বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

১৫ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি দ্বিতীয় তেল শোধনাগার, বিপিসির উদ্বেগ

ইব্রাহিম খলিল
প্রকাশিত: ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৫ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

শক্তির অন্যতম উৎস জ্বালানি তেল। কিন্তু দেশে সেই জ্বালানি তেল উৎপাদন ও মজুদ তলানিতে। ফলে জ্বালানি নিরাপত্তাহীনতার কারণে দেশে ক্ষণে ক্ষণে দুর্ভোগ পোহাতে হয় বিদ্যুতসহ নানা উৎপাদন খাতে। বিপুল বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ে জ্বালানি তেল আমদানি করে পূরণ করতে হয় চাহিদা। যার প্রভাবে শক্ত হচ্ছে না জাতীয় অর্থনীতির ভীত।

এ নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)। ফলে দেশে জ্বালানি নিরাপত্তা তৈরিতে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় তেল শোধনাগার প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) পাশে আরেকটি তিন গুণ ক্ষমতা সম্পন্ন তেল শোধনাগার স্থাপন করতে চাই বিপিসি।


বিজ্ঞাপন


কিন্তু ২০১০ সাল থেকে সেই প্রকল্প বাস্তবায়নে মরিয়া হয়েও কোনো কুলকিনারা করতে পারেনি রাষ্ট্রয়াত্ত প্রতিষ্ঠানটি। নানা স্বার্থ সংশ্লিষ্টতায় কাকে দেওয়া হবে প্রকল্প কাজ। এ নিয়ে কেটে গেছে দীর্ঘ ১৫টি বছর। এতে দেশে তৈরি হয়েছে চরম জ্বালানি নিরাপত্তাহীনতা।

সম্প্রতি বিপিসির মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) মুহাম্মদ মোরশেদ হোসাইন আজাদ এমন তথ্য জানান। তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে বছরে প্রায় ৭৫ লাখ টন পরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে বিপিসি কর্তৃক সরবরাহকৃত জ্বালানি তেলের পরিমাণ ৬৭ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন। যার অধিকাংশই আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে।

মোরশেদ হোসাইন জানান, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ১৯৭৬ সালে দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা ছিল প্রায় ১১ লাখ মেট্রিক টন। তখন চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় অবস্থিত একমাত্র তেল শোধনাগারে জ্বালানি তেল পরিশোধনের ক্ষমতা ছিল ১৫ লাখ মেট্রিক টনের। এরপর থেকে দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় এক সপ্তমাংশ বাড়লেও শোধন ক্ষমতা বাড়েনি একফোঁটাও। ফলে বাকি জ্বালানি তেল ফিনিশ প্রোডাক্ট (পরিশোধিত) হিসেবে আমদানি করে সরবরাহ করতে হচ্ছে বিপিসিকে। তাতে অতিরিক্ত খরচ হিসেবে বিদেশে চলে যাচ্ছে কোটি কোটি ডলার।

আরও পড়ুন

এপ্রিলে চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনে তেল আসবে ঢাকায়

অন্যদিকে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে জ্বালানি নিরাপত্তাহীনতা। চাহিদার সবটুকু জ্বালানি তেল অপরিশোধিত এনে যদি দেশে পরিশোধন করা যেত তাহলে বিপুল ডলার দেশে থেকে যেত। দেশের বিপুল এই অর্থ ব্যয় ও জ্বালানি নিরাপত্তাহীনতা কমাতে গত ১৫ বছর আগে পতেঙ্গায় ইআরএলের প্রথম তেল শোধনাগারের পাশে দ্বিতীয় তেল শোধনাগার স্থাপনের উদ্যোগ নেয় বিপিসি। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও প্রকল্পের কোন কুল-কিনারা না হওয়ায় চরমভাবে উদ্বিগ্ন প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তারা।

বিপিসির তথ্যমতে, অপরিশোধিত তেল পরিশোধনে ২০১০ সালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় অবস্থিত দেশের একমাত্র তেল শোধনাগার প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ৫৯ একর খালি জায়গায় ইনস্টলেশন অব ইআরএল ইউনিট-২ নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ঝুলে থাকার পর করোনা সংক্রমণ ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ডলার সংকটে জ্বালানি তেলের আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার। পরে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পুনরায় তোড়জোড় শুরু করে বিপিসি।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকারি অর্থায়ন চেয়ে ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠায় বিপিসির পরিকল্পনা বিভাগ। প্রস্তাবনায় বিপিসির পক্ষ থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৭০ শতাংশ সরকারি অর্থায়নের আবেদন করা হয়। প্রস্তাবনার আলোকে ওই সময় ৫ শতাংশ সুদে প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৭০ শতাংশ উন্নয়ন ঋণ হিসেবে দিতে সম্মত হয় অর্থবিভাগ। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানোর পর আবারও থমকে যায় প্রকল্পটির বাস্তবায়ন।

এভাবে এক বছর পার হওয়ার পর প্রকল্পটি সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়। এ সময় ইআরএলের দ্বিতীয় ইউনিট বাস্তবায়ন কাজ চেয়েছিল বসুন্ধরা গ্রুপ। কিন্তু গত বছরের ২৯ জানুয়ারি এস আলম গ্রুপ ইনস্টলেশন অব ইআরএল ইউনিট-২ প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ স¤পদ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেয়। ওই প্রস্তাবের আলোকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটি ইস্টার্ন রিফাইনারি ও এস আলম গ্রুপ যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নেয়।

গত বিষয়টি জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকে বিপিসিকে অবহিত করা হয়। এর চার মাসের মাথায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। গত ২৯ আগস্ট বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ স¤পদ মন্ত্রণালয় প্রকল্প থেকে এস আলম গ্রুপকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানোর পর এখন আবারও থমকে আছে প্রকল্পটি।

Ctg-2ওই সময় মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয় ইআরএল ও এস আলম গ্রুপের মধ্যে ইনস্টলেশন অব ইআরএল ইউনিট-২ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন প্রস্তাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে প্রকল্পটির বৈদেশিক মুদ্রার হালনাগাদ দর অনুযায়ী প্রাক্কলন এবং সব ক্রয় পরিকল্পনা পিপিআর-২০০৮ অনুযায়ী প্রণয়ন করে পরিকল্পনা কমিশনে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পাঠাতে বিপিসিকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এভাবে একাধিকবার ডিপিপি সংশোধন করার পরও অর্থায়নের বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন নিয়ে আবারও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কবে নাগাদ প্রকল্পটির কাজ শুরু হবে, সে বিষয়ে কোনো তথ্যও নেই বিপিসি কিংবা ইআরএল কর্মকর্তাদের কাছে। তারা বলছেন, অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান পাওয়া না গেলে থমকে যাবে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন।

পুরোপুরি কাজে লাগছে না এসপিএমও

পরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল শোধনাগার প্রতিষ্ঠান ইআরএলের দ্বিতীয় ইউনিট চালু হবে, এটা ধরেই এর মধ্যে গভীর সমুদ্র থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাসের এসপিএম প্রকল্পও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। দ্বিতীয় তেল শোধনাগার প্রকল্পটি বাস্তবায়িত না হওয়ায় পাইপলাইনের মাধ্যমে সরাসরি জ্বালানি তেল শোধনাগারে পৌঁছানোর জন্য গভীর সমুদ্র থেকে স্থলভাগ পর্যন্ত বাস্তবায়িত এসপিএম প্রকল্পটি পুরোপুরি কাজে লাগতে পারছে না। এমন মন্তব্য বিপিসির মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রকৌশলী আমীর মাসুদের।

তিনি বলেন, আলোচিত প্রকল্পটি চলমান এসপিএম উইথ ডাবল পাইপলাইন প্রকল্পের সঙ্গে স¤পৃক্ত। এসপিএম প্রকল্পের মাধ্যমে বার্ষিক ৯.০ মিলিয়ন টন (৪.৫ মিলিয়ন টন ক্রুড অয়েল ও ৪.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন ফিনিশড প্রোডাক্ট) পেট্রোলিয়াম পণ্য অয়েল ট্যাংকার হতে আনলোডিং করা সম্ভব হবে। বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় ১ লাখ টন অপরিশোধিত তেল নিয়ে একটি মাদার ট্যাংকার কুতুবদিয়ায় আসে। পরে বিপিসির দুটি লাইটার ভেসেলের মাধ্যমে মাদার ট্যাংকার থেকে অপরিশোধিত তেল আরএম-৭ জেটির মাধ্যমে রিফাইনারিতে আনা হয়। এই ধরনের একটি অপারেশন সম্পন্ন করতে প্রায় ১১ দিন সময় লাগে।

আরও পড়ুন

ভোলার গ্যাস আগে পাবে ঢাকা পরে খুলনা

ইআরএল ইউনিট-২ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এসপিএম প্রকল্পের মাধ্যমে ১ লাখ ২০ হাজার টন ক্ষমতাস¤পন্ন মাদার ট্যাংকার হতে পেট্রোলিয়াম পণ্য মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় আনলোডিং করা সম্ভব হবে। এর ফলে এসপিএম প্রকল্পকেও সম্পূর্ণ সক্ষমতায় ব্যবহার করা যাবে।

তৈরি হতো টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তা

বিপিসির ঊর্ধ্বতন মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) এ টি এম সেলিম জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদনে ইআরএলের সরবরাহকৃত বার্ষিক প্রায় ৩ লাখ টন ফার্নেস অয়েল ব্যবহার করা হচ্ছে। ইআরএল ইউনিট-২ নির্মাণ হলে বার্ষিক ৪ লাখ টন ফার্নেস অয়েল ব্যবহার করা যাবে। এ ছাড়া ইআরএল ইউনিট-২ তে প্রায় ৬০ হাজার টন এলপিজিও উৎপাদিত হবে, যাতে টেকসই জ্বালানি নিশ্চয়তা বাড়বে।

প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২ দশমিক ৫৫ লাখ টন পরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বছরে প্রায় ১১ লাখ টন ডিজেল, প্রায় ৫ লাখ টন জেট ফুয়েল, প্রায় ৪ লাখ টন ফার্নেস অয়েল, প্রায় ২ লাখ টন লুব বেজ অয়েল এবং প্রায় ৬ লাখ টন গ্যাসোলিনসহ অন্যান্য পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য পাওয়া যাবে।

Ctg-1এটিএম সেলিম বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ক্রুড অয়েল পরিশোধনের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ লাখ টন হতে বৃদ্ধি পেয়ে ৪৫ লাখ টনে উন্নীত হবে। জ্বালানি তেলের গুণগতমানও অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। বহুলাংশে সাশ্রয় হবে কোটি কোটি ডলার। কমে যাবে তেলের দামও। পাশাপাশি ডিজেল-পেট্রোলের বাইরে অকটেন, ফার্নেস অয়েল, জেট ফুয়েল, কেরোসিনসহ অন্যান্য জ্বালানি তেল আছে সেগুলো আমদানি করতে হবে না। উল্টো নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে এসব জ্বালানি তেল বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। এতে টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তা তৈরি হবে।

এটিএম সেলিম আরও বলেন, দেশের অর্থনীতির জন্য এতটা গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পরও দীর্ঘদিন ধরে থমকে আছে ইআরএলের দ্বিতীয় ইউনিট প্রকল্পটি। কিন্তু নানা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় এবং কাকে প্রকল্পের কাজ দেওয়া হবে। এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে দীর্ঘ সময়েও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়নি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার এসে এস আলমকে বাদ দেওয়ার পর প্রকল্পটি নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে। এরপরও প্রকল্পের কাজ কবে হচ্ছে তা নিয়ে নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারেননি তিনি।

তলানিতে শোধন ক্ষমতা 

ইআরএলের মহাব্যবস্থাপক (ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কন্ট্রোল) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় অবস্থিত তেল শোধনাগারে ১৯৬৮ সালের ৭ মে উৎপাদন শুরু করা হয়। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক শোধনক্ষমতা ছিল ১৫ লাখ টন। তখন দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা ছিল প্রায় ১১ লাখ মেট্রিক টন। প্রায় দুই দশক আগেই এ স্থাপনাটির আয়ুষ্কাল ফুরিয়েছে। বর্তমানে দেশে জ্বালানি তেলের বার্ষিক চাহিদা ৭৫ লাখ টন। বিপিসির সরবরাহকৃত তেল ৬৭ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন।

এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৯৩ শতাংশ ডিজেল, ১৪ দশমিক ১৪ শতাংশ ফার্নেস অয়েল, ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ পেট্রোল, ৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ অকটেন, ১ দশমিক ০৩ শতাংশ কেরোসিন, ৮ শতাংশ জেট-এ-১ এবং ১ দশমিক ৮০ শতাংশ অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্য।

তিনি জানান, ইআরএলের তেল পরিশোধন ক্ষমতা মাত্র ১৫ লাখ টন। ফলে ইআরএলে উৎপাদিত পণ্য দ্বারা দেশের পরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা স¤পূর্ণ পূরণ করা সম্ভব হয় না। বর্তমানে দেশের পরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদার মাত্র ২০ ভাগ ইআরএলের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে। বাকি ৮০ ভাগ পরিশোধিত জ্বালানি তেলের সিংহভাগ আমদানি এবং সামান্য কিছু অংশ দেশীয় উৎস থেকে সংগ্রহ করে চাহিদা পূরণ করা হয়।

জ্বালানি বিভাগের তথ্যমতে, ইআরএলের প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে প্রাপ্ত পরিশোধিত জ্বালানি তেলের ব্যয় বর্তমানে আমদানিকৃত পরিশোধিত জ্বালানি তেলের ব্যয় অপেক্ষা প্রতি ব্যারেলে প্রায় ৯-১০ মার্কিন ডলার কম। ফলে সাশ্রয়ী মূল্যে পরিশোধিত জ্বালানি তেল উৎপাদনের জন্য বিপিসি ৩ মিলিয়ন টন পরিশোধন ক্ষমতাস¤পন্ন ইন্সটলেশন অব ইআরএল ইউনিট-২ প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করতে চায়।

বিপিসি ও ইআরএল কর্মকর্তার মতামত

জানতে চাইলে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শরীফ হাসনাত বলেন, ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপন করা হবে, এটা ধরে নিয়েই সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) বা সাগরে ভাসমান জেটি নির্মাণ ও পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সুতরাং প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা জরুরি। কিন্তু নানা পক্ষের স্বার্থকে কেন্দ্র করে সিদ্ধান্তহীনতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পারেনি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার।

জানতে চাইলে বিপিসির চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আমিন উল আহসান বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে সংশোধিত যে ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়, সেটার ভিত্তিতে ৭০ শতাংশ জিওবি এবং ৩০ শতাংশ বিপিসি অর্থায়ন করার যে সিদ্ধান্ত হয়, সেই অনুযায়ী এখন অর্থায়নকারী খোঁজা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে ইআরডিতে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। ইআরডি থেকে এখনও কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি। যদি অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান ঠিক হয়, তাহলেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। অন্যথায় প্রকল্পটি এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না।

এমআইকে/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর