শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

পাউবোর জলাধার খননে কৃষকদের বাধা, সংঘর্ষে আহত ২০

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:৫৬ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

নীলফামারীর ডিমলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্পের জলাধার খননে আবারও কৃষকরা বাধা দিয়েছেন।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বুড়িতিস্তা ব্যারেজ এলাকায় কুঠিরডাঙ্গা গ্রামে খননের সময় পাউবো ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।


বিজ্ঞাপন


এসময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়কসহ ২০ জন গুরুতর আহত হয়।

আহতরা হলেন- মমিনুর রহমান খান, লেবু, মহসিন আলী, রাজিব, নাসির হোসেন, জাকির, শ্রী বাবু ও শরিফুল ইসলাম পান্নাসহ আরও অনেকে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কৃষি জমিতে জলাধার খনন নিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরোধ চলে আসছে। এরই জেরে সোমবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে খনন কাজে বাধা দেয় গ্রামবাসী। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা। এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আট জনসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে ডোমার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় চারজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


জমির মালিক ও গ্রামবাসী এজাজুল ইসলাম বলেন, খনন কাজে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু কোনো প্রকার আলোচনা করা হয়নি। ফসলের ক্ষতিপূরণ ও জমি অধিগ্রহণও করা হয়নি। আর কয়েক দিন পরই ভুট্টা কাটা হবে। সেই ভুট্টাখেতসহ বোরোধান, আলু ও বাদাম খেতের ওপর দিয়েই খননকাজ শুরু হয়েছে। তাই এলাকাবাসী বাঁধা দিয়েছে।

জলঢাকা উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুর বলেন, এ এলাকায় দুই উপজেলার কয়েক শত কৃষকের আবাদি জমি, বসতবাড়ি, মসজিদ,স্কুল ও গাছপালা রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে এসব জমিতে চাষাবাদ ও বসবাস করছে। ফসলি জমিতে খাল খনন শুরু করার আগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। এ প্রকল্পে কোনো কিছু না মেনেই ঠিকাদার খাল খনন শুরু করেছে। এতে কৃষকদের উঠতি ফসল নষ্ট হওয়ায় তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।

তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা দরকার। তা নাহলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

এ বিষয়ে নীলফামারী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী কৃষ্ণ কমল সরকার বলেন, যারা সরকারি সম্পত্তি দখল করে আছেন, তারাই বাধা সৃষ্টি করে হামলা চালায়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলমান।

ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লাইছুর রহমান জানান, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ ডিসেম্বর দুপুরে খনন কাজের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসী ও পাউবোর লোকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এতে ৭৯ জনের নাম উল্লেখ করে ৬ শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে একটি মামলা করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন