রোববার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

রিটকে কেন্দ্র করে চিকিৎসকরা আদালতের উপর চাপ প্রয়োগ করছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১ মার্চ ২০২৫, ০৪:০৮ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার সংক্রান্ত রিটের রায়কে কেন্দ্র করে নানা ধরনের কর্মসূচি ও শাটডাউনের মাধ্যমে দেশের আদালতের ওপর এমবিবিএস চিকিৎসকরা অন্যায়ভাবে চাপ প্রয়োগ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ডিপ্লোমা চিকিৎসকরা।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলামা আকরাম খাঁ হলে সকল ডিপ্লোমা (ডিএমএফ) চিকিৎসক ও ডিপ্লোমা মেডিকেল (ম্যাটস) শিক্ষার্থীদের আয়োজিত ‘স্বাস্থ্যখাতকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা, আদালত অবমাননা, বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করার অপতৎপরতার প্রতিবাদ এবং ৪ দফা দাবি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ করেন।


বিজ্ঞাপন


তাদের দাবি, আদালতকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে রায়কে নিজেদের পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনটা করা হলে ডিএমএফ ও ম্যাটস শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর জবাব দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তারা। এমনকি পরবর্তীতে যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

এসময় ডিএমএফ ও ম্যাটস নেতারা বলেন, এমবিবিএস শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের একটা অংশ ডিপ্লোমা কোর্স নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমাদের ৪ বছরের কোর্সকে তারা ৬ মাসের কোর্স বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছে। এমনকি আগামী ১২ মার্চ উচ্চ আদালতের রায়ের আগেই তারা নানা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। সারাবিশ্বে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে সহজ করা হচ্ছে। আর আমাদের এখানে সিন্ডিকেট করা হচ্ছে।

বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন বিডিএফের পক্ষ থেকে বিএমডিসি অ্যাক্ট-২০১০ এর বৈধতা নিয়ে ২০১৩ থেকেই হাইকোর্টে লড়ছে। আদালত এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১২ মার্চ দিন ধার্য করেছেন। কোর্টের চলমান মামলার রায়কে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের কর্মবিরতি, কর্মসূচি, সভা-সমাবেশ একদিকে দেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বিরোধী এবং ফৌজদারি অবমাননা’র সমান।  অন্যদিকে তাদের এসব কর্মসূচি দেশের সাধারণ মানুষের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

স্বাস্থ্যখাতকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা চলছে জানিয়ে তারা বলেন, এমবিবিএস চিকিৎসকরা আমাদের বঞ্চিত করছেন। আমাদের ছেলেরা যখন আন্দোলন করে নিয়োগের জন্য সরকারকে রাজি করালো; তখন তারা সরকারের উপর অনৈতিক চাপ দিয়ে এটা বন্ধ করছেন৷ তারা স্বাস্থ্যখাতকে কুক্ষিগত করতে চায়। তারা কখনও স্বাচিপ, কখনও ড্যাব, কখনও এনডিএফের নামে আমাদের বঞ্চিত করছে। 


বিজ্ঞাপন


ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ ভূঁইয়া বলেন, আমরা চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স ও ছয় মাসের ইন্টার্নি করে চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত আছি। আমরা ছোট পর্যায়ের সার্জারিসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছি। আমরা ১৯৮৭ সালের আইন অনুযায়ী বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন নিয়ে সেবা দিয়ে আসছি। কিন্তু ২০১০ সালে বিএমডিসির দুইটি ধারার মাধ্যমে আমাদের অধিকার হনন করা হয়েছে। আমরা এর বিপক্ষে উচ্চ আদালতে রিট করেছি। রিটের রায় ১২ তারিখ দেবে। কিন্তু এমবিবিএস চিকিৎসকরা লকডাউন, শাটডাউনের ঘোষণা দিয়ে আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।

বঞ্চিত করার অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমাদের ৩০ হাজার ডিপ্লোমা চিকিৎসক বেকার রয়েছেন। অথচ ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে ৫ হাজার পদ খালি রয়েছে। এতে করে তৃণমূল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের বঞ্চিত করে মাত্র ৩ মাস প্রশিক্ষিত এইচএসসি-ডিগ্রি পাস করা ব্যক্তিদের কমিউনিটি হাসপাতালে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে সংবাদ সম্মেলন শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন করেন বিডিএফরা। এসময় তারা চার দফা দাবি জানান। এগুলো হলো:

১. অনতিবিলম্বে শূন্য পদে নিয়োগ এবং কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে নতুন পদ সৃজন করা। 

২. প্রতিষ্ঠান ও কোর্সের নাম পরিবর্তন করে অসংগতিপূর্ণ কোর্স কারিকুলাম সংশোধন করে ইন্টার্নশিপে লগবুক প্রণয়ন করতে হবে। 

৩. বিএমডিএস স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চশিক্ষার অধিকার প্রদান করতে হবে।

৪. প্রস্তাবিত অ্যালাইড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড খসড়া আইনের নাম পরিবর্তন করে ‘মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ নামকরণসহ প্রস্তাবিত ধারায় সংশোধনীসহ বাস্তবায়ন করতে হবে।

এসএইচ/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর