কুমিল্লার তিতাসে ছেলের নির্যাতন সইতে না পেরে বৃদ্ধ বাবা শহিদউল্লা ক্বারী (৭৫) থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। শনিবার (২২ অক্টোবর) সকালে উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শহিদউল্লা ক্বারীর দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছেন। তাদের মধ্যে বড় ছেলে নেয়ামত উল্লাহ (৪৫) ৮-১০ বছর আগে জমি বিক্রি করে প্রবাসে পাঠান তিনি। পরে নেয়ামত উল্লাহ স্ত্রী হ্যাপি আক্তারের (৩৮) পরামর্শে তাকে এবং তার স্ত্রী বৃদ্ধা রোকেয়া বেগমকে (৭০) ভরণপোষণ বন্ধ করে দেয় এবং কুমিল্লা শহরে জায়গা কিনে বাড়ি করেন।
বিজ্ঞাপন
অপরদিকে, তার তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তারা সকলে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। অপর ছোট ছেলে রবিউল (৩৫) চাকরির সুবাদে অন্য জায়গায় থাকেন। তিনি বাবা-মায়ের ভরণপোষণের জন্য কিছু টাকা দেয়। যা দিয়ে তাদের জীবনযাপন ঠিকভাবে চলছে না।
এ বিষয়ে বৃদ্ধ শহিদউল্লাহ বলেন, ‘আমার দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। আমার বড় ছেলে নেয়ামত উল্লাহ অনেক বছর ধরে আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে কোনো প্রকার ভরণপোষণ দেয় না। আমি বিষয়টি গ্রামের সাহেব সর্দারদের জানালে তারা বিচার সালিস বসিয়ে রায় দেন। রায় অনুযায়ী আমার ও আমার স্ত্রীর ভরণপোষণের জন্য প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে দেবে বলে জানানো হয়। কিন্তু এরপরও আমাদের টাকা দেয় না।’
শহিদউল্লাহ আরও বলেন, ‘আমি আমার বৃদ্ধা স্ত্রীকে নিয়ে বাঁচার জন্য এক মাস আগে ২৪ শতক জমি বিক্রি করেছি। এতে বড় ছেলে নেয়ামত উল্লাহ ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে ঘর থেকে বের করে দেন। আমি তার ভয়ে বাড়িত যাইতে পারি না। তাই আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমির এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
কদমতলী গ্রামের সর্দার পল্লিচিকিৎসক হুমায়ূন কবির বলেন, ‘আমরা গ্রামবাসী বসে আলোচনা করে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়ার জন্য বলে দিয়েছি। তারপরও নেয়ামত উল্লাহ কথা মানেন না। শুধু তাই নয়, শহিদউল্লা ক্বারী তার বৃদ্ধা স্ত্রীকে নিয়ে বাঁচার জন্য ২৪ শতক জমি বিক্রি করছেন। এতে নেয়ামত উল্লাহ তার বৃদ্ধ বাবা-মাকে লাঞ্ছিত করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন।’
বিজ্ঞাপন
পল্লী চিকিৎসক আরও বলেন, বৃদ্ধর ছোট ছেলে বাবা-মার জন্য পাঁচ হাজার টাকা করে দেয়। কিন্তু তা দিয়ে হয় না বিধায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এ বিষয়ে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, ছেলের বিরুদ্ধে বাবার অভিযোগ পেয়েছি। উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) জামানকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রতিনিধি/এইচই