বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

নানা নাটকীয়তার শেষে স্বাভাবিক বিএসইসি’র কার্যক্রম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯ মার্চ ২০২৫, ০৮:২৩ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img
বিএসইসির সাম্প্রতিক ঘটনাসমূহ নিয়ে ডিএসই, সিএসই, ডিবিএসহ বাজারের অংশীজনরা আজ সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন। ছবি: সংগৃহীত

কর্মবিরতির নামে সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, লিফট, বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধসহ নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে কাজে ফিরেছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কর্মীরা। সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের পদত্যাগ দাবি থেকে সরে এসেছেন বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

গতকাল শনিবার রাতে বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে ফেরার অনুরোধ জানানো হয়। আজ রোববার (৯ মার্চ) সকাল থেকে বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিএসইসি কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


বিজ্ঞাপন


এর আগে বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ঘোষণা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) কর্মবিরতি পালন করেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আগেরদিন বুধবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে কর্মবিরতি পালন করার ঘোষণা দেয় বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। গত ৫ মার্চ বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করেন সেখানকার কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। একপর্যায়ে তারা কমিশনের মূল ফটকে তালা দেন, সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, লিফট বন্ধ করে দেন এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেন। পরে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে উদ্ধার করেন।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিন বিকেল ৫টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের গানম্যান (পুলিশ সদস্য) মো. আশিকুর রহমান।

মামলার আসামিরা হলেন— বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম (৫৭) ও রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্ম পরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপ পরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), আল ইসলাম (৩৮), শহিদুল ইসলাম (৪২), ও তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), রায়হান কবীর (৩০), সাজ্জাদ হোসেন (৩০) ও আব্দুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী (৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফ (২৯)।

এদিকে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তদন্ত কার্যক্রমে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন স্টেকহোল্ডাররা। গতকাল বিএসইসি চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এসময় বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, আমরা সবাইকে বলেছি কাজে যোগদান করতে। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করবো।


বিজ্ঞাপন


বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ডিএসই’র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের যে তদন্ত কার্যক্রম চলছে, এ কাজের সঙ্গে আমরা সম্পূর্ণ একাত্মতা প্রকাশ করছি। সংকটময় পরিস্থিতিতে কীভাবে বাজারে আস্থা ধরে রাখা যায় এবং অতিদ্রুত সংকট কাটিয়ে ওঠা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী যেভাবে বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে দাবি দাওয়া আদায়ের প্রচেষ্টা করেছিলেন সেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা এর নিন্দা জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, বিগত বছরগুলোতে যে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে; বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে তার বিশদ তদন্ত ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলমান যে বিচার কার্যক্রম এর সঙ্গে আমরা একাত্মতা ঘোষণা করছি। আমরা মনে করি বিএসইসিতে অনেকে আছেন যারা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছেন। আমরা বিএসইসি চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের কাছে অনুরোধ করেছি এই সৎ এবং নিষ্ঠাবান কর্মকর্তারা যাতে এই মুহূর্তে আতঙ্কিত না হন; তারা যেন তাদের দৈনন্দিন কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে পারেন, সে বিষয়ে তারা যেন পদক্ষেপ নেন।

ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, আমরা তাদের বলেছি আপনারা শক্ত হাতে হাল ধরেন। এভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ করা যাবে না। আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে এটা মোকাবিলা করবো।

টিএই/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর