এই প্রথম ভারতে প্রদর্শন করা হলো রয়েল এনফিল্ডের প্রথম বৈদ্যুতিক বাইক। রয়েল এনফিল্ড ফ্লাইং ফ্লিয়া সি৬ নামের এই ই-বাইকটি প্রথমবার ২০২৪ সালে মিলানে উন্মোচিত হয়েছিল। এর ডিজাইন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ফ্লাইং ফ্লি বাইক থেকে অনুপ্রাণিত। কাঠামোতে ফোর্জড ফ্রেম ব্যবহার করা হয়েছে, যা একে হালকা ও মজবুত করে তুলেছে। এছাড়া, ম্যাগনেসিয়াম ব্যাটারি কেসিংয়ের নকশায় ব্যবহৃত হয়েছে অর্গানিক ডিজাইন ল্যাঙ্গুয়েজ। যা ওজন কমানোর পাশাপাশি কুলিং ব্যবস্থাকে উন্নত করেছে।
রয়ের এনফিল্ডের মতে, ব্যাটারির ফিন ডিজাইন, প্রযুক্তি ও ঐতিহ্যের সংমিশ্রণে তৈরি। সামনের ফিনগুলো অসম সংখ্যা অনুযায়ী সাজানো হয়েছে, যা আধুনিক প্রযুক্তির প্রতীক। অন্যদিকে পেছনের ফিনগুলো জোড় সংখ্যা অনুযায়ী রাখা হয়েছে। যা ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে তুলে ধরে। উভয় ফিন ক্লাস্টার একসঙ্গে মিলিত হয়ে একটি উইং-আকৃতির মোটিফ তৈরি করেছে। যা একে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। মূল মডেলের মতোই গোলাকার হেডল্যাম্প ও সিঙ্গেল সিট ডিজাইন বর্তমান। তবে চাইলে পিলিয়ন সিট আলাদাভাবে অ্যাক্সেসরিজ হিসেবে যুক্ত করা যাবে।
বিজ্ঞাপন
উন্নত হার্ডওয়্যার ও শক্তিশালী নির্মাণ
ফ্লাইং ফ্লিয়া সি৬ মডেলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল গার্ডার ফর্ক সাসপেনশন। যা সাধারণত প্রচলিত ই-বাইকে দেখা যায় না। এই সাসপেনশন কেবলমাত্র বাইকের নান্দনিকতাই বাড়ায় না, বরং এনফিল্ডের দাবি অনুযায়ী, এটি শহরের রাস্তায় স্টেবিলিটি ও হ্যান্ডলিং উন্নত করবে।
শক্তিশালী ব্যাটারি ও উন্নত ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল
রয়েল এনফিল্ড এখনও ফ্লাইং ফ্লিয়া সি৬-এর ব্যাটারি ও মোটর সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে তারা নিশ্চিত করেছে যে এই বাইকটিতে সেন্ট্রাল ভেহিকল কন্ট্রোল ইউনিট (ভিসিইউ) থাকবে। যা সম্পূর্ণভাবে এনফিল্ডের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি। এই ভিসিইউ সিস্টেম বাইকের থ্রটল, ব্রেকিং, এবং রিজেনারেটিভ ব্রেকিং নিয়ন্ত্রণে ‘নুয়ান্সড’ অ্যাডজাস্টমেন্ট আনতে পারবে। ফলে, বাইকটির কর্মক্ষমতা ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে অপটিমাইজ করা যাবে। আরও চমকপ্রদ বিষয়, ভিসিইউ-এর অধিকাংশ ফিচার স্মার্টফোনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
বিজ্ঞাপন
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও সংযুক্ত ফিচার
ফ্লাইং ফ্লিয়া সি৬ মডেলে থাকবে কর্নারিং এবিএস, ক্রুজ কন্ট্রোল, এবং ট্র্যাকশন কন্ট্রোলের মতো আধুনিক ফিচার। ব্যবহারকারীরা এটি সাধারণ তিন-পিন প্লাগের মাধ্যমে চার্জ করতে পারবেন। বাইকের ডিজাইন দেখে বোঝা যাচ্ছে যে এতে এলইডি লাইটিং ও ডিজিটাল ডিসপ্লে থাকবে, যা নতুন প্রজন্মের মোটরসাইকেলের প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য।
আরও পড়ুন: ডুকাতি আনল নতুন সুপারবাইক, পাবেন ১১০০ সিসির ইঞ্জিন
এই বৈদ্যুতিক মোটরসাইকেলটি অত্যাধুনিক কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন চিপসেট দ্বারা চালিত হবে। এই চিপসেটের সাহায্যে ফ্লাইং ফ্লিয়া সি৬ স্ন্যাপড্রাগনকার টু ক্লাউড প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সংযুক্ত পরিষেবা প্রদানকারী প্রথম দুটি-চাকার যানবাহনগুলোর একটি হতে চলেছে।
কবে থেকে বাজারে পাওয়া যাবে?
রয়েল এনফিলন্ড এখনও ফ্লাইং ফ্লিয়া সি৬-এর আনুষ্ঠানিক লঞ্চের তারিখ ঘোষণা করেনি। তবে ইন্ডাস্ট্রির বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ই-বাইকটি ২০২৬ সালে বাজারে আসতে পারে।
এজেড