নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ৬৪নং কার্তিকাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ে আগত সকল শিক্ষার্থীদের সিঁড়িতে স্যান্ডেল-জুতা খুলে শ্রেণি কক্ষে গিয়ে পাঠগ্রহণ করতে হয় আর পুরো বিদ্যালয় জুড়ে শিক্ষকরা পায়ে জুতা পড়ে চলাফেরা করেন। একই স্থানে দুই নিয়ম চলে আসছে বহু বছর ধরে। শিক্ষার্থীদের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে শিক্ষা দানের জন্যই এমন নিয়ম চালু করেছেন প্রধান শিক্ষক রেজাউন নবী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় ভবনে ওঠার সিঁড়িতে শিক্ষার্থীরা স্যান্ডেল-জুতা খুলে রেখে যার যার শ্রেণিকক্ষে গিয়ে পাঠগ্রহণ করছে। বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে চলাফেরা এমন কি টয়লেটেও খালি পায়ে যেতে হচ্ছে। আর শিক্ষকরা পায়ে জুতা পড়ে শ্রেণি কক্ষে গিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন। বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের অফিস কক্ষে, টয়লেটে যাতায়াতসহ সকল কাজে শিক্ষকরা পায়ে জুতা পড়ে চলাফেরা করছেন। অথচ কোন কারণে শিক্ষার্থীরা বাহিরে গেলে বিদ্যালয়ের নিচে সিঁড়িতে রাখা স্যান্ডেল কিংবা জুতা পায়ে দিয়ে যেতে হচ্ছে আবার বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যাওয়ার সময় ওই সিঁড়িতে স্যান্ডেল-জুতা খুলে রেখে যেতে হচ্ছে। একই স্থানে শিক্ষার্থীদের জন্য এক নিয়ম আর শিক্ষকদের জন্য আরেক নিয়ম চালু করা হয়েছে শ্রেণিকক্ষ ও বিদ্যালয়ের অভ্যন্তর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য এমনটাই জানান ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
জামাল হোসেন ও কাজল হোসেন নামের স্থানীয় দুই অভিভাবক বলেন, প্রধান শিক্ষকের এমন নিয়ম খুবই দুঃখজনক। আমরা বেশ কয়েকবার বলেছি কিন্তু তিনি এমন আচরণ করেই যাচ্ছেন বাচ্চাদের সাথে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউন নবী বলেন, ছোট শিশুরা পায়ে স্যান্ডেল-জুতা পড়ে শ্রেণি কক্ষে এলে কক্ষগুলো নোংরা হয়ে যায়। আর বাচ্চাদের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এবং ছোট বেলা থেকেই পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে জ্ঞান আহরোনের জন্যই মূলত এমন নিয়ম চালু করেছি। আর আমরা শিক্ষকরা যেহেতু বড় তাই আমরা খালি পায়ে না চলাফেরা করে পায়ে জুতা পড়ে চলাফেরা করছি।
একই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আর শিক্ষকদের জন্য আলাদা নিয়ম কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদ্যালয় অপরিস্কার হলে তা পরিস্কার করা খুবই কঠিন। আর শিক্ষার্থীদের হাতেও শ্রেণি কক্ষগুলো ঝাড়ু দিয়ে পরিস্কার করে নেওয়া সম্ভব নয় বলে এমন নিয়ম করা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইউসুফ মো. সিদ্দিক রেজা মুঠোফোনে বলেন, একই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা খালি পায়ে চলাফেরা করবে আর শিক্ষকরা জুতা পায়ে চলাফেরা করবে এমন হতে পারে না। বিষয়টি খুবই দৃষ্টিকটুর দেখায়। আমি দ্রæত বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
প্রতিনিধি/ এজে