আগামী শুক্রবার শুভ বিল্ব ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এ মুহূর্তে দেশের অন্যান্য মণ্ডপগুলোতে যখন চলছে প্রতিমা তৈরি শেষ মুহূর্তের কাজ। ঠিক সেই সময় শ্রীমঙ্গলের শ্রী শ্রী মঙ্গল চণ্ডির থলির পূজা মণ্ডপে ঢাকের বাদ্যে ও উলুধ্বনিতে মুখরিত। সেখানে এ পূজা মন্ডপে ঢাক-ঢোল, শঙ্খ আর উলুধ্বনির মাধ্যমে শুরু হয়ে গেছে দুর্গাপুজার পূজার্চনা।
সোমবার (১৫ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া এ পূজা শেষ হবে আগামী (২৪ অক্টোবর) বুধবার দেবীর বির্সজনের দিন। পূজা চলবে পুরো ১০ দিন।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়রা জানান, শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও ইউনিয়নের ইছামতি চা বাগানে অবস্থিত শ্রী শ্রী মঙ্গলচণ্ডীর মন্দিরে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দেবী দুর্গার নয়টি রূপে দশ দিনব্যাপী এ নবদুর্গা পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এখানে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে দেবীর পৃথক ৯টি রূপের দুর্গা প্রতিমা।
স্থানীয়রা আরও জানান, পৌরাণিক নিয়ম অনুযায়ী মঙ্গলচন্ডীর থলীতে দেবীদুর্গার নয়টি রূপে নয়দিন ব্যাপী পূজার্চনা চলবে। প্রথম দিনে দেবীকে শৈলপুত্রী রূপে পূজা করা হয়। এভাবে আগামী নবমী তিথি পর্যন্ত ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘন্টা, কুষ্মান্ডা, স্কন্ধমাতা, কাত্যায়নী, কালোরাত্রী, মহাগৌরী ও সিদ্ধিদাত্রী রূপে পূজা করা হবে। আগামী ২৪ অক্টোবর হবে দেবী দুর্গার বিসর্জন।
পূজার প্রধান পুরোহিত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দীপংকর ভট্টাচার্য বলেন, এ নবদুর্গার পূজার্চনায় বয়ে আনবে সকল মানুষ ও জগতের শান্তি। অসুরদের দমন করে দেবীদুর্গা যেভাবে স্বর্গ রাজ্য জয় করেছিলেন ঠিক সেভাবেই তিনি পৃথিবীর বর্তমান অশান্তি দূর করবেন।
পুরোহিত আরও জানান, এ দেবস্থলিটি শ্রীমঙ্গলের সর্বাধিক প্রাচীন স্থাপনা হিসেবে পরিচিত। প্রায় দুই শত বছর ধরে এখানে রয়েছে শ্রী শ্রী মঙ্গলচন্ডী দেবীর থলি।
বিজ্ঞাপন
পূজা দেখতে আসা রুপম আচার্য্য বলেন, সাধারণত দুর্গাপূজা ষষ্টি তিথিতে শুরু হয়ে দশমীতে শেষ হয়। কিন্তু এই পূজা মন্দিরে একটু ব্যতিক্রম আয়োজন। এখানে ৯ দিনব্যাপী পূজা হয়। একটু আগে ভাগেই পূজা শুরু হওয়ায় আমরা দেখতে আসছি। সারাদেশে এখনো পূজা শুরু হয়নি। এখানে দুর্গাপূজা শুরু হয়ে গেছে। আমরা পরিবারের লোকজন পূজা দেখতে চলে এসেছি। মায়ের কাছে প্রার্থনা করছি আমরা যেন সবাইকে নিয়ে ভালো থাকি।
নবরুপে নবদূর্গা পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা ঝিনুক বৈদ্য বলেন, এই মন্দিরটি এ অঞ্চলের অনেক প্রাচীন মন্দির। এবছর আমাদের ১৩ তম আয়োজন। এই নবদুর্গা পূজা দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসেন। আগামী ২৪শে অক্টোবর সারাদেশের পূজার সাথে মিল রেখে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পূজার সমাপ্তি হবে।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, শ্রীমঙ্গলের প্রত্যেকটি পূজামণ্ডপে একজন করে এসআই, সাদা পোশাকে পুলিশ ও আনসার সদস্য সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিনিধি/ এজে