রোববার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে নিজ অফিসে পেটালেন এসিল্যান্ড!

জেলা প্রতিনিধি, শরীয়পুর
প্রকাশিত: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৬ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img
ছবি: ঢাকা মেইল

শরীয়তপুরে এক ব্যবসায়ীকে দোকান থেকে তুলে নিয়ে নিজের অফিস কক্ষে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে জেলার ডামুড্যা উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) আবু বকর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ডামুড্যা উপজেলার ধানকাটি ইউনিয়নের মডেরহাট বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী মো. সোলাইমান তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকালে ডামুড্যা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু বকর সিদ্দিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য তার দোকানে যান। এসময় তিনি তার দোকানের লাইসেন্স দেখতে চাইলে সোলাইমান তা দেখাতে না পারায় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করেন। ব্যবসায়ী সোলাইমান এটা নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়ালে এক পর্যায়ে এসিল্যান্ড তাকে গাড়িতে তুলে ডামুড্যা উপজেলায় তার অফিস কক্ষে নিয়ে এসে প্রথমে আনসার দিয়ে পরে তিনি নিজেই বেধড়ক পেটান এবং কান ধরে ওঠবস করান।


বিজ্ঞাপন


এসময় ঘটনাস্থলে থাকা ডামুড্যা পৌর জামায়াতের আমির আতিকুর রহমান কবির, উপজেলা আমির মাওলানা সাইফুল ইসলাম ও নিউনেস ইসলামি একাডেমি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা সাইফুল ইসলামকে এই ঘটনা ভিডিও করতে বলেন।

ব্যবসায়ী সোলাইমান বলেন, আমি অন্যায় করলে আমাকে জেল-জরিমানা করতে পারেন, তিনি তো এতগুলো মানুষের সামনে আমাকে এভাবে পেটাতে পারেন না। তিনি আমাকে পিটিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে আহত করেছেন। আমি এর উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।

এ বিষয়ে ডামুড্যা পৌর জামায়াতের আমির আতিকুর রহমান কবির বলেন, মধ্যবয়সী একজন ব্যবসায়ীকে সামান্য বিষয় নিয়ে এভাবে পেটানো খুবই দুঃখজনক। জনগণের সেবক যদি পেটোয়া হন তাহলে মানুষ তার কাছ থেকে কী ধরনের সেবা পাবে? এর বিচার হওয়া দরকার।

নিউনেস ইসলামি একাডেমির প্রধান শিক্ষক ও হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা সাইফুল ইসলাম বলেন, তিনি প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হয়ে সাধারণ নাগরিককে নির্দয়ভাবে পেটানোর বিষয়টি আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। তাছাড়া আমরা তিনজন সেখানে উপস্থিত ছিলাম, তিনি আমাদের সম্মানের কথা চিন্তা করে হলেও এ জঘন্যতম কাজটি না করলেও পারতেন। এ ঘটনায় আমি তার উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।


বিজ্ঞাপন


ডামুড্যা উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার চল্লিশ বছর বয়সের মধ্যে এমন ঘটনা দেখিনি ও শুনিনি। তিনি প্রকাশ্যে দিবালোকে আমাদের সামনে নির্দয়ভাবে সোলাইমানকে পিটিয়ে আহত করেন। উপজেলার একজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা হয়ে তিনি এ কাজ কীভাবে করলেন তা আমার বুঝে আসে না। আমি এর বিচার দাবি করছি।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে এসিল্যান্ড আবু বকর সিদ্দিক ঢাকা মেইলের কাছে তা অস্বীকার করেন। ধানকাটি ইউনিয়নের মডেরহাট বাজারে যাওয়া এবং এক ব্যবসায়ীকে দুই হাজার টাকা জরিমানার কথা স্বীকার করলেও কোনো ব্যবসায়ীকে পেটানোর কথা অস্বীকার করেন।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ঢাকা মেইলকে বলেন, আপনার মাধ্যমে বিষয়টি অবগত হলাম। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন