পটুয়াখালী গলাচিপার আমখোলা ইউনিয়নে টাকার বিনিময়ে রহমগঞ্জ হামিদিয়া দাখিল মাদরাসায় কমিটি গঠন করার অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, টাকার বিনিময় দশ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্য সদস্যরা হলেন- আবদুল মান্নান (সভাপতি), জসিমউদ্দিন খাঁন (সদস্য-অভিভাবক), রেজাউল করিম (সদস্য-অভিভাবক), ইব্রাহীম গাজী (সদস্য-অভিভাবক), ওমর ফারুক (সদস্য-অভিভাবক), শাহনাজ পারভীন (সংরক্ষিত সদস্য), মুকুল মিয়া (সাধারণ শিক্ষক সদস্য), মাসুমা (সংরক্ষিত মহিলা শিক্ষিকা), নিজাম উদ্দিন (সাধারণ শিক্ষক), নজরুল ইসলাম (সুপার-ভারপ্রাপ্ত)
বিজ্ঞাপন
মাদরাসার শিক্ষার্থীর অভিভাবক মহিবুল্লাহ্ বলেন, আমার মেয়ে রহমগঞ্জ হামিদিয়া দাখিল মাদরাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী। আমি তার অভিভাবক। মাদরাসায় নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এখানে কোনো প্রিজাইডিং অফিসার আসেনি এবং ভোট গ্রহণ হয়নি। তাহলে কীভাবে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
অন্য আর এক অভিভাবক আব্বাস গাজী বলেন, রহমগঞ্জ হামিদিয়া দাখিল মাদরাসায় আমার মেয়ে নিয়মিত শিক্ষার্থী। আমি তার অভিভাবক। এই মাদরাসায় গোপনে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমার এর বিচার চাই।
বিগত কমিটির সদস্য ইউসুফ গাজী বলেন, আমরা কমিটিতে চার বছর ধরে ছিলাম। এখন গোপনে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। তা কীভাবে করল একটা সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদরাসার এক শিক্ষক জানান, আমাদের মাদরাসায় গোপনে কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত চার বছর ধরে এখানে সুষ্ঠ কমিটি ছিল। তবে কমিটি বিলুপ্ত হয় ২০২২ সালের শেষের দিকে। আমারা সবাই জানি কমিটি গঠন হয়নি। তবে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার নজরুল ইসলাম তার নেতৃত্বে অতি গোপনে কমিটি গঠন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, এখানে থানা নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং অফিসার, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও রূপালী ব্যাংক ম্যানেজারসহ ম্যানেজিং কমিটি গঠনে যাদের প্রয়োজন তাদের নিয়ে অতি গোপনে মোটা অঙ্কের টাকা খেয়ে এ কাজটি করেছে। নোটিশ বোর্ডে তফসিল না ঝুলিয়ে, কোনো ভোটারদের ভোট না নিয়ে, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ভোট না নিয়ে, দাতা সদস্যদেরকে সদস্য গঠন না করিয়ে ফলাফল প্রকাশ করে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে।
মাদরাসার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সহকারী সুপার ও বর্তমান শিক্ষক মাওলানা হারুনুর রশিদ বলেন, ২০২২ সালে মাদরাসায় কোনো নির্বাচন হয়নি। অবৈধভাবে গোপনে কমিটি গঠন করে গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। আমি ওই মাদরাসার শিক্ষক হয়েও কমিটি এবং নিয়োগের বিষয় কিছুই জানি না।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন রহমগঞ্জ হামিদিয়া দাখিল মাদরাসার সভাপতি মাওঃ এম এ মান্নান ও ভারপ্রাপ্ত সুপার নজরুল ইসলম জানান, সবকিছু নিয়ম মেনেই করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রহমগঞ্জ হামিদিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মাওঃ এম এ মান্নান ২০১৭ সালে অবসারে যায়। তারপর থেকে এ পর্যন্ত চারজনে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে দায়িত্বে রয়েছে নজরুল ইসলাম।
তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর ২০২২ সালের ডিসেম্বর গোপনে ভোটবিহীন একটি কমিটি করে বোর্ড থেকে অনুমোদন করিয়ে নেন। এরপর মাদরাসায় সুপার, সহ-সুপার, নিরাপত্তাকর্মী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও আয়া পদে ১৯ জুলাই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলে গোপন ওই কমিটি গঠনের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়।
প্রতিনিধি/এসএস