শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

বিএসএমএমইউকে গ্লকোমা চিকিৎসায় রোল মডেল হতে হবে: ভিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১ মার্চ ২০২৫, ০২:২০ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

নানা আয়োজনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বিশ্ব গ্লকোমা সপ্তাহ ২০২৫ (৯-১৫ মার্চ) শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিশ্ব গ্লকোমা সপ্তাহ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ব্লক থেকে একটি র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। র‌্যালিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম।


বিজ্ঞাপন


এবারে বিশ্ব গ্লকোমা সপ্তাহের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে “এক সাথে হাত ধরি, গ্লকোমা মুক্ত বিশ্ব গড়ি”।  

র‌্যালিতে অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, গ্লকোমা প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। শুরুতেই এই রোগ চিহ্নিত করা গেলে চিকিৎসার মাধ্যমে রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। সচেতনতার মাধ্যমে রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। বিএসএমএমইউতে গ্লকোমা রোগের চিকিৎসার জন্য গ্লকোমা ক্লিনিক রয়েছে।

তিনি বলেন, এখানে চোখের রোগসমূহের সর্বাধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে চক্ষু বিজ্ঞান বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা, উন্নত চিকিৎসাসেবা ও গবেষণার ব্যবস্থা। এখানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খ্যাতনামা ফ্যাকাল্টিবৃন্দ রয়েছেন। তাই বিএসএমএমইউকে এখন চোখের নীরব ঘাতক গ্লকোমা চিকিৎসায় রোল মডেল হতে হবে। চোখের চিকিৎসায় এভিডেন্স বেইসড মেডিসিনকে গুরুত্ব দিতে হবে, গাইডলাইন ফলো করে চিকিৎসাসেবা প্রদান করতে হবে।

বিএসএমএমইউর চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগ ও কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এ আয়োজনে বিএসএমএমইউর প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দীন, চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আব্দুল ওয়াদুদ প্রমুখ।


বিজ্ঞাপন


এসময় বক্তারা বলেন, গ্লকোমা চোখের এমন একটি রোগ, যাতে চোখের চাপ বেড়ে গিয়ে, চোখের পেছনের আয়ু অকার্যকর হয়ে ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টি চলে যায়। গ্লকোমা হল বাংলাদেশ তথা পৃথিবীতে অনিবারণযোগ্য অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। এই রোগ যে কোন বয়সে এ রোগ পারে। জন্মের সময় বেশ বড় চোখ এবং চোখের চাপ নিয়ে জন্মালে, একে কনজেনিটাল গ্লকোমা বলে। তরুণ বয়সেও হতে পারে, একে বলে জুভেনাইল গ্লকোমা। বেশীর ভাগ গ্লকোমা রোগ ৪০ বছরের পরে হয়। এদের প্রাথমিক গ্লকোমা বলে।

এছাড়াও পারিবারিকভাবে যাদের এ রোগ আছে, যারা মাইনাস পাওয়ার চশমা পড়েন, যাদে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাদের মধ্যে এ রোগ হবার সম্ভাবনা বেশী থাকে। বেশী বয়সজনিত চোখের গঠনে পরিবর্তন, জন্মগত গঠনের ক্রটি, আঘাত, চোখ লাল হওয়া, ডায়াবেটিসজনিত চোখের রক্তহীনতা, অনিয়ন্ত্রিত স্টেরই বা হরমোন থেরাপি, ছানি পেকে যাওয়া ইত্যাদি কারণে গ্লকোমা হতে পারে। 

বক্তারা জানান, প্রাইমারি গ্লকোমা সাধারণত ২ চোখে হয় এবং যে কোন বয়সে হতে পারে। এর কারণ হল চোখের গঠনগত পরিবর্তন। আর একটি হল সেকেন্ডারী গ্লকোমা এটা সাধারণত এক চোখে হয়। আঘাতজনিত কারণে এবং ঘন ঘন চোখ লাল বা প্রদাহ জনিত কারণে এই রোগ হতে পারে। এই রোগের উপসর্গের মধ্যে বিভিন্ন প্রকারের উপসর্গ নিয়ে রোগীরা ডাক্তারের কাছে আসতে পারে। হঠাৎ করে এক চোখে প্রচন্ড ব্যাথা হয়ে দৃষ্টি শক্তি কমে যাওয়া, তার সাথে প্রচন্ড মাথা ব্যাথা ও বমি বমি ভাব হতে পারে। আবার সব সময় হালকা চোখে এবং মাথা ব্যাথা (বিশেষ করে কম আলোতে) এবং আস্তে আস্তে দৃষ্টি শক্তি কমে যেতে পারে। অন্যদিকে ব্যথাবিহীন উভয় চোখের দৃষ্টি শক্তি ধীরে ধীরে কমে যাওয়া এবং চশমার পাওয়ার পরিবর্তন নিয়েও রোগীরা ডাক্তারের কাছে আসে। মাঝে মাঝে দৃষ্টি সীমানার যে কোন এক পাশে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া, ছানি পেকে চোখে লাল হওয়া ইত্যাদিও এ রোগের উপসর্গ হতে পারে। জন্মগত বড় চোখ, চোখ হতে পানি পড়া এবং আলোতে চোখ বন্ধ করে ফেলা জন্মগত গ্লকোমা লক্ষণ হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, রোগীর ইতিহাস এবং বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে গ্লকোমা রোগ নির্ণয় সম্ভব। এর মধ্যে দৃষ্টি শক্তি পরীক্ষা (ভিসুয়াল একুইটি), চোখের চাপ পরীক্ষা (ইন্ট্রাঅকুলার প্রেসার), গনিয়াস কপী বা চোখের কোণা পরীক্ষা এবং অফথালমোসকপি বা চোখের স্নায়ু পরীক্ষা বেশী গুরুত্ব বহন করে। স্বাভাবিক চোখের চাপ সাধারণ (১০-২১) মি.মি. মার্কারি। অস্বাভাবিক চোখের চাপ থাকলে সমস্ত পরীক্ষার মাধ্যমে গ্লকোমা শনাক্ত করে তাড়িৎ চিকিৎসা বাঞ্চনীয়।

এসএইচ/ইএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর