প্রায় দশ দিন ধরে চলা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জাতীয়করণসহ ছয় দফা দাবিতে ১৯ জানুয়ারি থেকে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক ঐক্যজোট ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবিগুলো পর্যায়ক্রমে পূরণ করা হবে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র জানিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগে আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে ইবতেদায়ি মাদরাসার সমস্যা সমাধানের বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা জানানো হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে সরকারি অনুদানভুক্ত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার সংখ্যা এক হাজার ৫১৯টি। এর বাইরেও কয়েক হাজার মাদরাসা রয়েছে। এসব মাদরাসায় প্রাথমিক পাঠক্রম অনুসরণ করা হয়। দাখিল ও আলিম মাদরাসার সঙ্গে সংযুক্ত কয়েক হাজার ইবতেদায়ি মাদরাসা রয়েছে। যেগুলোতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মতো বেতন ভাতা দেওয়া হয়। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলো এদের থেকে পৃথক।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ আমলে তারা দাবি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে গেলে ভর্ৎসনার শিকার হয়েছেন। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী তাদের দাবির কাগজ ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন। রোববার শাহবাগে তারা মিছিল বের করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এখন তারা সরকারের কাছ থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস চান।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র ঢাকা মেইলকে জানিয়েছে, এই আন্দোলনের সঙ্গে আওয়ামী ওলামা লীগের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে। সরকারকে বিব্রত করতেই তারা মাঠে নেমেছে।
সূত্র বলছে, ১৯ জানুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে দেখা করেন। উপদেষ্টা জানান, অবশ্যই তাদের দাবি বিবেচনা করা হবে। সাধ্যমত সমস্যা সমাধানেরও উদ্যোগ নেওয়া হবে। এই স্পষ্ট বক্তব্যের পরও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা সন্দেহজনক।
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তারা দাবি পূরণের আশ্বাস পেলেই কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাবেন।
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, আন্দোলনরত শিক্ষকদের মধ্যে একাধিক গ্রুপ রয়েছে। তারা একেক সময় একেক রকম কথা বলছেন। যে কারণে সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদরাসা ও কারিগরি বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের বিষয়টি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হয়। আমরা মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। অনুদানভুক্ত ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলোকে প্রাথমিকভাবে ‘সবুজপাতা’ প্রকল্পে নেওয়া হচ্ছে। এরপর সেগুলোকে এমপিওভুক্ত করে পর্যায়ক্রমে এগোতে হবে, যা রাতারাতি সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, সম্পূর্ণ সরকারি অর্থানুকূল্যে সমস্যার সমাধানে আমরা কাজ করছি। পরিকল্পনা কমিশনের পরবর্তী বৈঠকে ৬০০ কোটি টাকার বরাদ্দ চাওয়া হবে। এরমধ্যে ইবতেদায়ি মাদরাসার অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সরকার মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নে আন্তরিক।
এজন্য সময় দিতে হবে বলেও জানান তিনি।
এইচজে/ইএ