রোববার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট, দুর্ভোগ চরমে

অহিদুজ্জামান, পিরোজপুর
প্রকাশিত: ০৬ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৬ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সংকট ও ভর্তি রোগীর বেডের অভাবে চিকিৎসা সেবায় বিঘ্ন ঘটছে। উপজেলার প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র চিকিৎসার ভরসাস্থল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। অস্থায়ী ভবনে বর্তমানে চিকিৎসা সেবা চলছে। পুরাতন ভবন ভেঙে পড়ার পর, ভবনটি একের পর এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের জটিলতার কারণে দীর্ঘ ১৬ বছরেও নতুন ভবনের কাজ না হওয়ায় বর্তমানে অস্থায়ী ভবনে চিকিৎসা, জরুরি সেবা, ভর্তি রোগী ও অফিসিয়াল কার্যক্রম চলছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪ জন মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও আছে মাত্র তিনজন। এই তিনজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে উপজেলার দেড় লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবা দেওয়া মহা অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনজন চিকিৎসকের ভেতরে মাঝে মাঝে দু’একজন চিকিৎসক ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণে যান। তখন মাত্র একজন চিকিৎসক দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম চলে। ইউনিয়ন পর্যায়ে কোনো মেডিকেল অফিসার নেই।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

এক্স-রের ফিল্ম সংকটকে পুঁজি করে নিটোরের ল্যাবে রমরমা বাণিজ্য!

এদিকে কাউখালী হাসপাতালে বর্তমানে কোনো ভবন না থাকায় অস্থায়ী হাসপাতালের ভবনে মাত্র ২০ রোগীর বেডের জায়গা রয়েছে। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় দ্বিগুণ রোগী ভর্তি থাকে। ফলে এক এক সিটে দু’জন, মাঝে মাঝে তিনজন রোগীও থাকে। ফলে রোগীদের দুর্ভোগের কোনো শেষ নেই।

হাসপাতালে ভর্তি রোগী হাফিজা বেগম (৪৫) বলেন, কাউখালীতে মাত্র একটি হাসপাতাল। তার অবস্থা এতই নাজুক যে, একই বেডে দুই জন করে রোগী থাকতে হয়। হাসপাতালে ডাক্তারও নেই। আমি অসুস্থ হইছি। কোথায় চিকিৎসা নিমু কোথায় যামু, গরিব মানুষ তাই আমাগো যাওয়ার জায়গাও নাই। বাধ্য হইয়া এখানেই থাকতে হইতাছে।

আরও পড়ুন

নবজাতক শিশুকে হাসপাতালে রেখে অভিভাবক উধাও

কাউখালীতে জরুরি সেবায় চিকিৎসা নিতে আসা সদর ইউনিয়নের মজিবর রহমান জানান, হাসপাতালের অবস্থা এতই করুণ যে ডাক্তার নাই। তার পরে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় দুই রুমের ভেতরে প্রতিদিন শত শত রোগীকে একজন, মাঝে মাঝে দু’জন ডাক্তার চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে চিকিৎসা নিতে ডাক্তারদেরও কষ্ট হচ্ছে। রোগীদেরও কষ্ট হচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ডাক্তার সংকট ও কাউখালীর হাসপাতালের এই করুণ অবস্থা থেকে আমরা মুক্তি চাই।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফারজানা মুনমুন বলেন, অস্থায়ী ভবনে আমরা বর্তমানে রোগীদের চিকিৎসা সেবার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যখন রোগী বেশি হয় তখন এক বেডে একাধিক রোগীদের থাকতে দিতে হয়।

আরও পড়ুন

৫০ কেজি ওজনের রোগীর পেটে ১২ কেজি টিউমার

জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার সুজন সাহা বলেন, অস্থায়ী ভবনে ঝুঁকির ভেতরে আমরা চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে। ডাক্তার সংকট থাকার কারণে চিকিৎসা সেবায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। রোগীদের সিটের অভাবে অনেক সময় একই বেডে একাধিক রোগী থাকতে বাধ্য হচ্ছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য রোগীদের বেড বাড়ানোর জন্য নিজস্ব অর্থায়নে একটি টিনসেট বিল্ডিংয়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন।

জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মিজানুর রহমান বলেন, কাউখালীতে ডাক্তার সংকট রয়েছে। বিষয়টা আমি অবগত আছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন