রোববার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

মির্জাগঞ্জে প্রকৌশল ফি নিয়ে জনস্বাস্থ্য দফতরের নয় ছয়

জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী
প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০২:০৮ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

রাজস্ব খাতে প্রকৌশল সেবা জমা নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ জনস্বার্থ দফতরের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৭৩টি নলকূপ বরাদ্দ পায় উপজেলা পরিষদ। নলকূপ প্রতি ৮৪ হাজার টাকা ব্যয়ে নলকূপ স্থাপনের কাজ করেন ঠিকাদার হাসন সেলিম খান।


বিজ্ঞাপন


নিয়ম অনুসারে সরকারি নলকূপ স্থাপনের পূর্বে নলকূপপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রকৌশল সেবা বাবদ সরকারি খাতে ৭ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। কিন্তু প্রায় ২ বছর আগে এসব নলকূপ স্থাপন করলেও প্রকৌশল সেবা ফি জমা দেওয়া হয় ২০২৪ সালের চলতি মাসে।

এসব অনিয়মের তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থার জন্য গত ২৩ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন অপসারণকৃত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিসেস হাচিনা বেগম।

আরও পড়ুন

নোয়াখালীতে ছেলের অপরাধে মাকে প্রকাশ্যে লাঠিপেটা

অভিযোগে জানা যায়, বরাদ্দ করা নলকূপগুলো উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের তালিকা অনুসারে বিভিন্ন বাড়িতে এবং প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়। কিন্তু প্রায় ২ বছর পরে সেই সমস্ত স্থাপন করা নলকূপগুলোর প্রৌকশল ফি চলতি মাসে ব্যাংকে জমা প্রদান করেন সুবিধাভুগীরা।


বিজ্ঞাপন


হাচিনা বেগম বলেন, এসব কিছু হয়েছে সদ্য অপসারণ করা উপজেলা চেয়ারম্যান খান মো. আবু বকর সিদ্দিকীর গাফিলতি ও খামখেয়ালির জন্য। নলকূপ বরাদ্দের বিষয়ে গত ২০২২ ও ২৩ সালে একাধিকবার উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসা হয়। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানেদের সঙ্গে ভাগবাটোয়ারায় না মিললে তিনি রেজুলেশনে স্বাক্ষর করে না। কিন্তু উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম স্থগিত করার পরে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জনস্বাস্থ্য দফতরের ২০২২-২৩ অর্থ বছরের এমপির বরাদ্দের গভীর নলকূপ উপজেলা পরিষদের সি.এ মো. জাহাঙ্গীর আলমকে ঢাকা পাঠিয়ে অপসারণ উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ফাঁকা তারিখে স্বাক্ষর করিয়ে প্রকল্প জমা নিয়া দেখানো হয়। কীভাবে টাকা জমা ছাড়া নলকূপ স্থাপন এবং পেছনের তারিখে রেজুলেশন স্বাক্ষর করানো হলো? এর সঠিক তদন্ত করার দাবি জানাই।

এছাড়াও সরেজমিনে পরিদর্শনে জনস্বাস্থ্য অধিদফতর কতৃক গত ২০২১-২২ অর্থ বছরে প্রায় ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্লাটফর্ম ও পানির ট্যাংকিসহ উপজেলায় ১৮টি গভীর নলকূপ স্থাপনে নিম্ন মানের সামগ্রিক ব্যবহারসহ বিভিন্ন অনিয়মে চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে।

আরও পড়ুন

৮৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৪ শ্রমিকনেতার বিরুদ্ধে মামলা

উপজেলা পরিষদের সি.এ জাহাঙ্গীর বলেন, আমি ঢাকা থেকে কোনো স্বাক্ষর আনিনি। এসব কাগজ আমার দফতরের না। এসব কাগজ থাকে জনস্বাস্থ্য দফতরের।

উপজেলা সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ওই সময় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল। তারা যেভাবে বলছেন তাই মানতে হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান যেভাবে তালিকায় দিয়েছে সেই মতেই ঠিকাদার হাসন সেলিম খান নলকূপ স্থাপন করে। ফি উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে ছিল। তিনি জমা দেয়নি। কিন্তু এখন বিল ছাড়ানোর জন্য ঠিকাদার তার নিজের পকেট থেকে এই মাসে সুবিধাভোগীদের নামে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছে। তবে নিয়ম হলো নলকূপ স্থাপনের পূর্বে এই টাকা জমা দেওয়ার। আমাদের এসব বিষয়ে জড়াবেন না।

IMG-20240930-WA0026

উপজেলা আওয়ামী লীগের বন বিষয়ক সম্পাদক ঠিকাদার হাসান সেলিম খান এবং অপসারণ করা উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক খান মো. আবু বক্কর সিদ্দিকীকে এ বিষয়ে জানার জন্য একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তরিকুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, এগুলো ২০২২-২৩ অর্থ বছরের কাজ। অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হবে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন