গরমকালে যে সমস্যাগুলো সবচেয়ে বেশি দেখা যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো গায়ের দুর্গন্ধ। বেশিক্ষণ বাইরে থাকলেই এই সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। গায়ে ঘামের গন্ধ হয়ে যেমন অস্বস্তি হয়, তেমনি পড়তে হয় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে।
ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে ভরসা রাখতে পারেন। কীভাবে বিরক্তিকর এই গন্ধ থেকে মুক্তি পাবেন জানুন তার উপায়-
বিজ্ঞাপন
বেকিং সোডা বা সাইট্রাস রস
ঘামের গন্ধ কমাতে সাহায্য করে বেকিং সোডা বা সাইট্রাস রস। শরীরের যেসব অংশে ঘাম বেশি হয় সেসব অংশে বেকিং সোডা বা সাইট্রাস রস (যেমন লেবুর রস) মেখে রাখুন কিছুটা সময়। এটি ঘাম শোষণ করতে সাহায্য করবে এবং দুর্গন্ধ দূর করবে। সাইট্রাস রসের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ঘাম কমাতে সাহায্য করে।
টি ট্রি অয়েল
বিজ্ঞাপন
অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল গুণাগুণে পূর্ণ একটি উপাদান টি ট্রি অয়েল। এটি ঘামের গন্ধ কমাতে সাহায্য করে। কয়েক ফোঁটা তেল গায়ে মেখে রাখতে পারেন। এতে দুর্গন্ধ কমবে। চাইলে গোসলের পানিতেও কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মেশাতে পারেন।
নারকেল তেল
অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান রয়েছে নারকেল তেলে। ঘামের গন্ধ কমানোর পাশাপাশি এটি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে। গোসলের পর নারকেল তেল ব্যবহার করলে ত্বক সতেজ এবং পরিষ্কার থাকে। তবে গরমের কথা ভেবে অনেকেই তেলের থেকে দূরে থাকেন। সে ক্ষত্রে নির্দিষ্ট কিছু অংশে কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল মেখে নিতে পারেন।
অ্যালোভেরা জেল
ত্বক ঠান্ডা ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে অ্যালোভেরা জেল। এটি ঘামের গন্ধও কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। ত্বকে সরাসরি অ্যালোভেরা জেল লাগাতে পারেন। চাইলে গোসলের পর শরীরের কয়েকটি অংশে এই জেল লাগাতে পারেন।
কাঠবাদামের তেল ও গোলাপজল
কাঠবাদাম ও গোলাপজল মিশিয়ে গায়ে লাগালে ত্বক নরম হয় এবং ঘামের গন্ধও কমে। গোলাপজল ত্বককে শীতল করে এবং পিএইচ-এর ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ঘামের দুর্গন্ধ দূর করার আরও কিছু উপায়
সঠিক সাবান ব্যবহার
গ্রীষ্মকালে সাবান ও শ্যাম্পু নির্বাচনে সতর্ক থাকতে হবে। অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার করুন যা ত্বকের অপ্রয়োজনীয় ব্যাকটেরিয়া ও ময়লা পরিষ্কার করতে সক্ষম।
হালকা পোশাক পরিধান
গ্রীষ্মে কখনোই আঁটসাঁট পোশাক পরা উচিত নয়। একই পোশাক একটানা কয়েক দিন পরে থাকলে ঘামের গন্ধ বেড়ে যায়। যতটা সম্ভব সুতির ও হালকা পোশাক পরুন। সময়মতো জামা বদলে ফেলুন।
শীতল খাবার ও পর্যাপ্ত পানি পান
গ্রীষ্মে ত্বক সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পানের বিকল্প নেই। সবুজ শাকসবজি, ফলমূল ও শীতল পানীয়ের ওপর নির্ভরশীল খাদ্যাভ্যাসের রুটিন মেনে চলুন। এতে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, ঘামের সমস্যাও কমে।
শরীরের লোম অপসারণ
হাত, পা, বাহুমূলের লোম ছেঁটে ফেললে দুর্গন্ধের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শরীরে যেসব অংশে ঘাম বেশি হয়, সেসব জায়গায় লোম বেশি থাকলে, ঘাম শুকতে পারে না। তা থেকেই সৃষ্টি হয় ঘামের দুর্গন্ধ।
এসব উপায় কাজে লাগালে গ্রীষ্মে অতিরিক্ত ঘামের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এতে নিজের শরীর-স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে, আশপাশের মানুষেরও কোনো অসুবিধা হবে না।
এনএম