রোববার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

সারিয়াকান্দি হাসপাতালের বেহাল দশা

পারভীন লুনা
প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০২৩, ০৪:৫৯ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নানা সমস্যায় জর্জজরিত। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে কেবল নেই আর নেই অবস্থা। সেবা নিতে আসা রোগীরা পড়ছেন নানা সমস্যায়। বিশেষ করে নারী, পুরুষ ও শিশুদের ওয়ার্ডের অধিকাংশ বৈদ্যুতিক পাখা দীর্ঘদিন বিকল হয়ে আছে। এতে ওয়ার্ডের ভর্তি রোগীদের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী রোগীদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি স্থানীয়দের কাছে হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত। তবে যে নামেই পরিচিত হোক না কেন, এখানে সুইপার থেকে শুরু করে বিষেশজ্ঞ চিকিৎসকরা সেবা দেওয়ার জন্য অপ্রতুল। হাসপাতালে ১০ জন বিষেশজ্ঞ চিকিৎসক প্রয়োজন হলেও রয়েছে দু’জন। রোগীদের জন্য রাধুনীর পদটি দীর্ঘ ২ বছর খালি। ভাড়া করা রাধুনী দিয়ে কোনো মতে চলছে হাসপাতালটি। হাসপাতালের রোগীদের খাবারের মান বলে কিছু নেই। ফলে রোগীরা বাইরে থেকে খাবার সংগ্রহ করছেন।


বিজ্ঞাপন


প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ নেই বললেই চলে। হৃদরোগ,  ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, ব্যাথা নাশক ও শিশুদের ওষুধ হাসপাতালটিতে নেই বললেই চলে। চরাঞ্চলসহ দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা প্রয়োজনীয় ওষুধ না পেয়ে হতাশ হয়ে চলে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকছে না। একটি মাত্র অপারেশন থিয়েটার। সেটিও বিগত ১০ বছর ধরে তালা ঝুলে আছে। এমনকি হাসপাতালটিতে সরকারি কোনো মোবাইল নম্বর নেই। আবার ২টি ওয়ার্ডে ২১টি ফ্যানের মধ্যে মাত্র ২টি ফ্যান চালু রয়েছে। মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে ফ্যান নেই বললেই চলে। যাতে করে ভর্তি হওয়া রোগীদের ফ্যানের অভাবে মহিলা ও শিশুরা গরমে হাঁসফাঁস করছেন।

সদর ইউনিয়নের দীঘলকান্দি গ্রাম থেকে আসা রোগী ওসমান সরকার (৭০) বলেন, আমি ১৫ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। কিন্তু চিকিৎসা সেবা বলে কিছু নেই এখানে। বাড়িতে অসুবিধা থাকায় বৃদ্ধ বয়সে কষ্টের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে বাধ্য হয়েছি।

একই গ্রামের শহিদুল ইসলাম (৬০) বলেন, কি করব, উপায় তো নেই আমার। কষ্ট হলেও ভর্তি থাকতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে সদর ইউনিয়নের ৭ ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মনিরুজ্জামান বাবু বলেন, আমি কয়েকদিন আগে হাসপাতালে গিয়াছিলাম গ্রামের এক রোগী দেখতে। দেখি হাসপাতালে ফ্যানের অভাবে রোগীদের নাভিশ্বাস অবস্থা। রোগীদের ত্রাহি মধুসূদন ত্রাহি অবস্থা দেখা দিয়েছে এই গরমে। রাতের বেলা ১টি ওয়ার্ডে ১টি বাল্ব কোনায় জ্বলে। আলোর ভোগান্তিতে রোগীরা মোবাইলের আলো দিয়ে খাওয়া-দাওয়ার কাজ সারছেন। হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা চরম পর্যায়ে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টি এইচ এ) ডা. মো. মাহবুবুর রহমান সর্দার বলেন, হাসপাতালের সমস্যা আছে ঠিকই, আমারও রয়েছে সীমাবদ্ধতা। আমি ইচ্ছে করলেই সমস্যা রাতারাতি সমাধান করে দিতে পারি না। সমস্যাগুলোর জন্য আমি ইউএনও মহোদয় ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আশা করছি খুব শিগগিরই সমস্যাগুলোর সমাধান হয়ে যাবে।


বিজ্ঞাপন


প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন