নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে কৃষক গ্রুপ তৈরি নিয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুরুতর দুইজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্যরা স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
উপজেলার কৃষ্ণপুর বাজারে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে এগারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় লোকজন ও উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে করা স্থানীয় ‘কৃষক গ্রুপ’ গঠন নিয়ে কৃষ্ণপুর গ্রামের মো. কায়েস মিয়া ও মো. শুক্কুর আলীর লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। প্রতি এলাকায় ৩০জন কৃষককে নিয়ে কৃষক গ্রুপ গঠন করে কৃষি বিভাগ। পরে গ্রুপ ভিত্তিক সরকারি কৃষি সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন তারা। ওই কৃষক গ্রুপে কার কতজন লোক অন্তর্ভুক্ত থাকবে এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রুপ নেয়। গত মঙ্গলবার রাতে কায়েস মিয়া ও শুক্কর আলীর লোকজন কৃষ্ণপুর বাজারে বল্লম ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে শুক্কুর আলীর পায়ে বল্লম দিয়ে আঘাত করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এছাড়া এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন।
তাদের মধ্যে গুরুতর আহত শুক্কুর আলী (৪২) ও নাপিয়া বেগমকে (৩৫) মমেক হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া হাসাইন(১৯), ফাহিম মিয়া(১৫), রফিকুল ইসলাম (১৬), হাসিম (১৫), ফজল আমিন(৩৫), মো. রুবেল মিয়াসহ (৩২) বেশ কয়েকজন স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
কায়েস মিয়া ও মো. শুক্কুর আলী দুজনই বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত বলে জানা গেছে। এরমধ্যে শুক্কুর আলী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
এ বিষয়ে আহত শুক্কুর আলী বলেন, হঠাৎ করে কায়েস মিয়া তার লোকজন নিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়িতে আক্রমণ করে ভাঙচুর করে। এসময় আমাকে ও আমার লোকজনকে মারধর করে।
বিজ্ঞাপন
অপর পক্ষের মো. কায়েস মিয়া জানায়, কৃষক গ্রুপ গঠন নিয়ে দু’পক্ষের বাকবিতন্ডার জেরে এমন সংঘর্ষ হয়েছে। তবে উভয় পক্ষেরই বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। খালিয়াজুরী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. এনামুল হক ছোটন বলেন, ছোট্ট একটি বিষয় নিয়ে এমন ঘটনা দুঃখজনক।
এ বিষয়ে খালিয়াজুরী বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাহবুবুর রহমান জানান, ঘটনা শুনেছি। দলের অন্যদের সাথে কথা বলব যাতে এমন ধরণের কোনো ঘটনা না ঘটে। স্থানীয়ভাবে বসে মিমাংসা করে দেব।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি এলাকায় ৩০ জন কৃষকের সমন্বয়ে আমরা কৃষক গ্রুপ তৈরি করি। সরকারি সুযোগ সুবিধা দেওয়াসহ তাদের কৃষি বিষয়ক পরামর্শ দিতে গ্রুপ হিসেবে কাজ করতে সহজ হয়। গ্রুপে কোনো পক্ষের কতজন লোক থাকবে এসব বিষয় নিয়ে মূলত ওই সংঘর্ষ হয়েছে শুনেছি।
খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মকবুল হোসেন জানান, ঘটনার হাসপাতাল আহত রোগীদের দেখতে গিয়েছিলাম। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। কেউ যদি লিখিত অভিযোগ করে তবে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিনিধি/একেবি