বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ায় চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। সেই সঙ্গে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে আবহাওয়া অধিদফতরের ১১ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুনের অবস্থান উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তরপূর্ব এলাকায় (২০.২ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৬ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ)। এটি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৫০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২১৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আবহাওয়াবিদ খোন্দকার হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুন আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শেষরাত থেকে বুধবার (২৫ অক্টোবর) সকাল নাগাদ মেঘনা মোহনার নিকট দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে অতিক্রম করতে পারে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিলিমিটার বা তার বেশি) বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।
বর্তমানে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রর নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ অবস্থায় রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। পাশাপাশি উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৫ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
এছাড়াও অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
/আইএইচ