দেশে চলমান চার দিনের বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রথম দুই দিন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে দেশের বিনিয়োগের সম্ভাবনা তুলে ধরেছে। সম্মেলনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের সুযোগ-সুবিধা এবং ব্যবসায়িক পরিবেশ সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন। তাদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়ের মাধ্যমে সরকার বিনিয়োগের সম্ভাবনা প্রসারিত করতে চাচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ চলে আসে। বিশেষ করে— সম্মেলনের প্রথম দুই দিনে আলোচনা কেন্দ্রবিন্দু ছিল দেশীয় বাজারের সংস্কার ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ।
এবং শুধু বিনিয়োগের পরিবেশই নয়, সম্মেলনের ফাঁকে গতকাল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে—বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সাথে ‘আর্টেমিস চুক্তি’ সই করেছে। এই চুক্তি বাংলাদেশের মহাকাশ গবেষণায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং বাংলাদেশের জন্য প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার নতুন সুযোগ তৈরি করবে। এর ফলে, বাংলাদেশ এখন মহাকাশ গবেষণায় আন্তর্জাতিক মহাকাশ জোটের অংশ হয়ে উঠল, যা দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে সংযুক্ত।
বিজ্ঞাপন
এদিকে, বাংলাদেশের প্রতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে নতুন একটি বড় বিনিয়োগের ঘোষণা থেকে। নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি) বাংলাদেশে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, যা দেশের আর্থিক বাজারের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক একটি খবর। বাংলাদেশে তাদের আগের ৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগের পর, এখন তারা আরও এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত।
বিনিয়োগকারীরা যদিও বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করেছেন—বিশেষত বাংলাদেশে ব্যবসা করলে কি ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে এবং যারা বর্তমানে ব্যবসা করছেন, তারা কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন—এই প্রশ্নগুলো বাংলাদেশ সরকারের সামনে উত্থাপন হয়েছে। তবে বিডা (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) জানিয়েছে, বিনিয়োগকারীদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ ছিল লালফিতার দৌরাত্ম্য নিয়ে। সরকার ইতিমধ্যে এ সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এছাড়া, সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী চীনা ও কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ বৈঠক আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেখানে তাদের উদ্বেগ দূর করে বাংলাদেশের বিনিয়োগ প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর করা হবে। বিশেষত, কোরিয়ান বিনিয়োগকারীরা দেশের টেক্সটাইল, ফ্যাশন, স্পিনিং এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বড় আকারে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন, সরকারের উদার বিনিয়োগ নীতি এবং সংস্কার উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের নতুন যুগের সূচনা হচ্ছে। তিনি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দেশে বিনিয়োগ করার সুযোগের কথা তুলে ধরেছেন এবং আশা করছেন, এই উদ্যোগ বাংলাদেশের অর্থনীতি ও শিল্প খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে।
বিজ্ঞাপন
এইউ