়াম ব্যবহার করা হয়। এর ক্ষয় প্রতিরোধী ক্ষমতা কম হওয়ায় প্রচলিত বিমানে এটি কম ব্যবহার করা হয়। 

টাইটেনিয়াম 

হালকা ওজন, শক্তিশালী, ক্ষয় প্রতিরোধী একটি ধাতু টাইটেনিয়াম। সাম্প্রতিক সময়ে, বিমান তৈরিতে এই উপাদানটিকে আদর্শ ধরা হয়। কারণ, অ্যালুমিনিয়াম অ্যালয় এর তুলনায় দুর্বল। অন্যদিকে, স্টেইনলেস স্টিল ওজনে ভারী। পাশাপাশি এটি সামুদ্রিক বায়ুমণ্ডল দ্বারা প্রভাবিত হয় না।

plane-pic-5

স্টিল অ্যালয় 

বিমান তৈরিতে স্টিল অ্যালোয় বা ইস্পাতের সংকর ধাতু ব্যবহৃত হয়। এটি বেশ শক্তিশালী। স্টিল অ্যালয়তে স্বল্প পরিমাণ ইস্পাতে কার্বন, নিকেল, ক্রোমিয়াম, ভ্যানাডিয়াম ও মলিবডেনাম থাকে। হাই টেনসিল স্টিল পতিত না হয়ে প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে ৫০ থেকে ১৫০ টন চাপ নিতে পারে। এ ধরনের স্টিল বা ইস্পাত দিয়ে টিউব, রড, তার ইত্যাদি তৈরি করা হয়। 

এছাড়া বিমান তৈরিতে স্টেইনলেস স্টিল ব্যবহার করা হয়। এই স্টিল ক্ষয় প্রতিরোধী হয়ে থাকে। পানির কাছাকাছি স্থানের জন্য এটি বেশ মূল্যবান।

এনএম/এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর