পবিত্র কোরআন মুমিনদের জন্য আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহ। এটি এমন এক অনুগ্রহ, যা অর্থ-ব্যাখ্যাসহ পড়লে সওয়াব, অর্থ না বুঝে পড়লেও সওয়াব, শুনলেও সওয়াব। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সওয়াব লাভের সুযোগ আছে। যারা রাতে তেলাওয়াতে অভ্যস্ত তাদের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে।
হাদিসে আছে, রাতে তেলাওয়াতকারীর ফজিলত আয়াতসংখ্যার পরিমাণ অনুযায়ী বৃদ্ধি করা হয়। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে ১০টি আয়াত তেলাওয়াত করে সে গাফেল বলে গণ্য হবে না, আর যে ব্যক্তি ১০০ আয়াত তেলাওয়াত করে সে আনুগত্যশীল বলে গণ্য হবে, আর যে ব্যক্তি এক হাজার আয়াত তেলাওয়াত করে তার জন্য সওয়াবের ভাণ্ডার লেখা হবে।’ (আবু দাউদ: ১৪০০)
আরও পড়ুন: ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত? কোরআনের এই উপদেশগুলো পড়ুন
রাতে ১০০ আয়াত তেলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে আরেক হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে ১০০ আয়াত তেলাওয়াত করবে, তাকে (আল্লাহর) আনুগত্যশীল বান্দাদের মাঝে লিপিবদ্ধ করা হবে।’ (সিলসিলা সহিহাহ, আলবানি: ৬৪৩; মুসনাদে আহমদ: ১৬৯৫৮; হাদিসটি সহিহ)
আবুল আহওয়াস (রহ.) বর্ণিত আরেক হাদিসে প্রসিদ্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে ৫০টি আয়াত পাঠ করবে, তাকে উদাসীনদের মাঝে লিপিবদ্ধ করা হবে না। আর, যে ব্যক্তি ১০০ আয়াত পাঠ করবে, তাকে আল্লাহর অনুগতদের মাঝে লিপিবদ্ধ করা হবে।’ (দারিমি, আস-সুনান: ৩৪৮৫; তাবারানি, মুজামুল কাবির: ১০১৩৫)
বিজ্ঞাপন
হাদিসে নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম বলা হয়নি। তাই কোরআন থেকে যেকোনো ১০০ আয়াত তেলাওয়াত করাই যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ। এরপরও কিছু ফজিলতপূর্ণ আয়াত ও সুরা নিয়ে ১০০ আয়াতের একটি হিসাব এখানে তুলে ধরা হলো।
আয়াতুল কুরসি (বাকারার ২৫৫ নং আয়াত) = আয়াতসংখ্যা ১
সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত = আয়াতসংখ্যা ২
সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত = আয়াতসংখ্যা ৩
সুরা আস সফ (৬১ নং সুরা) = আয়াতসংখ্যা ১৪
সুরা মুলক (৬৭ নং সুরা) = আয়াতসংখ্যা ৩০
সুরা কাফিরুন = আয়াতসংখ্যা ৬
সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস (৩ বার করে) = আয়াতসংখ্যা ৪৫
সর্বমোট= ১০১
আরও পড়ুন: যেসব সুরা রাতে তেলাওয়াতের ফজিলত বেশি
উল্লেখিত হিসাবটি পবিত্র কোরআনের বিশেষ ফজিলতপূর্ণ আয়াত ও সুরা দিয়ে করা হয়েছে। যাতে একইসঙ্গে দুইটা ফজিলত লাভ করা যায়। প্রথমত বিশেষ ফজিলত লাভ, দ্বিতীয়ত ১০০ আয়াত তেলাওয়াত পূর্ণ করার ফজিলত লাভ। তবে ১০০ আয়াত তেলাওয়াতের ফজিলত লাভে এই হিসাব অনুযায়ী পড়া জরুরি নয়, বরং কোরআনের যেখান থেকে ইচ্ছা ১০০ আয়াত তেলাওয়াত করাই যথেষ্ট হবে। আর যারা ১০০ আয়াতেরও বেশি, এমনকি এক হাজার আয়াত তেলাওয়াত করতে পারবেন, তারা অনেক বেশি প্রতিদান কিংবা সওয়াবের ভাণ্ডার লাভ করবেন বলে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। উপরের প্রথম হাদিসটিতে তা বলা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে প্রতিরাতে কমপক্ষে ১০০ আয়াত তেলাওয়াত করার তাওফিক দান করুন। অন্তত ৫০ আয়াত যেন অবশ্যই পড়তে পারি সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।
কোরআন তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও অশুদ্ধ তেলাওয়াত করলে কি হবে, এক নিঃশ্বাসে কোরআন পড়া, কোরআন তেলাওয়াত করা কি ফরজ, বিশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াতের গুরুত্ব, কোরআন তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও অশুদ্ধ তেলাওয়াত করলে কি হবে, কুরআন পড়া নিয়ে হাদিস, কুরআন তিলাওয়াতের আদব কয়টি, কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে আয়াত, সকালে কোরআন তেলাওয়াত, সালাতে কুরআন তেলাওয়াত করা কি, রাতে ১০০ আয়াত, কোরআন তেলাওয়াত, আবু জাহেল নবী কোরান তেলাওয়াত শুনতে, কোন সূরার কত আয়াত, কোরআনের শ্রেষ্ঠ আয়াত, কুরআনের রুকু সংখ্যা কত, কোরআন শরীফের আয়াত, কোরআনের গুরুত্বপূর্ণ আয়াত, কোরআন শরীফ পড়া, কোরআন তেলাওয়াত

