আমি জীবনে কল্পনাও করিনাই আমাদের পায়ের তলায় মাটি হবে। আমাদেরও পাকা ঘর হবে। আমার সারাজীবন কেটেছে নৌকায়। আমাকে পাকা ঘর দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী।
শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার দারুল আমান ইউনিয়নের কাইলারা আশ্রয়ণ প্রকল্পে গোলাপি বেগম পেয়েছেন পাকা ঘর ও জমি ।
বিজ্ঞাপন
গোলাপী বেগম বলেন, ৩০ বছর আগে স্বামীকে হারিয়ে আমার জীবন অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। আজ শেখ হাসিনা আমাকে পাকা ঘর ও জমি দিয়ে আমার জীবনে আলো ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমার ছেলের জীবনও বদলে দিয়েছেন। আমাদের এখন আর নৌকায় থাকতে হচ্ছে না। কথাগুলো বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন ৯৫ বছর বয়সী গোলাপি বেগম।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতাধীন ঘর ও জমি পেয়েছেন ভূমিহীন ও গৃহহীন শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার সহায় সম্বলহীন নৌকা নিবাসী গোলাপি বেগম।
গোলাপি বেগমের থেকে আরও জানা যায়, তার সারাজীবন কেটেছে মেঘনা নদীর শাখা জয়ন্তী নদীর উপর ভাসমান একটি নৌকায়। রোদ, বৃষ্টি, ঝড়সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও নৌকায় জীবনযাপন করতেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
গোলাপি বেগমের একটি ছেলে সন্তানের রয়েছে। সন্তানের বয়স যখন ৭ বছর তখন স্বামী মারা যান। এরপর থেকে খুব কষ্ট করে ছেলেকে বড় করেছেন। নিজে নদীতে মাছ ধরতেন। সেই মাছ বিক্রি করে কোনোমতে চলতেন। দিন এনে দিন খেয়েছেন। টাকার অভাবে ছেলেকে স্কুলে পড়াতে পারেননি। ছেলেটি বড় হয়ে সংসার জীবন শুরু করলেও সুখের মুখ দেখেনি। ভাগ্যহারা গোলাপি বেগমের মতোই তার ছেলেকে ছেড়ে চলে গেছেন স্ত্রী ও তিন সন্তান। এখন শুধু ছেলেকে নিয়ে গোলাপি বেগমের দুঃখের সংসার।
বয়সের ভারে নূহ্য গোলাপি এখন তেমন একটা চলাফেরা করতে পারেন না। ছেলে নদীতে মাছ ধরে যা রোজগার করে তা দিয়েই তাদের সংসার চলে।
তিনি বলেন, কখনও স্বপ্নেও ভাবেননি যে তার পায়ের তলায় মাটি হবে। তার ভাষ্যমতে সেই আশা পূরণ করেছেন শেখের বেটি।
তিনি আরও বলেন, আমার কাছে আল্লাহর পরে শেখের বেটি। তিনি আমাকে ঘর দিয়েছেন, সঙ্গে দিয়েছেন জমি। তার প্রতি কৃতজ্ঞতার কোনো শেষ নেই। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দুহাত তুলে দোয়া করি। তাকে যেন আল্লাহ সুস্থ রাখেন।
এ বিষয়ে ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিবা খান ঢাকা মেইলকে বলেন, তাদেরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকারি সাহায্য করা হয়। আমরা ঘর দিয়ে তাদের থাকার আশ্রয় করে দিয়েছি। পরবর্তীতেও তাদেরকে সরকার থেকে আসা সাহায্যগুলো দেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/এসএস