সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনতাই, পরে গ্রেফতার

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬ জুন ২০২৩, ০৫:১২ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

জেলার গাবতলীতে মাদক উদ্ধার করতে গিয়ে গ্রামবাসী পুলিশকে পিটিয়ে খোকন রায় (৩৫) নামের এক যুবককে হ্যান্ডকাপসহ ছিনিয়ে নেয়।

সোমবার দিবাগত রাত ২টায় খোকন রায়কে পুলিশ গ্রেফতার করলেও হ্যান্ডকাপ উদ্ধার হয়নি।


বিজ্ঞাপন


সোমবার (৫ জুন) সন্ধ্যার আগে গাবতলী উপজেলার মড়িয়া হিন্দুপাড়া থেকে খোকন রায়কে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

খোকন রায় গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের মড়িয়া হিন্দুপাড়া গ্রামের রাজকুমার ওরফে খোকা রায়ের ছেলে।

গোলাবাড়ি বাজারে তার ওষুধের দোকান রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ট্যাপেন্টাডল বিক্রি অভিযোগে দু’টি মামলা রয়েছে।

জানা গেছে, গাবতলী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম কাগইল ইউনিয়ন বিট পুলিশিংয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। সোমবার (৫ জুন) সন্ধ্যার আগে তিনি ছাড়াও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ইউছুব আলী ও কনস্টেবল শাহাদৎ হোসেন মহিষাবান ইউনিয়নের মড়িয়া হিন্দুপাড়া গ্রামে যান। এসময় ওই গ্রামের নির্মল রায়ের মেহগনি বাগানে বসে থাকা খোকন রায়কে তিনি গ্রেফতার করেন। এরপর হ্যান্ডকাপের এক প্রান্ত তার এক হাতে এবং অপর প্রান্ত চিকন একটি মেহগনি গাছের সঙ্গে আটকে রাখেন।


বিজ্ঞাপন


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের লোকজন বলেন, খোকন রায়ের আত্মীয়-স্বজন আটকের কারণ জানতে চাইলে এসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তার কাছে ১০০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট পাওয়া গেছে। কিন্তু ট্যাবলেট দেখাতে না পারলে গ্রামবাসী পুলিশের ওপর চড়াও হন।

এসময় পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এএসআই ইউছুফ ও কনস্টেবল শাহাদৎ মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান। পরে গ্রামের লোকজন এসআই জাহাঙ্গীরকে গণপিটুনি দিয়ে গাছ কেটে হ্যান্ডকাপসহ খোকনকে ছিনিয়ে নেন। খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ পৌঁছে এসআই জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।

এদিকে মঙ্গলবার (৬ জুন) সকালে মড়িয়া হিন্দুপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে খোকন রায়ে বাড়িতে কেউ নেই। তারা ঘটনার পরপরই আত্মগোপন করেছেন। গ্রামের লোকজন বলেন, এর আগেও পুলিশ খোকনকে ধরে টাকা দাবি করে। টাকা দেওয়ার পরেও তাকে ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট দিয়ে মামলা দেয়।

তারা বলেন, মহিষাবান ইউনিয়নের বিট পুলিশিং অফিসার সুজল দেবনাথ। আমরা তাকে চিনি। বিভিন্ন সময় তিনি গ্রামে আসেন। সোমবার যারা এসেছিলেন তাদেরকে আগে কখনও এই গ্রামে দেখা যায়নি। সুজল দেবনাথ সঙ্গে না আসায় আমাদের সন্দেহ হয়। এ কারণে আমরা খোকনকে ছিনিয়ে নিয়েছি।

খোকন রায়ের নিকটাত্মীয় পরিমল রায় বলেন, আমাদের জানামতে খোকন ওষুধের ব্যবসা করেন। সোমবার পুলিশ তার কাছে কিছুই পায়নি। তারপরেও হ্যান্ডকাপ দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। একারণে লোকজন ক্ষুদ্ধ হয়ে ছিনিয়ে নেয়।

এসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, খোকন রায়কে আটকের পর তার কোমরে লুঙ্গির প্যাচে ১০০ পিস ট্যাপেন্ডাটল ট্যাবলেট পাওয়া যায়। তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামের লোকজন হামলা করে খোকনকে ছিনিয়ে নেন। থানার ওসিকে না জানিয়ে মাদক উদ্ধার অভিযানে যাওয়া ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি নিরব থাকেন।

গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন সরকার বলেন, খোকন রায়কে আটকের পর ১০০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট পাওয়া গেছে। তবে এসআই জাহাঙ্গীর মাদক উদ্ধারে অন্য বিটে যাওয়ার বিষয়টি আমাকে কিংবা থানার ডিউটি অফিসারকে জানায়নি।

ওসি বলেন, ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে রাত দুইটার দিকে গ্রামের জঙ্গল থেকে খোকনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ১০০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার দেখিয়ে খোকন রায়ের নামে মাদক আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে। তবে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন