সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সরকারি কাজে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শতভাগ ব্লক ব্যবহার করার নির্দেশনা থাকলেও ব্যবহার হয় ২০ শতাংশের কম। একইসাথে চলতি বছরের মধ্যে সব উন্নয়ন ও সংস্কার কাজে শতভাগ ব্লক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে পোড়া ইটের ব্যবহার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার পরিকল্পনা বাস্তবায়নেরও নেই কোনো উদ্যোগ। উল্টো পরিবেশবান্ধব ব্লকের ভ্যাট ইটের তুলনায় ২৩ গুণ বেশি। সার্বিক দিক বিবেচনায় পরিবেশবান্ধব ব্লক আগামী ৫ বছরের জন্য সম্পূর্ণরূপে কর ও ভ্যাটমুক্ত করার দাবি উদ্যোক্তাদের।
শনিবার (৮ মার্চ) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন বাংলাদেশ কংক্রিট ব্লক প্রস্তুতকারক মালিক সমিতি।
বিজ্ঞাপন
এ সময় উপস্থিত ছিলেন - সমিতির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল মো. শাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. মুস্তাফিজুর রহমান, সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, মনির চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব প্রমুখ।
বাংলাদেশ কংক্রিট ব্লক প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির সভাপতি মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, সরকার দেশের কোটি মানুষের খাদ্য সংস্থান নিশ্চিত করার জন্য ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ), ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯)-এর ধারা ৫(৩ক)-এর ক্ষমতাবলে ইট উৎপাদনে মাটির ব্যবহার হ্রাস করার উদ্দেশ্যে সব সরকারি নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজে পরিবেশবান্ধব ব্লক (পোড়ানো মাটির ইটের বিকল্প) ব্যবহারের প্রজ্ঞাপন জারি করে। সরকারের ওই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১০০ ভাগ ব্লক ব্যবহার করার নির্দেশনা রয়েছে। অর্থাৎ, চলতি ২০২৫ সালের মধ্যে সব সরকারি উন্নয়ন ও সংস্কার কাজে শতভাগ ব্লক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে পোড়া ইটের ব্যবহার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
কিন্তু, দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, শতভাগ দূরের কথা - এখন পর্যন্ত ২০ শতাংশ ব্লক ব্যবহারও কার্যকর হয়নি। সরকারের অধিকাংশ প্রকৌশল সংস্থা এখনও নির্মাণকাজে ইট ব্যবহার করছে। যথাযথ উদ্যোগ, সংশ্লিষ্টদের অবহেলা এবং বিভিন্ন জটিলতায় তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার। এছাড়া সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বলা আছে, ২০২৫ সালের পর সরকারি কোনো কাজে আর মাটির পোড়ানো ইট ব্যবহার করা হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, মাটি পোড়ানো ইট এবং পরিবেশ বান্ধব ব্লক-এর মধ্যে রয়েছে এক অসম ভ্যাট এবং করের বোঝা। পরিবেশের জন্যে ক্ষতিকর ইটের বিপরীতে পরিবেশবান্ধব ব্লক কারখানা এখন পর্যন্ত কোনো ভর্তুকি বা আর্থিক প্রণোদনা পাচ্ছে না। কংক্রিট ব্লক কারখানার উৎপাদনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মেশিনের অংশ প্যালেট আমদানিতে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা আছে। এতে বিনিয়োগ খরচ অনেক বেড়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
অথচ এই পণ্যে শুল্ক আরোপের যৌক্তিক কারণ নেই। যেখানে পরিবেশবান্ধব সেক্টর হিসেবে প্রণোদনা পাওয়া প্রাপ্য, সেখানে ব্লক ফ্যাক্টরি মালিকরা পাচ্ছেন হয়রানি আর অতিরিক্ত ভ্যাট ও করের বোঝা। সার্বিক দিক বিবেচনায় পরিবেশবান্ধব ব্লক আগামী ৫ বছরের জন্য সম্পূর্ণরূপে কর ও ভ্যাটমুক্ত করার দাবি উদ্যোক্তাদের।
টিএই/ এমইউ