সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

সিদ্ধিরগঞ্জে বাস ডিপো দখল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৭

জেলা প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৮:০২ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

সিদ্ধিরগঞ্জে আবাসিক এলাকায় নীলাচল বাস ডিপোকে কেন্দ্র করে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ইকবাল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার মধ্যরাতে ২ নম্বর ওয়ার্ডে মৌচাক মুক্তাঝিল আবাসিক এলাকায় সেই বহিষ্কৃত ভিজিটিং কার্ড নেতা থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবুর অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের সাত জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।


বিজ্ঞাপন


শনিবার (১৫ মার্চ) মধ্যরাতে নীলাচল পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় মুক্তাঝিল এলাকার একটি মসজিদের দেয়াল (কার্নিশ) ক্ষতিগ্রস্ত হলে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু ও এলাকাবাসী নীলাচল বাসের কর্তৃপক্ষকে বাস ডিপো সরিয়ে নিতে বললে দুই মাসের মধ্যে ডিপোটি সরিয়ে নিতে সমঝোতা হয়।

ঘটনার সম্পর্কে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব পাপ্পু জানায়, মুক্তাঝিল আবাসিক এলাকার একটি মসজিদের কার্নিশের দেয়াল নীলাচলের বাসের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে এ নিয়ে এলাকাবাসী ও আমরা প্রতিবাদ জানাই এবং তাদেরকে বাস ডিপোটি সরিয়ে নিতে বলি। বাস কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে সমঝোতা করে দুই মাসের সময় নেয়। কিন্তু ইকবাল এই নীলাচল বাস ডিপো থেকে মাসিক ১ লাখ টাকা চাঁদা নিচ্ছে ৭ মাস ধরে। এর আগেও চাঁদা নিয়েছে ইকবালের বিয়াই সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া।

আর এ কারণে বাস ডিপো স্থান পরিবর্তন করা হলে তাদের চাঁদা পাবে না এই শংকায় বিএনপির এই বহিষ্কৃত নেতা ইকবাল বাহিনীর ক্যাডার ইকবালের বোন জামাই নাসিক ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোক্তার হোসেন আর সাংগঠনিক সম্পাদক পলাশের নেতৃত্বে পিস্তলসহ দেশীয় অস্ত্রসহ ৫০/৬০ জন সন্ত্রাসী আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে হতাহত করে।

আরও পড়ুন

চুরির অভিযোগে দুই যুবককে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, দোকান মালিক আটক

এমন ঘটনার পর অনেকেই বলেন, এই আবাসিক এলাকায় এই নীলাচল বাস ডিপো অনেক অ্যাকসিডেন্ট করে মানুষ হত্যা করেছে তাই এলাকাবাসীর নিরাপত্তার জন্য। এই আবাসিক এলাকা থেকে ডিপো স্থানান্তরের জন্য বাধা সৃষ্টি করে আসছে চাঁদাবাজ ইকবাল ও তার বাহিনী। আর এই চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন মনে করে এলাকার মানুষ।

হামলায় ফিরোজ নামে যুবদলের এক নেতাকে কুপিয়ে জখম করা হয় এবং ইসমাইল নামে একজনকে তুলে নিয়ে মারধর করা হয়। বর্তমানে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নীলাচল পরিবহনের কর্মকর্তা আবুল হাশেম বলেন, নীলাচল পরিবহনের গাড়ি চলাচলের সময় মসজিদের লাইট ও কার্নিশ ভেঙে যায়। মিস্ত্রি এনে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করতে গেলে মসজিদ কমিটির সভাপতি মাহমুদ হাসান পাটোয়ারীর সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবুর লোকজন হামলা চালায়। এতে আবুল হাশেম, হাসান মাহমুদ, আবু সিদ্দিক ও বিল্লাল হোসেন আহত হন

তবে এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ বিএনপির বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন জানান, এই ঘটনার আমি কিছুই জানি না। আমার লোকজন কেউ যায়নি। আমি কয়েকদিন অসুস্থ। তবে শুনেছি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা নীলাচল বাসের কর্তৃপক্ষের কাছে মসজিদের ক্ষতিপূরণের নিয়ে আজ বসেছিলো। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারিও হয়েছে। তার সহযোগী মোক্তার ও পলাশের নেতৃত্বে ওই হামলার অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, আমি যতটুকু জানি পলাশ ও মোক্তার যায়নি।

এমন ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম জানান, নীলাচল বাসের ধাক্কায় একটি মসজিদের কার্নিশ ভেঙে যাওয়ায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। কিন্তু দুই গ্রুপের কাউকে আমরা চিহ্নিত করতে পারিনি। এক পক্ষ অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন