ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে ‘ঈদ মোবারক’ বলার রেওয়াজ রয়েছে আমাদের সমাজে। অথচ আমরা জানি, ঈদের সময় একে অপরকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য ইসলাম দোয়ার শিক্ষা দেয়। তাই ঈদ মোবারক বলা শরিয়তসম্মত কি না জানতে চান অনেকে।
এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, ‘ঈদ মোবারক’ একটি দোয়া বাক্য (বাংলা ভাষায়)। ঈদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করার জন্য তা বলতে অসুবিধা নেই। বড় বড় আলেমগণ এ বিষয় নিয়ে কোনো আপত্তি করেননি। তাই এটিকে বিদআত বলা যাবে না।
বিজ্ঞাপন
তবে এটিকে সুন্নতও মনে করা যাবে না। কারণ কোনো বর্ণনায় এভাবে বলার কথা পাওয়া যায় না। হাদিসের কিতাবসমূহে বর্ণিত হয়েছে, সাহাবায়ে কেরাম ঈদের দিন একে অপরকে تَقَبّلَ اللهُ مِنّا وَمِنْك উচ্চারণ: ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়ামিনকা।’ অর্থ: ‘আল্লাহ আমাদের এবং তোমার নেক আমল কবুল করুন’ বলতেন। (তবারানি: ৯২৮; ফাতহুল বারি, ইবনে হাজার: ২/৫১৭)
এক হাদিসে এসেছে, ওয়াসিলা (রা.) বলেন, আমি রাসুল (স.)-এর সঙ্গে ঈদের দিন সাক্ষাৎ করলাম। আমি বললাম, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা’। মহানবী (স.) বললেন, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা।’ (বায়হাকি: ৩/৪৪৬)
আরও পড়ুন: নতুন টাকা বেচাকেনা, ইসলাম কী বলে
তাই ঈদের দিন একে অপরকে উক্ত দোয়াটি বলা এবং এর প্রচলন করাই উত্তম হবে। কারণ সুন্নত অনুযায়ী দোয়া পড়াই সকল ক্ষেত্রে সর্বোত্তম ও সওয়াবের আমল। (হালবাতুল মুজাল্লি: ২/৫৫১; হাশিয়াতুত তাহতাবি আলাল মারাবি: ২৮৯ পৃ; আলবাহরুর রায়েক: ২/১৫৮; আলমুগনি, ইবনে কুদামা: ৩/২৯৪)
বিজ্ঞাপন
দোয়া ছাড়াও ঈদের দিন সালাম ও মুসাফাহা করা ইসলামি শিষ্টাচারের অনুষঙ্গ। মুসাফাহার নিয়ম হলো- দুই হাতে করা। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, (মুসাফাহার সময়) আমার হাতটি রাসুলুল্লাহ (স.)-এর দুই হাতের মধ্যে ছিল। (বুখারি: ৫/২৩১১) মুসাফাহার ফজিলত সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, যদি দুজন মুসলিম সাক্ষাৎ করে পরস্পর মুসাফাহা করে, তাহলে তারা (ওই স্থান থেকে) পৃথক হওয়ার আগেই তাদের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (তিরমিজি: ৫/৭৪; ইবনে মাজাহ: ২/১২২০)
মুসাফাহার সময় এ দোয়া পড়বে— ‘ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়া লাকুম।’ অর্থ: ‘আল্লাহ আমাকে ও আপনাকে ক্ষমা করুন।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৫১৬৯) আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঈদের দিনের শুভেচ্ছা বিনিময়সহ যাবতীয় আমল সুন্নত অনুযায়ী করার তাওফিক দান করুন। আমিন।