তারুণ্যের উৎসবকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুর পৌর এলাকায় দখলে দূষণে বিপর্যস্ত পালং খালটি পুনরুদ্ধার করেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদ। আর এতে সহযোগিতা করছে স্থানীয় ছাত্রজনতা। তাদের এমন উদ্যোগে খুশি স্থানীয়রা। আর খালটি সচল হলে মশা-মাছির উপদ্রব থেকে মুক্তি মেলার পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রে সুফল পাবে বলছেন সচেতনমহল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শরীয়তপুর শহর দিয়ে বয়ে চলা পালং খালটি দৈর্ঘ্য অন্তত ২ কিলোমিটার। দীর্ঘ্য ১ যুগ ধরে দখল আর দূষণে অস্তিত্ব হারিয়েছে এক সময়ের প্রবাহমান খালটি। খালটির বিভিন্ন অংশে দোকানপাট ও বাসাবাড়ির ময়লা আবর্জনা ফেলায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ। এতে মশা মাছির উৎপাত বেড়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে পৌরবাসী।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকাল থেকে ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ স্লোগানে তারুণ্যের উৎসবকে সামনে রেখে খালটির প্রবাহ ফেরানোর কাজ শুরু করে জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদ।
আর এই কার্যক্রম চলমান থাকবে টানা ১০ দিন। তাদের উদ্যোগের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে কাজে নেমে পড়েন বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতারা। সংকল্প একটাই, পালং খালটি পুনরুদ্ধার করে ফেরানো হবে পানি প্রবাহ।
বিজ্ঞাপন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার আহবায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, তারুণ্যের উৎসবকে আমরা একটু ভিন্নভাবে উদযাপন করার চেষ্টা করেছি। আমাদের জেলা শহরের বিভিন্ন খালগুলো দখল করে দূষণ করেছে স্থানীয় একটি মহল। এজন্য কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। আমরা উদ্যোগ নিয়েছি এই খালগুলোকে দখল এবং দূষণমুক্ত করে আগের ন্যায় সচল করব।
সানজানা খান নামের এক শিক্ষার্থী ও রোভার স্কাউট সদস্য বলেন, পালং খালটি আমাদের জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ একটি খাল। এই খালের মাধ্যমে এই অঞ্চলের কৃষি কাজ করা হতো। বর্তমান সময়ে আমাদের এই খালটি ময়লার স্তুপে পরিণত হয়েছে। এ থেকে মশা মাছির উপদ্রব বেড়ে স্থানীয় মানুষের নানা পানিবাহিত রোগ হচ্ছে। তারুণ্যের উৎসবকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আমরাও এই খালটি পুনরুদ্ধারের অংশ নিয়েছি। আমরা এই খালটি আগের ন্যায় সচল করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
এ ব্যাপারে নদী পরিব্রাজক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান শিপন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পালং খালটি পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করে আসছি আমরা। আজ জেলা প্রশাসন আর তারুণ্যকে নিয়ে খালটি উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে। তাদের এই মহৎ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
জানতে চাইলে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন বলেন, খালের সঙ্গে কৃষি ও মানুষের জীবন জীবিকার এক নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। বিষয়টি মাথায় রেখে স্থানীয় যুব সমাজকে নিয়ে এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। আগামী দশ দিন এই খাল উদ্ধার কার্যক্রম চালু থাকবে।
প্রতিনিধি/এজে