রমজানের সময় পবিত্র মক্কা-মদিনার পরিবেশ হয়ে ওঠে অনন্য সুন্দর। শুধু হারামাইনের অভ্যন্তরে নয়, পথে-ঘাটেও রোজাদারদের কদর বেড়ে যায়। ইফতারের দৃশ্য অভূতপূর্ব। মসজিদে হারাম ও নববির চত্বরে কাতারবন্দি হয়ে বসে যান লাখ লাখ রোজাদার। কাবা শরিফে প্রতিদিন ১০ লাখের বেশি রোজাদার ইফতার করেন।
হারামাইন শরিফাইনের তথ্যমতে, গতকাল বুধবার ১.১৪৯ মিলিয়ন বা ১৫ লাখ মানুষের উপস্থিতি ছিল মক্কার মসজিদুল হারামে।
বিজ্ঞাপন
রমজানে প্রতিদিন ইফতারের জন্য বসা কাতারের সামনে লম্বা পলিথিনের দস্তরখানা বিছিয়ে দেওয়া হয়। তাতে বিভিন্ন আইটেমের ইফতার পরিবেশন করা হয়। রমজানের শুরু থেকে পবিত্র দুই মসজিদের খাদেম সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের পক্ষ থেকে প্যাকেট করা ইফতারসামগ্রী বিতরণ করা হয়। তাতে থাকে খেজুর, জমজমের পানি, জুস, দই, স্ন্যাকস আইটেম, রুটি প্রভৃতি। সৌদি আরবের স্থানীয় নাগরিকগণও যে যার মতো ইফতার আনেন। কেউ রুটি, কেউ টক দই, কেউবা খেজুর বণ্টন করেন। পানির বোতল, প্যাকেটজাত ইফতারও দিয়ে থাকেন অনেকেই। পড়ুন: মসজিদুল হারামে ইফতারের রেওয়াজ
বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার এনে বিতরণ করেন অনেক ধর্মপ্রাণ মানুষ। হাসিমুখে খাবার গ্রহণ করতে অনুরোধ করতে থাকেন। অনেকে বাড়ি থেকে কেটলি ভর্তি চা, বিভিন্ন জুস কিংবা পানীয় গাড়িতে এনে নিজ হাতে বিতরণ করেন।
রোজাদারদের ইফতার করানো সওয়াবের কাজ। তাই আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্তে মানুষ ইফতার সামগ্রী নিয়ে ছুটেন পবিত্র মক্কার মসজিদুল হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে। পড়ুন: রোজাদারকে ইফতার করানোর ফজিলত
বিজ্ঞাপন
মক্কা-মদিনা ছাড়াও সৌদি আরবের সর্বত্রই ইফতারের আয়োজন দেখা যায়। দেখতে পাওয়া যায় সারি সারি তাঁবু। এগুলো রোজাদারদের ইফতার করানোর জন্য তৈরি করা হয়। মসজিদগুলোতেও থাকে ইফতারের ব্যবস্থা। কারখানার শ্রমিকরাও পান উন্নতমানের ইফতার সামগ্রী।
মক্কা ও মদিনায় রমজান ঘিরে চারদিকে পড়ে যায় সাজ সাজ রব। একে অন্যকে জানান রমজানের অভিবাদন। রমজান উপলক্ষে সরকারিভাবে কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেওয়া হয়। রমজান ঘিরে দাওয়াতি কাজ শুরু করেন অনেকেই। বিভিন্ন রকমের হ্যান্ডবিল, লিফলেট, ছোট পুস্তিকা, সকাল-সন্ধ্যার দোয়ার ছোট কার্ড ইত্যাদি ছাপিয়ে মসজিদে বা ব্যক্তিপর্যায়ে বিতরণ করা হয়। এ ধারা অব্যাহত থাকে রমজান মাসজুড়ে।
তথ্যসূত্র: হারামাইন শরিফাইন, আরব নিউজ