ভ্যানে লাশের স্তুপের একটা ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। গা শিউরে উঠা ভিডিওটি ছিল ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কয়েকজন ব্যক্তির।
ভিডিওতে দেখা যায়, একটা ভ্যানের মধ্যে বস্তার মতো লাশের ওপরে লাশ রাখছে পুলিশ। একজন হাত ধরছেন, অপরজন পা। এরপর লাশের ওপর ছুড়ে মারছেন। পুলিশের এমন নিষ্ঠুর আচরণে হতভাগ হয়েছে দেশবাসী। পরে ভিডিওতে দেখা যাওয়া দেয়ালে সাটানো একটি পোস্টার দেখে ভিডিওটির ঘটনাস্থল ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়া থানার সামনে বলে জানা যায়।
বিজ্ঞাপন
এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে এঘটনায় নিহত আস-সাবুর নামে এক তরুণের মা রাহেন জান্নাত ফেরদৌস দাবি করেন এই মরদেহগুলোই পরে একটি পিকআপে তুলে আগুন দেওয়া হয়।
রাহেন জান্নাত ফেরদৌস বলেন, গত ৫ আগস্ট আআন্দোলনকারীরা আশুলিয়া থানায় হামলা চালায়।
এসময় পুলিশ তাদের উপর গুলি ছুড়লে কয়েকজন আন্দোলনকারী মারা যায়। পরদিন ৬ আগস্ট সকালে আশুলিয়া থানার সামনে একটি পিকআপে পুড়ে যাওয়া কয়েকজনের লাশের খোঁজ মেলে। আমার ছেলের পুড়ে যাওয়া লাশ ওই পিকআপেই পেয়েছি। আজ ধারণা করছি ভাইরাল হওয়া ভিডিওর লাশ গুলো গুম করার জন্য ওই পিকআপে ভরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ইমন নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান বলেন, সেদিন বিকেল ৪টার দিকে আন্দোলনকারীরা থানার সামনের গলিতে প্রবেশ করলে পুলিশ তাদের ওপর এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে। এ সময় বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হলে পুলিশ তাদের থানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে একটি পুলিশ ভ্যানে লাশগুলো রেখে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আন্দোলনকারীরা পুলিশের গুলির মুখে পিছু হটে সেসময় থানার সামনে কোনো আন্দোলনকারী ছিল না। ওই পিকআপে পুলিশই আগুন লাগিয়েছে। পরে পুলিশকে সেনাবাহিনী সেনানিবাসে নিয়ে গেলে আন্দোলনকারীরা থানায় প্রবেশ করে হামলা চালায়।
বিজ্ঞাপন
আশুলিয়া থানা সংলগ্ন বাইপাইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোফাজ্জল হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৫ আগস্ট দুপুরের পর থেকে তারা মসজিদে আসেননি। তবে পরদিন সকালে পুড়ে যাওয়া ছয়টি মরদেহের জানাজা পড়ানো হয় সেখানে।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে সেসময়ের আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) (সদ্য বদলিকৃত) এএফএম সায়েদের সাথে মোবাইলফোন যোগাযোগের চেষ্টা করে তার ফোনফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আজ সকালে আমি ভিডিওটি দেখেছি। এটি অ্যানালাইসিস করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করছি।
প্রতিনিধি/একেবি