রোববার, ৬ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

খেলাপিদের নির্বাচনের অংশগ্রহণের অবৈধ সুযোগ

সিআইবি থেকে সরানো হলো সেই ওয়াকিদকে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫ মার্চ ২০২৫, ১০:০৪ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

খেলাপিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়াসহ কিছু গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে মুন্সী মুহাম্মদ ওয়াকিদকে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) পরিচালক পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূলত ব্যাংকের খাতের অনিয়ম, লোপাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার মতো অনিয়মের কারণে তাকে ২৪ বছর পর সিআইবি থেকে বদলি করা হয়।

সরকারের পালাবদলের পরে তার নামে অনিয়মের ফিরিস্তি প্রকাশ পায়। খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারাও তার বিরুদ্ধে গভর্নরকে অভিযোগ করেন। নানা অভিযোগ আমলে নিয়ে ওয়াকিদকে সিআইবি থেকে বদলি করে পরসংখ্যান বিভাগে বদলি করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ আদেশে জানা গেছে, মুন্সী মুহাম্মদ ওয়াকিদের স্থলে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) পরিচালক হিসেবে পরিসংখ্যান বিভাগের মো. শফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আদেশনামায় স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্সেস-১ বিভাগের পরিচালক মো. জবদুল ইসলাম।

সূত্র জানায়, সম্প্রতি সিআইবির পরিচালক মুন্সী মুহাম্মদ ওয়াকিদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কতৃপক্ষের উদাসীনতাও প্রশ্নের মুখে পড়ে। এটি বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালক এবং নিয়োগের ক্লিয়ারেন্স প্রদান করে।

জাতীয় নির্বাচনের সংসদ সদস্য প্রার্থীদের নমিনেশনের ক্লিয়ারেন্সও এই বিভাগ থেকেই দেওয়া হয়। আর এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ অর্থাৎ সিআইবিতে গত ২৪ বছর বিভিন্ন পদে বহাল ছিলেন মুন্সী মুহাম্মদ ওয়াকিদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১৩ বছর চাকরি করার পর যুগ্ম-পরিচালক থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর সিআইবি থেকে পরিসংখ্যান বিভাগে বদলি করা হয়। কিন্তু মাত্র তিন মাসের মাথায়, ৬ জানুয়ারি ২০১৫ সালে অদৃশ্য শক্তির বলে তিনি আবার সিআইবিতে ফিরে আসেন। ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট উপমহাব্যবস্থাপক (বর্তমানে অতিরিক্ত পরিচালক) পদে পদোন্নতি পাওয়ার পরও তিনি কোন এক অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে সিআইবিতেই থাকেন।


বিজ্ঞাপন


২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল পরিচালক পদে পদোন্নতি পান। তবে পদোন্নতির পর তাকে পরিসংখ্যান বিভাগে পাঠানো হলেও, ছয় মাস যেতে না যেতেই, ১৭ অক্টোবর ২০২৩ সালে তিনি পুনরায় সিআইবিতে পোস্টিং নেন।

২০২৪ সালের প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের ঠিক এক মাস আগেই এক বিশেষ এসাইনমেন্ট দিয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের নির্দেশে তাকে সিআইবিতে পুনরায় পোস্টিং দেয়া হয়৷ ওয়াকিদ মুন্সির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ হলো-তিনি বিশেষে উদ্দেশ্যে ঋণ খেলাপিদের সিআইবি রিপোর্ট সংশোধন করে তাদের খেলাপি মুক্ত দেখাতেন। এর মাধ্যমে নির্বাচনে অধিক সংখ্যক প্রার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে ২০২৪ সালের নির্বাচনে। যা ফ্যাসিস্ট সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল এবং রাজনৈতিক ইমেজ শক্তিশালী করতে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সিআইবিতে গত ২৩ বছর স্বপদে বহাল থাকেন ওয়াকিদ। শেষশেষ তাকে বদলি করা হয়।

টিএই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন


News Hub