রোববার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

সরকারি কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের পোস্টধারী নেতারা!

জেলা প্রতিনিধি, পিরোজপুর
প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৩ এএম

শেয়ার করুন:

loading/img
সরকারি কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। ছবি: ঢাকা মেইল

পিরোজপুরের নাজিরপুরে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা। তারা সবাই আওয়ামী লীগের পোস্টধারী নেতা। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ছিল জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস। এ উপলক্ষে নাজিরপুর উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে উপজেলা প্রশসানের উদ্যোগে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।


বিজ্ঞাপন


এতে অংশ নেন ৩নং দেউলবাড়ী দোবরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও দেউলবাড়ী দোবরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এফ এম রফিকুল আলম বাবুল, ২নং মালিখালী ইউনিয়ন চেয়ার‌্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন দাড়িয়া বাবলু, ১নং মাটিভাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলাম বিলু, শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মনোজ কান্তি মন্ডল, নাজিরপুর সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. আলমগীর হোসেন। তারা সবাই আওয়ামী নেতা ও সাবেক মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম ও সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম আউয়ালের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গা ঢাকা দেন। তবে সময় যত গড়াচ্ছে তারা সামনে আসতে শুরু করেছেন। স্থানীয় প্রশাসন তাদের সহায়তা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে সারাদেশে ডেভিল হান্ট অভিযান চললেও এখানেও আওয়ামী লীগের উল্লেখযোগ্য তেমন কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে একের পর এক অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত হলেও তেমন কোনো অপরাধীই ধরা পড়ছে না। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ মাসিক আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে আওয়ামী দোসরসহ অপরাধীদের অপরাধের কর্মকাণ্ড উল্লেখ করা হলেও তা করা হচ্ছে না রেজুলেশনভুক্ত। এতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, উপজেলা প্রশাসনে সর্ষের মধ্যে ভূত রয়েছে।

আরও পড়ুন

রাজশাহীতে পুলিশের ‘সহযোগিতায়’ প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ!

বিএনপিতে ‘আশ্রয়’ পাচ্ছে আওয়ামী লীগের লোকজন!

নাজিরপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু হাসান খান বলেন, ‘বিষয়টি আমারও দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রশাসনের মধ্যে এখনো আওয়ামী লীগের দোসর রয়েছে, সরকারকে বেকায়দায় ফেলানোর জন্য তারা ঠিকমত কাজ করছে না। ডেভিল হান্টেও গ্রেফতার করছে না। তারা আওয়ামী দোসরদের নিয়ে বিভিন্ন সরকারি প্রোগ্রাম করছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বিএনপিতে আমরা কোনো আওয়ামী দোসরকে সহযোগিতা বা প্রশ্রয় দিইনি এবং দেবও না।’

নাজিরপুর উপজেলা জামায়াতের আমির আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘নাজিরপুরের বর্তমান উপজেলা প্রশাসন ৫ আগস্টের আগের ধারাতেই চলছে। আওয়ামী মানসিকতা এখনো পোষণ করে এখানকার প্রশাসন। বিভিন্ন জায়গায় উপজেলা প্রশাসন ভেঙে নতুনভাবে সাজিয়েছে, আমাদের এখানে এখনো পুরনো সেটাপ রয়ে গেছে। বিএনপি-জামায়াত এবং ছাত্র-জনতাকে কোনো উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সংযুক্ত করে না।’

এবিষয়ে নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহামুদ আল ফরিদ ভূইয়া ঢাকা মেইল বলেন, ‘আমরা মামলার এজাহারনামীয় আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। অপরাধীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরূপ রতন সিংহের মোবাইল ফোনে বারবার কল করে পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন। ম্যাসেজ পাঠিয়েও কোনো উত্তর মেলেনি।’

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘বিষয়টি আপনার মুখে শুনলাম। ইউএনও'র কাছে আমি শুনে দেখি তিনি কী বলেন। তারপরে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

প্রতিনিধি/জেবি

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন