শুধু হাসিনা নয়, তার কোনো দোসরকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বিশেষ সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
তিনি বলেছেন, ‘খুনি হাসিনার বিচার আর কেউ করুক বা না করুক বিএনপি বিচার করবেই। এদের নিষ্ঠুরতা থেকে রেহাই পায়নি গর্ভবতী মা, গুলিতে ঝাঁঝরা করে হত্যা করা হয়েছে শিশুদের। সেটি আমরা কখনও ভুলব না।’
বিজ্ঞাপন
ইশরাক বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকায় আটজনকে হত্যা করা হয়েছে। ১৩ সাল থেকে গুম করা হয়েছে অসংখ্য নেতাকর্মীকে। শুধু হাসিনা নয়, তার কোনো দোসরকে ছাড় দেওয়া হবে না। বিএনপি ক্ষমতায় আসুক আর না আসুক, যারা আসবে তাদেরকেও হাসিনার বিচার করতে বাধ্য করব।’
শনিবার (১৫ মার্চ) বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ মাঠে জেলা ছাত্রদল আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইশরাক বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে যেসব ছাত্র সংগঠন ভূমিকা রেখেছে তাদের মধ্যে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে ছাত্রদল তথা তরুণরা। এর মাধ্যমে প্রমাণ হয় দেশের পাহাড় সমান বাঁধা এবং সমস্যা সমাধান তারা করতে পারে। এই তরুণরা নিজের জীবন দিয়ে খুনি হাসিনাকে মোকাবিলা করে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেশকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছিল। জাতিকে হাসিনা তার পরিবারের দাসে রূপান্তরিত করেছিল। তারুণ্যের শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে শোষণমুক্ত করেছে।
বিজ্ঞাপন
ইশরাক হোসেন বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর থেকে জনগণের ছাত্র রাজনীতির প্রতি ভিন্ন চাহিদা তৈরি হয়েছে। তারা আমাদের কাছে অনেক কিছু আশা করে। মানুষের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জুলাই বিপ্লবকে স্মরণ করে আমাদের সংস্কার হতে হবে, সংশোধন হতে হবে। যেভাবেই বলি না কেনো আমাদের ভিন্নভাবে চিন্তা করতে হবে। রাজনীতি থেকে সব নেতিবাচক ধারণা পরিহার করতে হবে।
সাদেক হোসেন খোকাপুত্র বলেন, ‘আমাদের মিশন ও ভিশনের মাধ্যমে জনগণের মন জয় করে ভোটের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে। যদি ক্ষমতায় আসতে পারি তবেই তারেক রহমান প্রদত্ত ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে পারব। এই ৩১ শুধু বিএনপির একার নয়, ৩৭টি রাজনৈতিক দল এবং বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়ে হাসিনা পালানোর দেড় বছর আগে জাতির সামনে উত্থাপিত করা হয়। আজকে যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে তাতো আড়াই বছর আগেই তারেক রহমান প্রস্তাব দিয়েছেন।’
ইশরাক বলেন, ‘একদলীয় শাসনব্যবস্থা বিলুপ্ত করে জিয়াউর রহমানই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করে দেশে সংস্কার করেছিলেন। এটিই বড় সংস্কার। এদেশে সংস্কার করলে বিএনপিই করেছে। বিএনপি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না, করলে ১৪ সালের নির্বাচনে অংশ নিত, আপোষের প্রস্তাব মেনে নিত।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংস্কারের নামে কেউ কেউ নির্বাচন বিলম্বিত করার অপচেষ্টা করছেন। সরকারের ভেতরে থেকেই একটি অংশ নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র করছে। কারা করছেন তা আমরা জানি। এই চক্রটি নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে তৃতীয়পক্ষকে সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছে। এ চেষ্টা সফল হলে দেশ আবারও পিছিয়ে যাবে, গণতন্ত্র পিছিয়ে পড়বে। তখন দেশ উত্তর কোরিয়া এবং মিয়ানমারের মত জান্তা সরকার আমাদের ঘাড়ে চেপে বসবে। তা আমরা হতে দিতে চাই না, হতে দেব না।’
জেলা ছাত্রদল সভাপতি হাবিবুর রশিদ সন্ধানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক এম আর হাসান পলাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ভিপি সাইফুল ইসলাম, আলী আজগর তালুকদার হেনা ও জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম খায়রুল বাশারসহ নেতৃবৃন্দ।
এমই/এমআর