কখনো বিএনপি, কখনো ছাত্রদের মন যুগিয়ে চলতে গিয়ে সরকার নিজেদের অবস্থান দুর্বল করে ফেলছে বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এই সরকার যদি তার লক্ষ্য অর্জনে সফল না হয় তাহলে ভবিষ্যতে সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।’
শনিবার (১৫ মার্চ) এবি পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর আয়োজিত ‘রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী’দের সম্মানে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন মঞ্জু।
বিজ্ঞাপন
চট্টগ্রামের হোটেল আগ্রাবাদে বিকেল পাঁচটায় এই ইফতার মাহফিল হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর এবি পার্টির আহ্বায়ক গোলাম ফারুক। দলটির চট্টগ্রাম মহানগর যুগ্ম সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার যায়েদ হাসান চৌধুরীর সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে আরও বক্তব্য দেন-এবি পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল মো. দিদারুল আলম (অবঃ), কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার লোকমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক ছিদ্দিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আশরাফ মাহমুদ রুমেল, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগর সদস্য সচিব সৈয়দ আবুল কাশেম, এবি পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর যুগ্ম সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম বাবুল, এবি যুব পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর সমন্বয়ক আব্দুর রহমান মনির এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা এবি পার্টির সমন্বয়ক জিয়া চৌধুরী।
ইফতারে বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি, জনসংহতি আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, শিক্ষক প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, লেখক বুদ্ধিজীবীসহ চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেন।
ইফতারের আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, কাঙ্ক্ষিত সংস্কার, যথাযথ বিচার ও সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের পিছু হটার কোনো সুযোগ নেই।
বিজ্ঞাপন
রোজায় নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়েনি জানিয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, অন্যান্যবারের মতো এবারের রোজায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়েনি, বিদ্যুতের লোড শেডিং নিয়েও কোনো তেলেসমাতি ঘটেনি, যানজট নিয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ আরও সিরিয়াস হলে আমরা আরেকটু স্বস্তি পেতাম। এ থেকে আমরা বুঝলাম যে, সরকার আন্তরিক হলে অনেক কিছুই করা সম্ভব।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ড. ইউনুস প্রথমে বললেন; তিনি আমাদের সহযোদ্ধা এবং তার কথা আমাদেরকে শুনতে হবে। আমরা এটাকে সাদরে গ্রহণ করেছিলাম। তিনি যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছেন। রাজনৈতিক দলগুলো কোনো আপত্তি করেনি। ইদানিং তিনি বলা শুরু করেছেন; তিনি আমাদের সহযোগী এবং আমরা যেভাবে চাই সেভাবে তিনি করবেন। কম সংস্কার চাইলে ডিসেম্বরে আর বেশি সংস্কার চাইলে আগামী বছরের জুনে নির্বাচন।’
এটাকে ‘সরকারের পিছু হটার লক্ষণ’ উল্লেখ করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘কখনো বিএনপি কখনো ছাত্রদের মন যুগিয়ে চলতে গিয়ে সরকার নিজেদের অবস্থান দুর্বল করে ফেলছে।’
সরকারকে সতর্ক মঞ্জু বলেন, ‘কাঙ্ক্ষিত সংস্কার, যথাযথ বিচার ও সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের পিছু হটার কোনো সুযোগ নেই। এই সরকার যদি তার লক্ষ্য অর্জনে সফল না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।’
সংস্কার ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে একটি টেকসই জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘এই টেকসই ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে হলেও পতিত ফ্যাসিবাদের আবার উত্থান ঘটবে, এ সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা কেউই তখন রেহাই পাবে না।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- এবি পার্টির উত্তর জেলা কমিটির সদস্য বোরহান উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সদস্য আতাউর রহমান নূর, এবি যুব পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর সহ-সমন্বয়ক মোহাম্মদ জাবেদ, রোটারিয়ান ওমর ফারুক, বাকলিয়া থানা সমন্বয়ক মোহাম্মদ আজগর, জাহেদুর রহমান, এসএম আবুল কাশেম, সবুজ কর্মকার, নাজমুল হক, তরিকুল ইসলাম প্রমুখ।
এমআর