এই দুর্মূল্যের বাজারে ফ্রি ইফতারি করাচ্ছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে কমপক্ষে ১৫০-২০০ অসহায়, দুস্থ মানুষ প্রতিদিন করছে ইফতারি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এমন বিরল ঘটনা দেখা মেলা ভার। এবারের রোজার প্রথমদিন থেকেই অসহায়-দুস্থ মানুষদের খাওয়াচ্ছে তারা। শহরের সরকারি উজির আলী স্কুল মাঠে চলে তাদের এ কর্মকাণ্ড। প্রতিদিন স্কুল প্রাঙ্গণে এভাবেই সারিবদ্ধভাবে ইফতারি করে সাধারণ মানুষ। যারা কেউ শহরে ভ্যান, রিকশা, ইজিবাইক চালান অথবা মেসের খালা। অথবা শহরে আসেন ভিক্ষাবৃত্তি করতে। যাদের একমুঠো খাবার জোগাড় করতেই হিমশিম অবস্থা তারা মুরগির গোশের ঝোল ও সবজি খিচুড়ি দিয়ে পেটপুরে ইফতারি করে ফেরেন আপন ঠিকানায়।
বিজ্ঞাপন
ইফতারি করতে আসা এক ৬০ বছরের দুস্থ ইমারত আলী বলেন, আমাদের চাল কিনতে নুন আনা হয় না অবস্থা। সেখানে ভরপেট খাওয়া তাও আবার রোজা রেখে ইফতারি সত্যিই এদের জন্য দোয়া করি। যেন আরও এমন কাজ করতে পারে ওরা।
রহিম মোল্লা এক রিকশাওয়ালা বলেন, ভাই এখন যে যার ধান্দায় থাকে। সেখানে এরা ফ্রি ভাত খাওয়ায়। মাঝে মধ্যে গোস্ত থাকে। খুব মজা করে খাই।
বিজ্ঞাপন
কালাম মিয়া এক ইজিবাইক চালক বলেন, শহরের বাইরে থেকে এসে ইজিবাইক চালিয়ে আবার জমা দিয়ে যাই। কথনও না খেয়েও সেহরি করে বেরিয়ে পরি পেটের ধান্দায়। সেখানে এমন ইফতারি আয়োজন করে যারা তাদের ধন্যবাদ জানাই।
ইয়ুথ সানের সদস্য সৌভিক পোদ্দার জানান, আমরা সারা শহরে ঘুরে ঘুরে ফ্রি ইফতারির দাওয়াত দেই প্রতিদিন। দুস্থ, অসহায় নারী পুরুষরা সময় মতো চলে আসেন উজির আলী মাঠে। কোনোদিন সবজি খিচুড়ি, আবার মুরগির ঝোল দিয়ে খিচুড়ি, আবার কথনও সাদা ভাত দিয়ে মুরগির গোস্ত। বেশিরভাগই ভাতের আইটেম থাকে আমাদের।
ঝিনাইদহ ইয়ুথ সানের পরিচালক মাকিবুল ইসলাম বাপ্পি জানান, ইয়োথ সান সংগঠনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেন কমপক্ষে ১২ জন যুবক। যারা সারাবছরই মানুষের জন্য কাজ করে। ২০১৩ সালে গঠিত সংগঠনটি পর্যন্ত বিকলাঙ্গদের হুইল চেয়ার, করোনা মহামারিতে খাবার-ওষুধ-অক্সিজেন সিলিন্ডার বিতরণ, বন্যার সময় খাদ্য সরবরাহসহ শীতার্থদের পাশে দাঁড়ানো থেকে বেশিরভাগ মানবিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
তিনি বলেন, এ সংগঠনের কর্মীরা মানবিক ও সমাপ্তির বন্ধনে আবদ্ধ। সমাজের বিত্তবানদের সহায়তায় এই কাজগুলো করে থাকি আমরা। আমরা সবসময় নিজেরা রান্না করি। এরপর সবাই মিলে এই খাবার পরিবেশন করি। সেখানে সুশৃঙ্খলভাবে অসহায় মানুষেরা পেটপুরে খায়। প্রথমবার আমরা খাবার পরিবেশনের পর যদি আবারও কারও খাবারের প্রয়োজন হয় তাহলে আবার দেওয়া হয়। আমাদের টার্গেটই হচ্ছে একজনকে পেটপুরে খাওয়ানো।
প্রতিনিধি/এসএস