শুক্রবার, ২৮ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

নাতনিকে ধর্ষণের অভিযোগে দাদা গ্রেফতার, ভিখারির মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি, যশোর
প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৫ এএম

শেয়ার করুন:

loading/img
নাতনি ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার দাদা গ্রেফতার লুৎফর রহমান গাজী (৬০) ।

যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটিতে বাকপ্রতিবন্ধী ভিখারির শিশু মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে, মণিরামপুর উপজেলায় নাতনিকে ধর্ষণের অভিযোগে দাদাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) এ দু’টি ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হয়।


বিজ্ঞাপন


যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটিতে বাকপ্রতিবন্ধী ভিখারির শিশু মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

৬ষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীর নিজ বাড়ির পাশে গত শনিবার চুড়ামনকাটি উত্তপাড়ার পিয়ার আলী মণ্ডলের ছেলে আব্দুর রহমান দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন বলে পরিবারের অভিযোগ।

ধর্ষণের শিকার শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, চুড়ামনকাটি বাজারের একটি চাতালে ১১ বছরের শিশু কন্যাকে নিয়ে বসবাস করে একজন বাক প্রতিবন্ধী ভিখারি নারী। সারাদিন শিশুটির মা ভিক্ষার কারণে বাইরে থাকায় তাদের বাড়িতে কয়েক দিন ধরে চুড়ামনকাটি উত্তরপাড়ার মৃত পিয়ার আলী মণ্ডলের ছেলে আব্দুর রহমান যাতায়াত শুরু করে।

ধর্ষণের শিকার শিশুটি জানায়, একটি মোবাইল ফোন কিনে দেওয়ার কথা বলে রহমান তাকে কয়েকদিন ধরে নিয়মিত ধর্ষণ করে আসছে। সর্বশেষ গত ১৫ মার্চ সন্ধ্যা সাতটার দিকে শিশুটির বাড়িতে রহমান যায় এবং বাড়ির সামনে একটি বন্ধ দোকানের সামনে ডেকে নিয়ে আসে। তারপর আবারও মোবাইল ফোনের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। বিষয়টি মেয়েটি পরদিন তার মাকে জানায়।


বিজ্ঞাপন


এ ব্যাপারে শিশুটির মা জানান, আমার মেয়ে আমাকে পুরো ঘটনাটি বলার পর আমি স্থানীয় কয়েকজনকে জানাই। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে রহমানের স্ত্রী আমার বাড়িতে এসে আমরা তার স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ মামলা করলে আমাদের এলাকা ছাড়তে হবে বলে হুমকি দেয়। বর্তমানে তাদের হুমকির কারণে আমি আমার পরিবার নিয়ে চরম আতঙ্কে আছি।

তিনি আরও জানান, আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার মেয়ের সঙ্গে যা হয়েছে তার দৃষ্টন্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

এ ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি তদন্ত কাজী বাবুল জানান, ঘটনার খবর পেয়েই আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে এ ব্যাপারে এখনো কোনো অভিযোগ করেনি ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে।

সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই আব্দুর রউফ জানান, ঘটনার থেকেই অভিযুক্তকে আটকে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে। এছাড়া মেয়েটির পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের পুলিশ সজাগ রয়েছে।

আরও পড়ুন

চৌগাছায় চতুর্থ শ্রেণির শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা, অভিযুক্ত পলাতক

এদিকে, যশোরের মণিরামপুরে ১২ বছর বয়সী নাতনি (ছেলের মেয়ে) ধর্ষণের অভিযোগে দাদাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার লুৎফর রহমান গাজী (৬০) মণিরামপুর সদর ইউনিয়নের হাজরাকাটি গ্রামের জামির আলীর ছেলে। সোমবার গভীর রাতে তাকে আটক করলেও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা ও আটকের বিষয়টি মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছে থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শিশুটির বাবা শারীরিক প্রতিবন্ধী। তিন বছর আগে মা তাদের দুই ভাই বোনকে ফেলে চলে যান। মাসখানেক আগে দাদা লুৎফর গাজী একবার শিশুটিকে ধর্ষণ করেছে। এছাড়া একাধিকবার সে শিশুটির যৌন হয়রানি করেছে। বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানার পর পারিবারিকভাবে লুৎফর গাজীকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছে। গত রোববার শিশুটির চাচাতো নানি তাদের দেখতে আসেন। মেয়েটি দাদার বাড়িতে থাকতে আপত্তি তুলে নানির সঙ্গে চলে যেতে চায়। নানি কারণ জানতে চাইলে সে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা ফাঁস করে। এলাকায় তা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের কানে পৌঁছায়। পরে সোমবার রাত ১১টার দিকে থানা পুলিশ গিয়ে লুৎফর গাজীকে আটক করে শিশুটিকে হেফাজতে নেয়।

শিশুর চাচাতো নানি ও মামলার বাদী বলেন, আমি আমার জামাইয়ের বাড়িতে বেড়ালে আসলে আমার নাতি আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে। এসে সে বলে তার দাদা তার শরীরে খারাপভাবে স্পর্শ করে এবং আগেও এমন করেছে। এটা শোনার পর আমি আমার জামাইকে বিষয়টা জানালে সে এলাকাবাসীকে নিয়ে লুৎফর রহমানকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

এ ব্যাপারে ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, রাতেই শিশুটির চাচাতো নানি বাদী হয়ে দাদা লুৎফর গাজী বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। লুৎফর রহমানকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন