বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

ডিসিসিআই

সংকোচনমূলক অবস্থান দীর্ঘমেয়াদে বেসরকারি খাতে প্রবৃদ্ধি ব্যাহত করবে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:১৮ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে নীতি সুদ হার ১০% রাখার পাশাপাশি সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বজায় রাখায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তের প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত মুদ্রানীতির প্রতিক্রিয়ায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


সংগঠনটি জানিয়েছে, বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে, এই কঠোর অবস্থানের উদ্যোগ বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের পাশাপাশি সামগ্রিক অর্থনৈতিক সম্প্রসারণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বিনিয়োগের জন্য দেশের বেসরকারি খাত ব্যাংকগুলোর উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে থাকে; তবে উচ্চ সুদের হার পণ্য উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ১০.৮৯ শতাংশ হতে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে মুদ্রাস্ফীতি ৯.৯৪ শতাংশে নেমে আসা সত্ত্বেও, এটি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নামেনি।

সংগঠনটি আরও জানিয়েছে, জানুয়ারি-জুন ২০২৫ সালের জন্য বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৯.৮%-এ অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত বেসরকারি খাতকে কিছুটা আশাহত করেছে; যদিও ২০২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত প্রকৃত প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.৩%, যা বিগত ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। অপরদিকে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১৪.২% হলেও, তা বেড়ে ১৮.১%-এ পৌঁছেছে। এটি মোকাবেলায় সরকারের কৃচ্ছতা সাধনের দিকে আরো মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ আরো হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিবে। বেসরকারি খাতের আস্থা ও ব্যবসায়িক কার্যকলাপ পুনরুদ্ধারের জন্য এ খাতে ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা অবশ্যই দুই অঙ্কের ঘরে রাখা প্রয়োজন। নিয়ন্ত্রণমূলক আর্থিক নীতিমালার কারণে অর্থনীতিতে স্থবিরতা তৈরির ঝুঁকি মোকাবেলায় ঢাকা চেম্বার ঋণের প্রবাহ বাড়াতে খাত ভিত্তিক তহবিল এবং উদ্যোক্তা সহায়তা কর্মসূচি চালু করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

সংগঠনটি বলছে, যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার ভিত্তিক বিনিময় হার প্রয়োগ করেছিল; তথাপি আমদানি-রফতানিকারকদের বিভিন্ন দরে উচ্চমূল্যে ডলার ক্রয় করতে হচ্ছে। এ অসঙ্গতি অবশ্যই সমাধান করতে হবে, যার মাধ্যমে ব্যবসায়ী, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীসহ সকল স্টেকহোল্ডারবৃন্দ উপকৃত হবেন। ঢাকা চেম্বার তারল্য সংকট এবং ক্রমবর্ধমান মন্দ ঋণ মোকাবেলায় আর্থিক খাতের প্রশাসনিক কার্যক্রম আরো শক্তিশালী করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। যদিও ২০২৭ সাল থেকে আইএফআরএস ৯-এর অধীনে ইসিএল পদ্ধতি গ্রহণ একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, সুশাসন বাস্তবায়নে মনোনিবেশের অভাব রয়েছে বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার। দেশের আর্থিক খাতে শক্তিশালী প্রশাসনিক কাঠামোর অনুপস্থিতি ও আইনি সমাধানের দীর্ঘসূত্রিতা আমাদের ব্যাংক খাতকে আরো দুর্বল করে তুলবে, যা বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে বাধাগ্রস্ত করবে।


বিজ্ঞাপন


ডিসিসিসিআই আরও নমনীয় মুদ্রানীতি গ্রহণ, ভারসাম্যপূর্ণ আর্থিক নীতি গ্রহণ, মুদ্রাস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধির ওপর এর প্রভাব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে; যার মাধ্যমে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। ঢাকা চেম্বার মনে করে, বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ আগামী দিনে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন করতে পারবে।

টিএই/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর


News Hub