চার মাস চিকিৎসা লন্ডন থেকে দেশের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার অবতরণের কথা রয়েছে। তবে কর্মদিবসে ব্যাপক লোকসমাগমের কারণে বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে ভয়াবহ দুর্ভোগ হবে এমন আশঙ্কা থেকে নেতাকর্মীদের একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে বিএনপি।
বিশেষ করে সড়কে অবস্থান না নিয়ে ফুটপাতে দাঁড়াতে বলা হয়েছে সবাইকে। কিন্তু চেয়ারপারসনকে স্বাগত জানাতে সাতসকালেই নেতাকর্মীরা বিমানবন্দর এলাকার সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই চাপ আরও বাড়বে। ফলে খালেদা জিয়া বিমানবন্দরে নামার পর বাসার উদ্দেশে যেতে নেতাকর্মীদের ঢলের মধ্যে পড়বেন এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে বিমানবন্দর সড়ক ব্যবহার করে চলাচল করবেন তাদের বিকল্প রুট দিয়ে চলতে পরামর্শ দিয়েছে ডিএমপি। পরীক্ষার্থীদেরও সময় হাতে নিয়ে বের হতে বলেছে পুলিশ। অন্যদিকে বিমানে যারা যাবেন তাদের নির্ধারিত সময়ের বেশ আগে স্পটে পৌঁছাতে বলেছে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো। হজযাত্রীদের সকাল ছয়টার মধ্য হজ ক্যাম্পে থাকার জন্য বলেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
তবে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা নির্ধারিত জায়গায় অবস্থান নেওয়ায় সড়কে যানজট বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
আগে থেকেই বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত পুরো পথে খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানানোর প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে বিএনপি। নেতা-কর্মীরা দলীয় পতাকা ও জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তার এক পাশে ফুটপাতে দাঁড়াবেন।
বিজ্ঞাপন
একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার আগমন ঘিরে জনভোগান্তি কমাতে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে যাওয়া, গাড়ির পেছনে হেঁটেও যাওয়া এবং বিমানবন্দরের ভেতরে ও খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবনে প্রবেশে নেতাকর্মীদের বারণ করা হয়েছে।
তবে খোদ নেতাকর্মীরাই বলছেন, নির্দেশনা অনুযায়ী সবাই সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নিতে পারলে দুর্ভোগ কিছুটা কমানো সম্ভব। কিন্তু দলের এবং অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতারা তাদের নিজেদের অবস্থান জানান দিতে, বিশেষ করে আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বড় শোডাউন করবেন। যে কারণে চাইলেও দুর্ভোগ এড়ানো সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা।
গত জানুয়ারিতে খালেদা জিয়া লন্ডন যাওয়ার সময়েও সড়কে ভয়াবহ যানজট হয়েছে। কারণ তখনও নির্দেশনা মানেননি নেতাকর্মীরা।
খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি অবস্থান করবে বিমানবন্দর থেকে লো মেরিডিয়েন হোটেল পর্যন্ত। ছাত্রদল অবস্থান করবে লো মেরিডিয়েন হোটেল থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত। যুবদল অবস্থান করবে খিলক্ষেত থেকে হোটেল র্যাডিসন পর্যন্ত। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি অবস্থান করবে হোটেল র্যাডিসন থেকে আর্মি স্টেডিয়াম পর্যন্ত। স্বেচ্ছাসেবক দল অবস্থান করবে আর্মি স্টেডিয়াম থেকে বনানী কবরস্থান পর্যন্ত। কৃষক দল অবস্থান করবে বনানী কবরস্থান থেকে কাকলী মোড় পর্যন্ত। শ্রমিক দল অবস্থান করবে কাকলী মোড় থেকে বনানীর শেরাটন হোটেল পর্যন্ত। ওলামা দল, তাঁতী দল, জাসাস, মৎস্যজীবী দল অবস্থান করবে শেরাটন হোটেল থেকে বনানী কাঁচাবাজার পর্যন্ত। পেশাজীবী সংগঠনগুলো অবস্থান করবে বনানী কাঁচাবাজার থেকে গুলশান-২ পর্যন্ত। মহিলা দল অবস্থান করবে গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বর থেকে গুলশান অ্যাভিনিউ রোড পর্যন্ত।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বর থেকে গুলশান অ্যাভিনিউ রোড পর্যন্ত অবস্থান করবেন। আর বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতা-কর্মীরা যাঁর যাঁর সুবিধামতো স্থানে অবস্থান নেবেন।
এদিকে পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গুলশান-বনানী থেকে উত্তরা পর্যন্ত সড়ক যথাসম্ভব পরিহার করে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল নির্ধারিত টোল দিয়ে সকাল ৭টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করার সুযোগ দেয়া হয়েছে।
বিইউ/ইএ




























