তিন বছর আগে ভেঙে ফেলা হয় স্কুল ভবন। তখন থেকে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রোদ-বৃষ্টি, ঝড়-তুফানেও পাঠদান দিতে হয় টিনশেড ঘরে। যার ফলে দিনদিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ছোট-ছোট শ্রেণি কক্ষে পাঠদান দিতে চরম হিমশিম খেতে হয় শিক্ষকদের।
অন্যদিকে স্কুলটি একটি পাকা রাস্তার পাশে অবস্থিত। সীমানা প্রাচীর না থাকায় সুপারি গাছ ও বাঁশ দিয়ে কোনরকম সীমানা প্রাচীর দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবুও যেকোনো সময় সড়ক দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এমন স্কুলটি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার চর লামচি ইউনিয়নে অবস্থিত। স্কুলটির নাম দক্ষিণ হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যালয়টি ১৯৭০ সালে স্থাপিত হয়। ২০১৩ সালে এসে জাতীয় করণ করা হয়। ২০২০ সালে এসে উপজেলা শিক্ষা অফিস বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ তালিকা হিসেবে ঘোষণা করে। ওই সালেই ঝুঁকিপূর্ণ স্কুলটি ভেঙে ফেলা হয়। বিদ্যালয়ে ৭৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
নতুন একটি ভবনের আশ্বাসে এভাবে দীর্ঘ ৩টি বছর ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের ৩ কক্ষ বিশিষ্ট টিনশেড ঘরে পাঠদান দেওয়া হয়। বৃষ্টি আসলে পাঠদান নিয়ে কষ্ট হয়। রোদ-গরমে ক্লাস করতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। গরমের কারণে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলেও আসতে চান না। দ্রুত একটি নতুন ভবন হলে শিক্ষার্থীরা পাঠদানে সুবিধা হবে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন আক্ষেপ প্রকাশ করে ঢাকা মেইলকে বলেন, নিয়ম হচ্ছে নতুন একটি ভবন আগে বরাদ্দ দেওয়া। তারা সেটা না করে। ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয় ঘোষণা করে ভবন ভেঙে নিয়ে গেছে। এ ৩ বছর ধরে শুনে আসলাম প্রতি বছর জুন মাসে নতুন বিদ্যালয় হবে। এভাবে ৩টি বছর শেষ। ভবন না থাকার স্থানীয় ছেলে-মেয়েরা অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে।
দক্ষিণ হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌরী রায় চৌধুরী ঢাকা মেইলকে জানান, পুরনো বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় ভেঙে ফেলা হয়। নতুন একটি ভবনের অপেক্ষায় রইলাম দীর্ঘ ৩ বছর ধরে। তবে বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ হয়নি কোনো ভবন। তাই বাধ্য হয়ে টিনশেড ঘরে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে আবার প্রায় প্রতিদিনই কমছে শ্রেণি কক্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। দ্রুত সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর একটি নতুন স্কুল ভবন নির্মাণ করবে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে। এমনটাই দাবি সকল শিক্ষকদের।
জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা-অফিসার আব্দুল লতিফ মজুমদার ঢাকা মেইলকে বলেন, তিনি নতুন এসেছেন। স্কুলটির বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে। খুব শিগগিরই তালিকা করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে পাঠানো হবে। একটি নতুন ভবনের জন্য।
প্রতিনিধি/এসএস