বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের (বিসিএস) ৪৩তম পরীক্ষায় দ্বিতীয় গেজেটে বঞ্চিত ২২৭ জন ক্যাডারকে গেজেটভুক্ত করে যোগদান নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়েছে। রোববার (১৬ মার্চ) বিকেল ৩টায় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ফারিয়া ইসলাম বলেন, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় দীর্ঘ চার বছর ধরে নিজের মেধা, যোগ্যতা, পরিশ্রমে আমরা ২ হাজার ১৬৩ জন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে দেশের সেবায় আত্মনিয়োগের স্বপ্ন দেখেছিলাম। দীর্ঘ দশ মাস ধরে দুই ধাপে পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর গত বছরের ১৭ নভেম্বর যোগদানের তারিখ নির্ধারণ করে আমাদের বহুল কাঙ্ক্ষিত গেজেট প্রকাশিত হয়।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে ২৮ অক্টোবর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমাদের যোগদান পিছিয়ে নতুন বছরের ১ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়। আমরা এটিকে নিয়তির অংশ হিসেবে মেনে নিয়েছিলাম। এরই মধ্যে যোগদানের প্রস্তুতি হিসেবে আমাদের সহকর্মীদের মধ্যে অনেকেই পূর্বের চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। কিন্তু কে জানত, আমাদের জন্য আরও বড় আঘাত অপেক্ষা করছিল। ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর যোগদানের একদিন পূর্বে প্রকাশিত নতুন গেজেটে আমাদের ২২৭ জনের নিয়োগ স্থগিত করে গেজেট প্রকাশ করা হয় যা আমাদের জীবনকে এক অনিশ্চয়তার অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে।
বঞ্চিত এই ক্যাডার বলেন, আপনারা জানেন বিসিএস’র ইতিহাসে একবার গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পর নিয়োগ স্থগিত করার উদাহরণ আর দ্বিতীয়টি নেই। আমাদের ২২৭ জন সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিয়োগ স্থগিত করে নতুন গেজেট প্রকাশিত হলে গত ৩১ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করি এবং আমাদেরকে ২য় গেজেট থেকে বাদ দেওয়ার যৌক্তিক কারণ জানতে চাই। তারপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমাদের কাছে পুনরায় বিবেচনার জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করে। এর প্রেক্ষিতে আমরা সকলেই সেই সুযোগ গ্রহণ করি এবং সুবিচারের আশায় অপেক্ষা করতে থাকি। পরে নতুন বছরের প্রথম দিন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মিডিয়ার সামনে স্পষ্ট ভাষায় জানান যে, যদি কারও বিরুদ্ধে তিনটি গুরুতর অভিযোগ- ফৌজদারি অপরাধ, রাষ্ট্রদ্রোহিতা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কারাদেশ না থাকে; তবে তারা যোগদান করতে পারবেন। তিনি আরও জানান, এই প্রক্রিয়ার সাথে যেহেতু আরও দুটি অফিস অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির দফতর জড়িত। তাই, নতুন গেজেট প্রকাশিত হতে দুই থেকে তিন কর্মদিবস প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু এক গভীর বেদনা বিধুর নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে আজ দুই মাস পেরিয়ে গেলেও সেই গেজেট আলোর মুখ দেখেনি।
ফারিয়া ইসলাম বলেন, সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই আগামীকাল সোমবারের মধ্যে ২২৭ জনের মধ্যে নিরপরাধ সকলের গেজেট প্রকাশ করতে হবে। এটি আমাদের ন্যায্য অধিকার।
সংবাদ সম্মেলনে বঞ্চিত অর্ধশতাধিক ক্যাডার উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
এএসএল/এফএ