নবগঙ্গী নদী তীরবর্তী সড়কটির বিভিন্ন অংশ ধসে যাওয়ায় ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে হালকা যানবাহন ও পথচারীরা। অতি দ্রুত প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে সড়কের বিভিন্ন অংশ নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
অতি বৃষ্টির ফলে নড়াইল জেলার লোহাগড়া-নহাটা-কালিশংকরপুর সড়কের বিভিন্ন অংশে ধসের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও সড়কের বিভিন্ন অংশ ধসে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (৯ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের অধিকাংশ এলাকা নবগঙ্গী নদীর পাড়ে হওয়ায় এবছর অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সড়কের নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর, ব্রাহ্মণডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাড়ীভাঙ্গা সেতুর পাশের অংশ, নলদী ইউনিয়নের জালালসী মাদরাসাসহ আশপাশের এলাকা, নলদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব এলাকায় রাস্তার প্রায় অর্ধেক বা কোনো কোনো স্থানে কিছুটা কম অংশজুড়ে ধসে গিয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন অংশ ধসে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
এদিকে চলতি বর্ষা মৌসুমের গত ২০দিনের ব্যবধানে ৩/৪টি নিম্নচাপ ও লঘুচাপের কারণে নড়াইলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়। লঘুচাপের কারণে গত ৩ ও ৪ অক্টোবর, নিম্নচাপের গত ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর ও গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে তিনদিন ভারী বর্ষণ হয়। যার ফলে সড়কের বিভিন্ন জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, লোহাগড়া-নহাটা-কালিশংকরপুর সড়কটি লোহাগড়া উপজেলা শহর হতে জয়পুর, কাশিপুর, নোয়াগ্রাম, নলদী ইউনিয়ন অতিক্রমা করে মাগুরার নহাটা হয়ে মাগুরা জেলা শহরের সঙ্গে মিশেছে। লোহাগড়া উপজেলার ওপর দিয়ে মাগুরা জেলার শালিখাসহ বিভিন্ন এলাকার যানবাহন রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় চলাচলের ক্ষেত্রে সড়কটির বেশ গুরুত্ব রয়েছে। পদ্মা সেতু ও মধুমতি সেতু নির্মাণের পর সড়কটির গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। নবগঙ্গা নদীর বেড়িবাঁধ হিসেবে এই সড়কটি নির্মাণ করা হলেও গুরুত্ব বিবেচনায় সড়ক ও জনপথ অধিদফতর সড়কটি পাঁকা করে। যার কারণে যানবাহন চলাচলে আরও সুবিধা হয়। অধিক যানবাহন চলাচলের কারণে ৫/৬ বছর আগে সড়কটি প্রশস্ত করা হয়।
নলদী বাজারের পাট ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, সড়কটির নলদী বিএসএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনের অংশ ও ব্রাহ্মণডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের অংশ ভারী বর্ষণের কারণে নদীগর্ভে ধসে পড়েছে। এছাড়াও সড়কের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরে কমবেশি ভেঙে পড়েছে। সড়কের ধারণ ক্ষমতা অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। যার কারণে ভারী যানবাহন চলাচল এখন অনেকটাই ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
ওই বাজারের আরও কয়েকজন ঢাকা মেইলকে জানান, এই অঞ্চলের নলদী, মিঠাপুর, ব্রাহ্মণডাঙ্গাসহ আশপাশের কয়েকটি হাটে পর্যাপ্ত পরিমাণ পাটসহ কৃষি পণ্য বেচাকেনা হয়। এসব হাটের পণ্য ট্রাকযোগে এই সড়ক ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় দ্রুত চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানান তারা।
নড়াইল সড়ক ও জনপথ অধিদফতর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, লোহাগড়া-নহাটা-কালিশংকরপুর সড়কের নড়াইল জেলার মধ্যে রয়েছে ২৫ কিলোমিটার। বাকি অংশ মাগুরা জেলার মধ্যে। এই সড়কটি বৃষ্টিতে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে আমরা সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। প্রকল্প তৈরি করে স্থায়ীভাবে সড়কটি প্রতিরোধের জন্য কাজ চলছে।
এদিকে সড়কটি ধসে যাওয়ার পর নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জোবায়ের হোসেন চৌধুরী ঢাকা মেইলকে বলেন, লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতিমা আজরিন তন্বী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
প্রতিনিধি/এসএস