মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে পালগাওঁ গ্রামে বৃদ্ধা আবেদা খাতুনকে (৭৫) হত্যার ঘটনায় আল আমিন মল্লিক (৩৩) নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক বেগম খালেদা ইয়াসমিন উর্মি এ রায় ঘোষণা করেন।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিচারিক আদালতের সহকারী মো. হাছান ছারওয়ার্দী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১৫ আগস্ট লৌহজং উপজেলার পালগাওঁ গ্রামের মৃত রুস্তম হাওলাদারের ছেলে মামলার বাদী ফরহাদ হাওলাদার ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে নিজ বাড়িতে বেড়াতে আসে।
বাড়িতে এসে ফরহাদ তার মাকে বাড়িতে না পেয়ে তার ছেলে মিজানুর ও স্ত্রীকে খুঁজতে পাঠায়। সে সময় ফরহাদের স্ত্রী আসামি আল আমিন মল্লিককে তাদের বাড়ির পেছনে বসে থাকতে দেখে। বাদীর স্ত্রীকে দেখে আল আমিন দ্রুত পালিয়ে যায়।
পরে ফরহাদ তার মাকে অনেক খোঁজাখুঁজির পরে তাদের বসত ঘরের পিছনে নিচু ধানক্ষেতে পানির মধ্যে তার মাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। তার মা স্বাভাবিকভাবে মারা গেছে ভেবে দাফন শেষে সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে ফিরলে তাদের বসত বাড়িতে আসামি আল আমিনের ২টি স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখতে পায় ফরহাদ।
বিজ্ঞাপন
এরপর ২০১২ সালের ১৬ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে ওই গ্রামের লোকজনসহ ফরহাদ আসামি আল আমিনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আলামিন নিহত আবেদা খাতুনের গলায় থাকা ৯ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন টান মেরে চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় আবেদা খাতুন বাঁধা দেওয়ায় তাকে দেওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা মেরে পানিতে ফেলে দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করে।
আলামিন একই গ্রামের মৃত রাজ্জাক মল্লিকের ছেলে। এ ঘটনায় ফরহাদ বাদী হয়ে গত ২০১২ সালের ১৬ আগস্ট লৌহজং থানায় মামলা দায়ের করে। পরে ওই মামলায় আদালতে ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় দেন।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্র পক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. সিরাজুল ইসলাম পল্টু বলেন, ১৭ জন সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডসহ বাদীর মায়ের গলার চেইন চুরির করায় অপর একটি ৩৭৯ ধারায় ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করে। বিচারকের এ রায়ে বাদী ও আমি রাষ্ট্র পক্ষ সন্তুষ্ট।
প্রতিনিধি/এসএস